পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720472305](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে নেই ভারী যানবাহনের জট। দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কও অনেকটা ফাঁকা। অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ-আছাদাগঞ্জে নেই পণ্যবাহী ট্রাকের আনাগোনা। ঈদের ছুটি শেষ হলেও কাটেনি ঈদের আমেজ। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি কার্যক্রম এখনো পুরোদমে সচল হয়নি। ঈদের তিনদিন ছুটির পর তিনদিন কর্মদিবস শেষে আজ শুক্রবার থেকে শুরু দুইদিনের সরকারি ছুটি। ফলে আগামী রোববার থেকে ফের বন্দরনগরী চট্টগ্রাম তার চিরচেনা রূপে ফিরবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এবার ঈদের ছুটি কম হলেও অনেকে অতিরিক্ত ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। এ কারণে ঈদের ছুটি শেষেও কর্মচঞ্চল হয়নি বন্দরনগরী। মহানগরীর বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, বিপণি বিতান এখনো বন্ধ। দেশের অর্থনীতির মূলচালিকাশক্তি চট্টগ্রাম বন্দর সার্বক্ষণিক চালু রয়েছে। বন্দরের জেটি ও ইয়ার্ডে কন্টেইনার এবং পণ্য খালাস অব্যাহত আছে। তবে যেহারে কন্টেইনার খালাস হচ্ছে সেহারে তা ডেলিভারী হচ্ছে না। এতে করে বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড ও শেডে কন্টেইনারের পাহাড় জমছে।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার কন্টেইনার ডেলিভারী হয়। তারচেয়ে বেশি কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে ঢোকে। ঈদের ছুটিতে পণ্য পরিবহন প্রায় বন্ধ রয়েছে। আর এ কারণে বন্দরে জাহাজ থেকে কন্টেইনার নামলেও তা খালাস হচ্ছে না। বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনারের সংখ্যা এখন ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি। বন্দরের বহির্নোঙরে আসা বড় জাহাজগুলো থেকেও পণ্য খালাস কমে গেছে। লাইটারেজ জাহাজ চলাচল এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে গড়ে উঠা বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনালগুলোতেও বিরাজ করছে ঈদের আমেজ। এসব কন্টেইনার টার্মিনালের সামনে নেই ভারী যানবাহনের সারি। চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে মাঝিরঘাট, সদরঘাট, পোর্ট কানেকটিং রোড, টোল রোড ও পতেঙ্গা বিমানবন্দর সড়কে নেই ভারী যানবাহনের ভিড়। স্বাভাবিক সময়ে আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহন বিশেষ করে কাভার্ড ভ্যান, লরি, কন্টেইনার ম্যুভারের চাপে বন্দর এলাকার সড়কগুলোতে তীব্র যানজট লেগে থাকে। গতকাল সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসেও এসব সড়ক ছিল যানজট মুক্ত।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে সার্বক্ষণিক চালু রয়েছে জাতীয় রাজস্ব আদায়ের সিংহভাগ জোগান দেয়া চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। বন্দরে পণ্য ডেলিভারী কমে যাওয়ায় কাস্টম হাউসেও ভিড় নেই। কাস্টম হাউসের একজন কর্মকর্তা জানান, রাতেও খোলা থাকছে কাস্টম হাউস। কিন্তু পণ্য ডেলিভারী ও পরিবহন বন্ধ থাকায় কাস্টম হাউসে শুল্কায়নের পরিমাণ কমে গেছে। এ কারণে গত তিনদিনে কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়েও রীতিমত ধস নামে। দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও আছাদগঞ্জে এখনো নিরবতা বিরাজ করছে। সেখানে নেই পণ্যবাহী ট্রাকের আনাগোনা। খাতুনগঞ্জ ট্রেন এসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা জানান, ঈদের ছুটি শেষ হলেও এ বাণিজ্যিক এলাকায় এখনো ঈদের আমেজ বিরাজ করছে। স্বাভাবিক সময়ে সেখানে দিনে কোটি কোটি টাকার বেচাকেনা হলেও বর্তমানে নামমাত্র কিছু বেচাবিক্রি হচ্ছে। তারা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে স্বরূপে ফিরবে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও আছাদগঞ্জের সওদাগরি পাড়া।
মহানগরীর ডি টি রোড, মাদারবাড়ি, ধনিয়ালাপাড়া ও পাহাড়তলীর পরিবহন কোম্পানীগুলোতেও সুনশান নিরবতা বিরাজ করছে। বেশিরভাগ পরিবহন চালক ঈদের ছুটিতে চলে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে পণ্য পরিবহন। পরিবহন সংস্থার বেশিরভাগ অফিসে এখনো তালা দেয়া। মহানগরীর সদরঘাট, মাঝিরঘাট, পোর্ট কানেকটিং রোড ও টোল রোডে হাজার হাজার ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান অলস দাঁড়িয়ে আছে। বিমানবন্দর সড়কের গুপ্তখালীতে রাষ্ট্রায়ত্ত¡ জ্বালানী তেল বিপণন কোম্পানী পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার ডিপোতে নেই ট্যাঙ্ক লরির আনাগোনা। এসব ডিপো থেকে এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানী তেল সরবরাহ দেয়া হয়। নৌপথেও জ্বালানী তেল পরিবহন এখনো স্বাভবিক হয়নি। তবে রেলের ওয়াগনে জ্বালানী তেল পরিবহন স্বাভবিক রয়েছে।
মহানগরীর প্রায় সব মার্কেট ও বিপণি কেন্দ্র এখনো বন্ধ রয়েছে। আগামী সপ্তাহে এসব মার্কেট পুরোদমে জমে উঠবে। ঈদের ছুটি শেষ হলেও চট্টগ্রাম ইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড, কালুরঘাট শিল্প এলাকার বেশিরভাগ কল-কারখানা এখনো পুরোদমে চালু হয়নি। এসব কারখানায় কর্মরত অধিকাংশ শ্রমিকের বাড়ি দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে। এ কারণে সরকারি ছুটির চেয়ে অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করা হয় এসব শ্রমিকদের জন্য। চট্টগ্রাম ইপিজেডে বেশিরভাগ কারখানা চালু হয়েছে। তবে শ্রমিকের উপস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল কম হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ এ অঞ্চলের বেশিরভাগ সড়ক এখন যানজট মুক্ত। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ফিরছে বন্দরনগরীতে। আগামী রোববার নাগাদ এ মহানগরী ফের জনাকীর্ণ হয়ে উঠবে। পুরোদমে জমে উঠবে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম এমন প্রত্যাশা করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।