পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা অসুস্থতাজনিত কারণে এক মাসের ছুটি চেয়েছেন -আইন সচিব
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন বাতিলের রায় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে থাকা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক মাসের ছুটির আবেদন করেছেন। প্রেসিডেন্ট বরাবর গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটির এই আবেদন করেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে মহামান্য প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন কিছু বলতে চাননি। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রেসিডেন্ট কাছে প্রধান বিচারপতি এক মাসের ছুটি চেয়েছেন। ছুটির আবেদনে কাল (মঙ্গলবার) থেকেই তিনি ছুটিতে যেতে ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুুবে আলম ইনকিলাবকে জানান, অসুস্থততার কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্টের কাছে প্রধান বিচারপতি ছুটির আবেদন করেছেন।
উল্লেখ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন বাতিলের পুণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ‘রায়’ নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ প্রকাশ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নানা প্রক্রিয়ায় দেন-দরবার করে প্রধান বিচারপতিকে তাঁর অবস্থান থেকে সরানোর চেষ্টা করা হয়। নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন প্রধান বিচারপতি। এরই মধ্যে সুপ্রিম কোটের এক মাসের অবকাশ ছুটি শুরু হলে ১২ দিনের ছুটি নিয়ে প্রধান বিচারপতি বিদেশ যান। সে সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়। তখনই আইনজীবীদের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেয়া হতে পারে। দেশে ফিরে এসে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা যোগদান করে বেঞ্চ পুনর্গঠন করেন। কিন্তু হঠাৎ করেই রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা গতকাল জানান, প্রধান বিচারপতি ব্যাক্তগত কারণ দেখিয়ে এক মাসের ছুটির আবেদন করেছেন।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর এ নিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংক্ষুব্ধ হয়। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার দেয়া বিচারিক রায়ের বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন সিনিযর মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও সরকারপন্থী আইনজীবীরা। তাঁরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও তোলেন। অবকাশ শেষে বিচারপতি সিনহাকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের হুমকি রয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের। তার আগেই মঙ্গলবার থেকে ছুটি চেয়ে প্রেসিডেন্ট কাছে বিচারপতি সিনহার আবেদনের কথাটি প্রকাশ পেল। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুুবে আলম ইনকিলাবকে বলেন, অসুস্থততার উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি ছুটির আবেদন করেছেন। আগামীকাল থেকে এর ছুটির আবেদন করা হয়েছে। অসুস্থতা’র কারণ দেখিয়ে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের কাছে এক মাসের ছুটি চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি যতদূর জানি, উনি (বিচারপতি সিনহা) আগামীকাল থেকে ছুটিতে যাবেন।
এ বিষয়ে আইনসচিব আবু সালেহ শেখ মুহাম্মদ জহিরুল হক দুলাল ইনকিলাবকে বলেন, প্রধান বিচারপতি অসুস্থতাজনিত কারণে এক মাসের ছুটির আবেদন করেছেন। আবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে প্রেসিডেন্ট অনুমোদনের জন্য যাবে।
বিচারপতি সিনহা ছুটিতে গেলে আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারক হিসেবে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা।
বিচারপতি সুরন্দ্রে কুমার সিনহার চাকরির আরও তিন মাস বাকি আছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রয়েছে তার চাকরির মেয়াদ। ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পাওয়া বিচারপতি সিনহা এই বছর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দেয়ার পর থেকে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনার মুখে। বিচারপতিদের অসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের এই সংশোধন এনেছিল বর্তমান সরকার। হাই কোর্ট ওই সংশোধন বাতিলের পর আপিল বিভাগও একই রায় দেয়। ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি সংসদ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে খাটো করেছেন বলে অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও সংসদ সদস্যরা। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তোলেন কেউ কেউ। অন্যদিকে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার আমলে প্রতিষ্ঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে আনার এই রায়কে স্বাগত জানায় বিএনপি। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং তার কিছু পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়।
ওই প্রস্তাব পাসের আগে সংসদে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সংসদে আনা সংবিধান সংশোধন বাতিলের এই রায় দিয়েছে। সংসদ ও গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে’ এই রায় দেয়ার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন ে তোলেন সরকার প্রধান।
রায় নিয়ে সমালোচনার মুখে বিচারপতি এস কে সিনহা আদালতে শুনানিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি বলেন, তাকে ‘মিসকোট’ করে প্রকাশিত বক্তব্যের কারণে তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। ষোড়শ সংশোধন বাতিলের ওই রায় ‘ভ্রমাত্মক’ বলে প্রতিক্রিয়া এসেছে সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বর্তমানে আইন কমিশনের সদস্য এ বি এম খায়রুল হকের কাছ থেকে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করবেন জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আশা প্রকাশ করেছেন, এতে তারা কামিয়াব হবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।