পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আধুনিকায়ন হবে মাদরাসা শিক্ষা : বাড়বে গুণগত সুযোগ-সুবিধা
বহুল প্রতিক্ষিত ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভায় উত্থাপন হতে যাচ্ছে। একনেকের পরবর্তী সভায় পাস হতে পারে প্রকল্পটি। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের পুরোটিই বাস্তবায়ন হবে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২১ পর্যন্ত। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ উপজেলায় ২০ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আধুনিক শিক্ষার সাথে সমন্বয় রেখে মাদারাসা শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ হবে। মাদরাসা শিক্ষায় অধিক দক্ষ ও প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন জনবল সৃষ্টি হবে। তারা দেশে এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে, যা দেশের দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচি, এসডিজি (সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) ও ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সাধারণ শিক্ষায় ডিগ্রিধারীদের সাথে মাদরাসা শিক্ষায় ডিগ্রিধারীরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও সফলকাম হতে পারবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের উদ্দেশ্যে সম্পর্কে বলা হয়েছে, মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, আধুনিকীকরণ এবং দেশের সকল ফাজিল ও কামিল মাদরাসা শিক্ষা কার্যক্রম যথাযথ পরিচালনা করে উচ্চ শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো স্থাপন। ফাজিল (স্নাতক) এবং কামিল (স্নাতকোত্তর) পর্যায়ের কারিকুলাম ও সিলেবাস উন্নয়ন। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। মাদরাসায় অধ্যয়নরত ও শিক্ষাদানরত শিক্ষার্থী এবং শিক্ষককে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ নিতে আসা মাদরাসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক সুবিধা সৃষ্টি করা। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এই অর্থের মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ব্যয় হবে মাত্র ১৭ লাখ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১২৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮৪ কোটি ৯০ লাখ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৭০ কোটি ৪ লাখ এবং ২০২০-২১ অর্থ বছরে ব্যয় হবে ১২৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
এই প্রকল্পের অধীনে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যায়ের সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি করা হবে। ক্যাম্পাসের অবকাঠামোর মধ্যে ১০ তলা প্রশাসনিক ভবন, ৬ তলা একাডেমিক ভবন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ডরমিটরি, মহিলা ও পূরুষ ডরমিটরি, ভিসির বাসভবন, অডিটরিয়াম, মসজিদ, শহীদ মিনার, গেস্ট হাউজ, আনসার ব্যারাক ইত্যাদি ভৌত সুবিধা গড়ে তোলা হবে।
এর আগে গতবছর ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য ৫৮৯ কোটি ১৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় প্রস্তাব করা হয়। এই প্রস্তাবের উপর একই বছর ২০১৬ সালের ২৫ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভ্যন্তরীণ প্রকল্প যাচাই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ি ডিপিপি অনুমোদনের জন্য একই বছর ২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাঠানো হয়। ইউজিসি ডিপিপি পুনগর্ঠন করার নিদের্শনা প্রদান করে। ডিপিপি পুনগর্ঠন করে অনুমোদনের জন্য ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট পুনরায় ইউজিসিতে প্রেরণ করা হয় এবং ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর ডিপিপি’র উপর একটি প্রেজেন্টেশন সভাও হয়। এতে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প গৃহীত হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ৩ এপ্রিল প্রকল্পটির উপর পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় প্রকল্পের ব্যয় প্রস্তাব করা হয় ৪৭১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। পিইসি সভার সিদ্ধান্তের আলোকে গত ৭ আগস্ট প্রকল্পের পুনর্গঠিত ডিপিপি নির্ধারণ করা হয় ৪১৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।