মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নিউইয়র্ক টাইমসে ‘অং সান সু চি এবং তার জেনারেলরা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে মনে হতে পারে, সু চিই তাদের নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। তিনি তাদের নিয়ন্ত্রণ করেন না, তবে তাদের সব কাজের দোষ সু চির ওপরই গিয়ে বর্তায়। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে একের পর এক সম্মাননা হারাচ্ছেন সু চি। যার সর্বশেষ সংযোজন যুক্তরাজ্যের গøাসগো শহরের ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ড কেড়ে নেয়া। রোহিঙ্গাদের সঙ্কট ও মিয়ানমারের ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনে সমালোচনার মুখে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যের গøাসগো শহর সু চিকে এই অ্যাওয়ার্ড দেয়। তখন তিনি জান্তা সরকারের অধীনে গৃহবন্দি ছিলেন। মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল এবং সামরিক বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতার নীরব লড়াই এখন নেইপিডোয় ক্ষমতার করিডোরগুলোতে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। গত আগস্টে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক পরিবর্তন বিষয়ক একটি ফোরামে সামরিক অংশগ্রহণকারীরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বেসামরিক সরকারের অধীনে কাজ করতে নিজেদের নতুন করে গুছিয়ে নিয়েছে সেনাবাহিনী। হয়তো কথাটি সত্যি। আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই জীবনের বাস্তবতা। আর এটাই পাশ্চাত্যের বেশির ভাগ পর্যবেক্ষকের দৃষ্টি এড়িয়ে যাচ্ছে। গত ২৪-২৫ আগস্ট মিয়ানমারের ৩০টি থানা এবং একটি সামরিক ঘাঁটিতে আরসা বিদ্রোহীদের হামলার পর সৃষ্ট রাখাইন সঙ্কট বড় ধরনের আঞ্চলিক সমস্যায় পরিণত হওয়ার দুই মাসেও দ্য লেডি (তাকে এ নামেই ডাকা হয়) নীরবে লড়াই করছেন ওইসব জেনারেলদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, যাদের নির্দেশে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে উন্মাদগ্রস্ত হয়ে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিয়েছে, বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে, এমনকি শিশুদের আগুনে নিক্ষেপ করেছে। ক্ষমতাধর তাতমাদো’র (বর্মি সেনাবাহিনী) ইচ্ছার বিরুদ্ধে তিনি জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেছিলেন। এর ছয়জন বিদেশি, তিনজন বর্মি। ১৯৬২ সাল থেকে মিয়ানমার শাসনকারী উর্দিধারীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে সু চি আনান কমিশনের রিপোর্ট গ্রহণ করেন, ২৪ আগস্ট সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠনের প্রতিশ্রæতিও দেন। কিন্তু সু চি এবং প্রেসিডেন্ট হতিন কিয়াউয়ের সঙ্গে কফি আনান বৈঠক করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরসা’র যোদ্ধারা উত্তর রাখাইনে ৩০টি থানা এবং সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালালে খেলাটি সু চির হাত থেকে ফসকে যায়। মিয়ানমার সরকারের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, স¤প্রতি তাদের তিনজন (মন্ত্রিসভার প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র এবং সীমান্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পরিচালনা করেন) গর্জে উঠে দ্য লেডিকে জাতীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দেয়ার সুযোগ দিতে বলেন। কিন্তু তাদের দাবি সঙ্গত কারণেই প্রত্যাখ্যাত হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্য লেডি তার জেনারেলদের বলতে পারতেন, হামলাটি হয়েছে তাদের ব্যর্থতার কারণেই। রাখাইনে তাদের গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তা না হলে আরসা’র মতো অতি সামান্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জিহাদিরা কিভাবে একযোগে ৩০টি থানা এবং একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ১২-১৩ জন নিরাপত্তা সদস্যকে হত্যা করতে পারে? এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করতে কয়েক সপ্তাহ নয়, কয়েক মাস লাগে। তা ছাড়া এতে অনেক যোদ্ধার দরকার পড়ে, বিশেষ করে গ্রামবাসীর সহযোগিতাও লাগে। শীর্ষ সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে, রাজধানী নেইপিডোয় স¤প্রতি অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক সভায় দেখা গেছে, ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বা এনএলডির মন্ত্রী এবং তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেনারেলরা বৈশ্বিক সমালোচনার সম্ভাব্য পরিণামের বিষয়টি উপলব্ধি করার চেষ্টা করছেন। কয়েকজন মন্ত্রী নতুন অবরোধের শঙ্কার কথা বলেন, অন্যরা উন্নয়ন সাহায্য কমার আশঙ্কার বিষয়টি উত্থাপন করেন। রাখাইন সঙ্কটের ফলে আরও শক্তিশালী বিদ্রোহী গ্রæপগুলোর সঙ্গে আলোচনায় কী প্রভাব পড়বে, তা উত্থাপন করেন কয়েকজন। ফলে সু চি তার জেনারেলদের বিদ্রোহ দমন অভিযানে সংযম প্রদর্শনের কথাও বলতে পারেন এবং এখনো রোহিঙ্গা স্রোত অব্যাহত থাকলেও তাদের ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করার নির্দেশ দিতে পারেন। এটা করা হলে তিনি জাতিসংঘ ও পাশ্চাত্যসহ বিশ্ব স¤প্রদায়ের সমালোচনা থেকে কিছুটা রেহাই পেতে পারেন। এক সময় তিনি ছিলেন তাদের প্রিয়পাত্র, গণতন্ত্রপন্থী আইকন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষস্থানীয় এক এনএলডি নেতা বলেন, আঞ্চলিক জিহাদি হুমকির ব্যাপারে সচেতন হলেও সু চি পরিস্থিতি তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই আলোচনা ও শান্তিপূর্ণভাবে সঙ্কটের সমাধান পেতে গভীরভাবে আগ্রহী। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীকে অবরোধের বিপদ এবং রাখাইন সঙ্কটে অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাবের বিষয়টি বলা হয়েছে। এই আশঙ্কা তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে, এতে বেকারত্ব বাড়ছে, দেশজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।