নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ ফুটবলের কবর ঘুড়ে ফেলেছিলেন অনেকেই। অনেকেই দেখে ফেলেছিলেন এর শেষও। তবে বয়সভিত্তিক দল আর নারী দলের সাফল্য মাঝে মাঝেই আশার সেই সলতে জ্বালিয়ে আলোকিত করে বাংলাদেশের ফুটবলাঙ্গণ। এই যেমন এবারের সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে ‘বেঙ্গল টাইগার্স জুনিয়ররা। প্রথম ম্যাচে ফেভারিট ভারতকে অবিশ্বাস্য ভাবে ৪-৩ গোলে হারিয়েই মূলত চ্যাম্পিয়নের রাস্তায় অনেকটা পথ এগিয়ে যাওয়া। পরের ম্যাচে মালদ্বীপকে ২-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার ১ নম্বরে।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে পাঁচ দলের মধ্যে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। একমাত্র অপরাজিত দল হিসেবে আজ তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে মাহবুবুর রহমান রক্সি শিষ্যরা। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নেপাল। ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে সন্ধ্যায় ৭টায় দু’দলের এই ম্যাচটি শুরু হবে। নেপালিদের হারিয়ে এবং ভুটানের বিপক্ষে হার এড়াতে পারলেই প্রথমবারের মত যুব সাফের ট্রফি আসবে বাংলাদেশে। একই দিন মাঠে নামবে টুর্নামেন্টের বর্তমান রানার্স আপ এবং শিরোপার অন্যতম দাবিদার ভারত ও টানা তিন ম্যাচ হেরে সবার আগে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়া মালদ্বীপ। একই ভেন্যুতে ম্যাচটি শুরু হবে বিকেল ৪টায়।
নেপালকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারলে শিরোপা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। কিংবা জয় পেলেও শিরোপা রেসেই থাকবে বাদশা বাহিনী। ড্র করলেও যে শিরোপা রেস থেকে ছিটকে যাবে এমন নয়। সেক্ষেত্রে শেষ ম্যাচে ভুটানকে হারাতেই হবে। তবে সেসব সমীকরণে যেতে রাজি নয় বাংলাদেশ। ম্যাচ বাই ম্যাচ জিতে ট্রফি নিয়েই দেশে ফেরার ইচ্ছা লাল-সবুজদের। বাংলাদেশের মতো নেপালও ইতিমধ্যে দুই ম্যাচ খেলেছে। যেখানে এক জয়ের বিপরীতে একটিতেই। শিরোপা জেতার সম্ভাবনা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি চ্যাম্পিয়ন নেপালের। বরং আজ বাংলাদেশকে হারাতে পারলে শিরোপা জয়ের প্রবল সম্ভাবনা থাকবে নেপালেরই!
সাফে নেপালের বিপক্ষে রেকর্ড ভালো নয় বাংলাদেশের। এই টুর্নামেন্টেরই প্রথম আসরে যেটি ২০১৫ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেখানে ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরেছিল বাংলার যুবারা। নিশ্চয়ই বিষয়টি মাথায় আছে টিম ম্যানেজমেন্টের। বয়সভিত্তিক ফুটবলে বাংলাদেশ যেমন ভালো করছে নেপালও পিছিয়ে নেই। বরং এ ধরনের টুর্নামেন্টে নেপাল বাংলাদেশের যে কয়েকগুণ এগিয়েই। সেটা তারা ইতিমধ্যে প্রমাণও করেছে। গত আসরের ফাইনালে ভারতের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে ট্রফি জিতে।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এবার সাফ যাত্রা শুরু বাংলাদেশের। উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতকে ৩-৪ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে। প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পরও ঐতিহাসিক জয় তুলে শিরোপা জয়ের দাবিটা জোরালো করেছে। এক জয়ই আন্ডারডগ বাংলাদেশকে ফেবারিটের তকমা এঁটে দিয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপকে ০-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে ফেবারিটের পাশাপাশি এখন শিরোপায় চোখ বাদশা, জাফর, রহমত, বিশ্বনাথদের। শিরোপা থেকে এখন দুই ধাপ দূরে রয়েছে বাংলাদেশ। নেপালকে হারাতে পারলে আজ আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। তখন সামনে থাকবে কেবল স্বাগতিক ভুটান। যে ম্যাচটি টুর্নামেন্টের সমাপনী দিন অর্থাৎ ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ তাদের শেষ ম্যাচ খেলেছে গত ২২ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপের বিপক্ষে। এরপর চারদিনের লম্বা ছুটি পেয়েছে। কিন্তু এই চারদিন শুয়ে বসে কাটায়নি। প্রথমদিন ক্লান্তি দূর করতে ভুটানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পরিভ্রমণে ঘণ্টা দুই সময় কাটিয়েছে পুরো দল। কিন্তু ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে কাল পর্যন্ত মাঠে কঠোর অনুশীলন করেছে। প্রতিপক্ষের দুর্বল এবং শক্তিশালী দিক নিয়ে খেলেনায়াড়দের নিয়ে কাজ করেছেন কোচ রক্সি। অনুশীলনের অংশ হিসেবে ভিডিও সেশনও রাখা হয়েছে। এরই ফাঁকে প্রতিপক্ষের ম্যাচ দেখতে মাঠেও দলবলসহ উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট।
একটা সময় হেসেখেলে বলে কয়েই নেপালকে হারাত বাংলাদেশ। তখন দু’দলের জাতীয় দলই লড়াইয়ে নামত। কিন্তু ফুটবলে সেই স্বর্ণালী দিন এখন আর নেই বাংলাদেশের। লাল-সবুজদের টপকে যোজন যোজন এগিয়ে গেছে নেপালীরা। ফুটবলে বাংলাদেশের চেয়ে খুব বেশি অর্থ খরচ কিংবা অবকাঠামোগত উন্নয়নে এগিয়ে নেপাল এমনও নয়। শুধু সদিচ্ছা আর পরিকল্পনার কারণেই বাংলাদেশকে টেক্কা দিতে পেরেছে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে এক সময়ের অবহেলিত দলটি।
ফুটবলের পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ হয় ফেডারেশনের। আয়ও কম নয়। বছরে ফিফা-এএফসি থেকে ভালোই অর্থ আসে। তাছাড়া ক্লাবগুলোও কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে। কিন্তু সাফল্যের ঝুড়ি তলাবিহীনই রয়ে গেছে। সামান্য একটা একাডেমি এখনো গড়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। অথচ নেপালের মতো স্বল্প আয়ের দেশ তাদেরও একাডেমি রয়েছে। এবং সেখান থেকে প্রতি বছর পাইপলাইনে মেধাবী ফুটবলার বের হচ্ছে। যারা দেশের জন্য বয়ে আনছে গর্ব করার মতো সাফল্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।