পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
গত শনিবার থেকে রোহিঙ্গাদের আবাদকৃত জমির ধান কাটা শুরু করেছে মিয়ানমার সরকার। জীবন বাঁচাতে ঘরবাড়ি জমিজমা ফেলে সেসব রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে শরণার্থী শিবিরে। তাদের জমি থেকে ধান কেটে নেয়া শুরু করেছে মিয়ানমার সরকারের লোকজন। গত শনিবার ধান কেটে নেয়ার বিষয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ আরো বেড়ে গেল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, মংডুতে রোহিঙ্গাদের ফেলা আসা ৭১ হাজার একর জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে শনিবার। মিয়ানমার সরকারের মংডুর কৃষি বিভাগের প্রধান থিয়েন ওয়াই বলেন, ‘মাইও থু গাই গ্রামে আজ আমরা ফসল কাটা শুরু করেছি।’ মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার জানিয়েছে, দেশের অন্য অঞ্চল থেকে বাস ভরে কর্মী আনা হয়েছে। তবে অধিকারকর্মীরা সরকারের ধান কাটার এ পদক্ষেপকে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের চিরতরে বিতাড়িত করার কৌশল হিসেবে দেখছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে ২৫ আগস্ট শুরু হওয়া দেশটির সেনাবাহিনীর বর্বর অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে এ পর্যন্ত পালিয়ে গেছে প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা। এই মুহূর্তে সেদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রোহিঙ্গা নেই বললেই চলে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযান বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গাদের শত শত গ্রাম জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করে দেয়া হয়েছে। বৌদ্ধসংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে ‘রাষ্ট্রহীন’ রোহিঙ্গারা সেনাদের নির্যাতন-নিপীড়নের মুখে ঘরবাড়ি ছেড়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে, যাদের সংখ্যা ৬ লাখের কাছাকাছি। আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রবল চাপের মুখে যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় প্রমাণ করতে সক্ষম রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। তবে কারা ফিরতে পারবে, ফেরার পর তারা কীভাবে বসবাস করবে সে বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আকাশসম ঘৃণার আগুন জ্বলছে যেখানে, সেখানে তারা কীভাবে পুনর্বাসিত হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের কটাক্ষের সুরে বাঙালি বা শুধু মুসলিম বলে ডাকা হয়। থিয়েন ওয়াইও তাদের সেই নাম ব্যবহার করে বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া বাঙালিদের কিছু ধান ক্ষেত থেকে ফসল তোলার কাজ শুরু করছি আমরা।’ তবে এই ধান নিয়ে সরকার কী করবে বা কী প্রক্রিয়া রয়েছে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি ওই কর্মকর্তা। রোহিঙ্গাদের ভূমি থেকে ধান কেটে নেওয়ার এ প্রেক্ষাপটে এটি আরো পরিষ্কার হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের চেয়ে তাদের আবাদের ফসল মিয়ানমারের দরকার বেশি। অর্থাৎ রোহিঙ্গা নয়, মাটি চায় দেশটি। এএফপি জানায়, মিয়ানমার সরকারের এই পদেক্ষেপের ফলে সা¤প্রদায়িক সহিংসতায় পালিয়ে যাওয়া ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গার রাখাইনে ফেরা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াতে পারে। আন্তর্জাতিক ব্যাপক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসনের অঙ্গীকার করেছে। যারা সেদেশের বাসিন্দা হিসেবে প্রমাণ দেখাতে পারবেন শুধুমাত্র তাদেরকেই ফেরত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অং সান সু চি । প্রত্যাবাসনের এই পরিকল্পনা এখনো আঁধারেই রয়েছে। দেখা দিয়েছে বেশ কিছু প্রশ্নের; কে তাদেরকে ফেরার অনুমতি দেবে, তাদেরকে কীভাবে ফেরত নেয়া হবে এবং কীভাবে তারা ওই অঞ্চলে বসবাস করবেন তার যথাযথ উত্তর নেই। এরইমধ্যে রোহিঙ্গাদের ফসল কাটতে শুরু করেছে তারা। এএফপি, টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।