Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শর্তের বেড়াজালে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া

রোহিঙ্গা নিপীড়নের প্রশ্নে সু চি’র অবস্থান জানতে চেয়েছেন ট্রুডো

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির সঙ্গে ৪৫ মিনিটের বৈঠক করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। জাতিগত নিধনের শিকার পৃথিবীর সব থেকে ওই নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর খোঁজ-খবর নিতে ভিয়েতনামে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অ্যাপেক সম্মেলনে অংশ নিতে সেখানে অবস্থান করছেন দুই নেতা। বিভিন্ন কানাডীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বৈঠকে রোহিঙ্গা নিপীড়নের প্রশ্নে সু চির অবস্থান জানতে চেয়েছেন ট্রুডো। নিপীড়ন বন্ধ না হওয়ার কারণও জানতে চেয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে সংকট উত্তরণের পথ নিয়েও কথা বলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। কানাডার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাখাইনে সহিংসতা ও নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে সৃষ্ট মানবিক সংকটের সম্ভাব্য সমাধানের উপায় নিয়ে কথা বলতে ৪৫ মিনিটের এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। মিয়ানমারে ট্রুডোর বিশেষ দূত বব রে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি নিজেও এর আগে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের দৃশ্য দেখে গেছেন এবং ট্রুডোকে সেসব বিষয়ে অবহিত করেছেন। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সভায় প্রস্তাব উঠানো হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন: শুধু কানাডাই এমনটা অনুভব করছে তা নয়, এসব প্রশ্ন উত্থাপনের ক্ষেত্রে আমরা সংখ্যালঘু নই। নীতিগত ভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে আপত্তি নেই মিয়ানমারের। তবে কাদের ফেরানো হবে, সে বিষয়ে তারা কড়া শর্ত আরোপ করতে যাচ্ছে। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি ইউ কিইয়াও জেয়া গত শুক্রবার জানান, দেশের স্টেট কাউন্সিলার আউং সান সু চি গত ১২ অক্টোবর এ নিয়ে দেশের নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। পুনর্বাসন এবং উন্নয়নের কাজও শুরু হচ্ছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনার কাজ হবে চারটি শর্ত সাপেক্ষে। যাঁরা সেই শর্ত পূরণ করতে পারবেন, শুধু তাঁদেরই ফিরিয়ে নেয়া হবে। প্রথমত, যে সব রোহিঙ্গা এ দেশে দীর্ঘদিন বসবাসের প্রমাণপত্র দাখিল করতে পারবেন, স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরতে চাইবেন, পরিবারের কেউ এ দিকে রয়েছেন তেমন প্রমাণ দেখাতে পারবেন এবং বাংলাদেশে কোনও শিশু জন্মালে তার বাবা-মা উভয়েই মিয়ানমারের স্থায়ী বাসিন্দা প্রমাণিত হলে তবেই তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। প্রশ্ন উঠেছে, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার পর প্রাণ বাঁচাতে যাঁরা দেশ ছেড়েছেন, তাঁদের কাছে কী করে এই সব তথ্য-প্রমাণ থাকবে? মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি বলেন, স্কুলে পড়া, হাসপাতালে চিকিৎসা, চাকরির নথি- এ সবের মতো কিছু প্রমাণ তো দেখাতেই হবে। না হলে ফেরত নেওয়াটা মুশকিল এবং এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষও! গত শুক্রবার ইয়াঙ্গুনে ‘ভারত-মিয়ানমার সম্পর্কের আগামী দিন’ বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ দিন অংশ নিয়েছিলেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই শীর্ষ কূটনীতিক। কলকাতার ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ, ইয়াঙ্গুনের ভারতীয় দূতাবাস এবং মিয়ানমার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের থিঙ্ক ট্যাঙ্কের বিশেষজ্ঞরাও যোগ দিয়েছেন এই সম্মেলনে। কিন্তু শরণার্থী সমস্যার মতো মানবিক বিষয়ে মিয়ানমার সরকার কেন এত কড়া শর্ত চাপাচ্ছে? ওই কূটনীতিকের ব্যাখ্যা, রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা সমস্যা কেবলমাত্র মানবিক বিষয় নয়। নিরাপত্তাও একটা বড় কারণ। এবিপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ