পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ ভেঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছেন জাতীয় পার্টি। গতকাল সোমবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে সম্মেলন কক্ষে সংলাপে দলটি এ দাবি জানায়।
অনুষ্ঠিত সংলাপে জাতীয় পার্টির পক্ষে নেতৃত্ব দেন দলটির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তবে সংলাপে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ যাননি। সংলাপে জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে ছিলেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মশিউর রহমান রাঙ্গা, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য এমএ সাত্তার, কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান, শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী, ফখরুল ইমাম, সালমা ইসলাম, সুনীল শুভরায়, এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এ.টি.ইউ তাজ রহমান, মহসিন রশীদ, আতিকুর রহমান আতিক, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, দিলারা খন্দকার, রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, সফিকুল ইসলাম সেন্টু প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে এরশাদ জানান, তত্ত¡াবধায়ক ব্যবস্থা বিলোপের মধ্যমে আমরা কলঙ্কমুক্ত হতে পেরেছি। আমরা বলে আসছি সাংবিধানিক পন্থা অনুসারেই সব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। সে অনুসারে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাজনৈতিক প্রতিনিধিরাই আসীন থাকবেন। এরশাদের প্রস্তাব ৮টি হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হস্তক্ষেপ করা চলবে না, নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করতে হবে, নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের আনুপাতিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে হবে। দলীয় প্রধানের সুপারিশের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার সদস্য নিয়োগ করতে হবে, নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন কোনো বিতর্কিত কর্মকর্তাকে দায়িত্বে রাখতে পারবে না, নির্বাচনী ব্যয় সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে- সব খরচ তার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে কঠোরতা আরোপ করতে হবে। প্রচার কাজের গাড়িবহর সীমিত রাখার বিধান রাখতে হবে, সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ প্রসঙ্গে বার বার সীমানা নির্ধারণ না করে ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে, নির্বাচনকালীন প্রয়োজনে সংবিধানের ধারা-উপধারা সংশোধন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিয়ে আসতে হবে এবং নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে বিবেচনা করতে হবে।
এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির একটি সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রস্তাব রয়েছে। বর্তমানে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাতে অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা খুবই কঠিন ব্যাপার। এই পদ্ধতিতে-সন্ত্রাসী, মাস্তান, কালো টাকার মালিক, অর্থ ও বিত্তের জোরে রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের দলীয় মনোনয়ন কিংবা নির্বাচনে জিতে আসার সুযোগ রয়েগেছে। সৎ-বিজ্ঞ, ত্যাগী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনসেবা ও দেশসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এখানে সংসদীয় সরকার পদ্ধতির শাসন ব্যবস্থাই হচ্ছে দলীয় শাসন। আর গণতান্ত্রিক শাসনের মূল কথা হচ্ছে- সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন ব্যবস্থা। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতিতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে দেখা যায়- অনেক সময় সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন থাকে না। যেহেতু সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতি দলীয় শাসন ব্যবস্থা- সেক্ষেত্রে নির্বাচনও শুধু দলের ভিত্তিতে হতে পারে। অর্থাৎ ভোটাররা দলকে ভোট দেবেন। সরাসরি প্রার্থীকে নয়। প্রত্যেক দলপ্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসনের সদস্য পাবে। বর্তমান বিশ্বে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পরিচালিত যেসব দেশে এই পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে- সেসব দেশকে অনুসরণ করে এবং জাতীয় পার্টির প্রস্তাবিত নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রস্তাব অনুসারে নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার করার প্রস্তাব পেশ করা হবে। এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির যে বিস্তারিত সংস্কার প্রস্তাব রয়েছে তা নির্বাচন কমিশন বিবেচনা করতে পারে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিতে নির্বাচন কমিশন ধারাবাহিক সংলাপের আয়োজন করেছে। এরই অংশ হিসেবে জাতীয় পার্টি সংলাপে অংশ নিয়েছে।
এ পর্যন্ত ২৬টি দলের সঙ্গে মতবিনিয়ে বসলো কমিশন। এ ছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বিকেলে ইসলামী ঐক্যজোট-পুনর্নির্ধারিত, ১১ অক্টোবর সকালে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকেলে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ১২ অক্টোবর সকালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বিকেলে গণতন্ত্রী পার্টি সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি। ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, ১৬ অক্টোবর সকালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বিকেলে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ১৯ অক্টোবর সকালে জাতীয় পার্টি (জেপি), বিকেলে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে ইসির মতবিনিময়ের কথা রয়েছে। এ ছাড়া ২২ অক্টোবর পর্যবেক্ষক সংস্থা, ২৩ অক্টোবর নারী নেত্রী ও ২৪ অক্টোবর নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কমিশনের মতবিনিময়ের কথা রয়েছে। ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩১ জুলাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে কমিশন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।