মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারে জাতিসংঘের কৌশলের সমালোচনা এবং রোহিঙ্গা সঙ্কটের মোকাবিলায় প্রস্তুতিহীনতার হুঁশিয়ারি করে আগাম দেয়া একটি প্রতিবেদন সংস্থাটি ধামাচাপা দিয়েছিল বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিগত মে মাসে এক পরামর্শক প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করে জাতিসংঘের কাছে জমা দেয়। এতে জাতিসংঘের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে মানবাধিকার প্রশ্নে নীরব থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করা হয়েছিল। গার্ডিয়ানের হাতে আসা ওই প্রতিবেদনে নির্ভুলভাবে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছিল। এতে দ্রæত জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহŸান জানানো হয়েছিল। প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছিলেন নিরপেক্ষ বিশ্লেষক রিচার্ড হোরসে। একটি সূত্র জানিয়েছে, যে ব্যক্তি এই প্রতিবেদন প্রস্তুতের অনুমতি দিয়েছিলেন, তিনিই এটি ধামাচাপা দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর ও নির্বিচার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তার এই আশঙ্কা সত্য পরিণত হয় ২৫ আগস্ট একটি সন্ত্রাসী হামলার পর। হামলার পরপরই মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনী নৃশংসভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে রোহিঙ্গাদের ওপর। মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে। সন্ত্রাসীদের দমনের নামে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী রোহিঙ্গা গণহত্যা শুরু করে। ‘দি রোল অব দি ইউনাটেড নেশন্স ইন রাখাইন স্টেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রস্তুতের ব্যবস্থা করেছিলেন জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী রেনেটা লক-ডেসালিয়েন। তিনি মিয়ানমারে সংস্থার সবচেয়ে সিনিয়র কর্মকর্তা। এতে ১৬টি সুপারিশ করা হয়। কিন্তু সুপারিশগুলো অগ্রাহ্য করে প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দেয়া হয়। সুপারিশগুলো রেনেটা লকের পছন্দ না হওয়ায় প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে সরবরাহ করা হয়নি। এদিকে রেনেটা লক আরো কিছু অভিযোগের মুখে পড়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তিনি রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম প্রচারে বাধা দিয়েছেন। সাহায্য কর্মীরা বলছেন, মানবিক ও মানবাধিকার বিষয়গুলো অগ্রাহ্য করে জাতিসংঘ মিয়ানমারের সাথে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। তবে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের একজন মুখপাত্র এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আবাসিক সমন্বয়কারী বিরামহীনভাবে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। জাতিসংঘের সব কাজে মানবাধিকার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এ ব্যাপারে মন্তব্য করার জন্য প্রতিবেদনটির প্রস্তুতকারী হোরসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জাতিসংঘ জানত কিংবা তার জানা উচিত ছিল, রাখাইনের স্থিতাবস্থা একটি বড় সঙ্কটে রূপ নেবে। তবে তিনি রেনেটা লকের প্রতি তীব্র আক্রমণ যৌক্তিক নয় বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এটা সত্য, আবাসিক সমন্বয়কারী হয়তো কিছু বিষয় ভিন্নভাবে বা আরো ভালোভাবে করতে পারতেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে জাতিসংঘের যেকোনো ব্যর্থতা এর সদর দফতরের ওপরই বর্তায়। তিনি বলেন, তারা মিয়ানমারের প্রতি কঠোর ও সুসমন্বিত পদক্ষেপ নেয়নি। ইয়াঙ্গুনে জাতিসঙ্ঘের এক কর্মকর্তা বলেন, মানবাধিকার বাস্তবায়নে তেমন প্রয়াস চালানো হয়নি। তারা কিছু করার কথা বলেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়াবিষয়ক উপপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, মানবাধিকারকে সামনে আনা তো হয়ইনি, বরং একে পেছনে ঠেলে দেয়া হয়েছে। গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।