Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের চট্টগ্রামে বর্ণাঢ্য প্রতিযোগিতায় আলোচকগণ

ব্যাপক জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা হয়েছে আরবি ভাষায়

| প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : জ্ঞান-বিজ্ঞান পিপাসু অগণিত টগবগে তরুণ মাদরাসা শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে গতকাল (শনিবার) দিনব্যাপী বন্দরনগরীর চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট হল ছিল অন্যরকম প্রাণবন্ত। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার উদ্যোগে জাতীয় প্রতিযোগিতা-২০১৭ এর আওতায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে এক বর্ণাঢ্য প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়। এবার প্রতিযোগিতার বিষয় আরবি ভাষা ও ইসলামি জ্ঞান। সকাল থেকে টানা প্রতিযোগিতা শেষে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এতে বিশিষ্ট আলোচকগণ বলেছেন, আরবি ভাষা বিশ্বের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাষা। মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের ধর্মগ্রন্থের ভাষা হিসেবে যেমন এ ভাষা মর্যাদাবান, তেমনি বিশ্বে ব্যাপক জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা হয়েছে আরবি ভাষায়। আলোচকগণ আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে পারদর্শী হয়ে জাতীয় উন্নয়নে আরও অবদান রাখার জন্য মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহŸান জানান। অনুষ্ঠানে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আলেম-মাশায়েখ, শিক্ষাবিদ, শিক্ষা-গবেষকগণ সামিল হন।
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য ও ব্যাংকিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সুলতান আহমদ, ছিপাতলী জামেয়া গাউসিয়া মুঈনিয়া কামিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা মুহাম্মদ আজিজুল হক আল কাদেরী ও নোয়াখালীর চাটখিল কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ খ্যাতিমান মুহাদ্দিস মুহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেন, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠান মাদরাসা সম্পর্কে মানুষের প্রচলিত ধারণা পাল্টে দেবে। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আরবি ভাষা ও ইসলামি জ্ঞান চর্চায় আরো মনোযোগী হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, মুসলমানরা সবসময়ই অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে কাজ করেছেন। মুসলমানদের উদারতা মানবসেবা সবসময় বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করেছে। কক্সবাজারে বিপদগ্রস্থ রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে বাংলাদেশের জনগণ যে অবদান রেখেছে তা বিশ্ববাসীর কাছে বিপুলভাবে প্রশংসিত হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকেই সারাদেশে মাদরাসা শিক্ষায় নতুন গতি সঞ্চার হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের আরবি ভাষা ও ইসলামি জ্ঞানে দক্ষ হতে হবে। একই সাথে বাংলা-ইংরেজী, তথ্য-প্রযুক্তিসহ আধুনিক সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে মনোযোগী হতে হবে। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে আগামীতে জাতীয় উন্নয়নে আরও অবদান রাখার জন্য মাদরাসা শিক্ষার্থীদের তৈরি হতে হবে। তিনি বলেন, আগে মাদরাসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। এখন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। দেশের সকল মাদরাসা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত। মাদরাসা ছাত্র-ছাত্রীদের সব জড়তা ত্যাগ করে নবউদ্দীপনায় শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে আসতে হবে।
প্রফেসর ড. সুলতান আহমদ বলেন, জ্ঞানীর প্রয়োজনীয়তা কোনকালেই শেষ হয় না। কারণ জ্ঞানীরাই দেশ পরিচালনা করেন। জ্ঞানী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া করতে হবে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান ও সহকারী রেজিষ্ট্রার ফাহাদ আহমদ মোমতাজী।
গতকাল মুসলিম ইনস্টিইটউট হলে আরবি ভাষায় উপস্থিত বক্তৃতা ও ইসলামি জ্ঞানের এই প্রতিযোগিতায় জেলাভিত্তিক ৭৯ জন বিজয়ী অংশ নেন। প্রতিযোগিতা চলে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন ছিপাতলী জামেয়া গাউসিয়া মুঈনিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আল্লামা আবুল ফরাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন ও আল-আমিন বারিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ইসলামইল নোমানী। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আশেকানে আউলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা রিদওয়ানুল হক, ছোবহানিয়া আলিয়া মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা জুলফিকার, অধ্যাপক মাহফুজুল হক ও অধ্যাপক আলী আজগর। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ, টাঙ্গাইলের গোপলপুর আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ফায়জুল আমিন সরকার ও সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসার প্রভাষক মাওলানা আবদুর রহমান।
বিভাগীয় পর্যায়ের পরই জাতীয় রাউন্ডের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহাম্মদপুরস্থ ক্যাম্পাস মিলনায়তনে। জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে আগামী ১৯ নভেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার প্রদান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ