পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতার দুটি অংশ রয়েছে। এর একটি হচ্ছে উদ্দেশ্যমূলক এবং অপরটি বিষয়ী। উদ্দেশ্যেমূলক অংশটিতে রয়েছে বিচার বিভাগের অপরিহার্য গুণাবলী। অপরদিকে বিষয়ী অংশে রয়েছে ব্যক্তি বিশেষের অধিকার ও স্বাধীনতা প্রাপ্তি, যা কোন বিচারকের দ্বারা নর্ধিারিত হবে। একজন বিচারক স্বাধীন না হলে তার পক্ষে ব্যক্তির অধিকার ও স্বাীনতার বাস্তবায়ন এবং আইনের ব্যাখ্যা সঠিক ও আইনানুগ হতে পারে না। কাজেই শুধু বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা নয় এবং কখনই শুধু বিচারকদের সুযোগ-সুবিধা কথা নয়, বরং এর পেছনে সংবিধানের রক্ষক হিসেবে জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষায় অভিভাবকের ভূমিকা পালনে বিচারকদের সক্ষম করে তোলার প্রয়োজনের যৌক্তিকতা রয়েছে। সুতরাং বিচারকদের স্বাধীনতা শুধূমাত্র বিচারকদের অপসারণের ওপর নির্ভর করে না। বরং এটা একটি ব্যাপকভিত্তিক প্রক্রিয়া,যার শুরু (ক) বিচারক নির্বাচন ও নির্বাচিত বিচারকদের মূল্যায়নের মানদন্ড দিয়ে। এর পরে রয়েছে (খ) চাকরির মেয়াদের নিরাপত্তা এবং (গ) পর্যাপ্ত বেতন-ভাতা প্রদান এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে আইনের আওতায় যথাযথভাবে গঠিত স্বাধীন ট্রাইবুনালের সামনে বিচারকদের আত্মপক্ষ সমর্থেণের পর্যাপ্ত সুযোগ ও অংশ গ্রহণসহ প্রমাণিতব্য অসদাচরণ মামলার পদ্ধতি সংযোজন। ফলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শুধুমাত্র রাষ্ট্রের বিশেষ কোন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ওপর নির্ভর করে না। একে রাষ্ট্রর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দিতে হবে এবং সংবিধান কিংবা এ দেশের আইনে তা সন্নিবেশিত থাকতে হবে, যাতে করে কোন মহলের তরফ থেকে কিংবা কোন করণে কোন বিধিনিষেধ, অযৌক্তিক প্রভাব, প্ররোচনা-প্রলোভন, চাপ, হুমকি, সরাসরি এবং/কিংবা পরোক্ষ হস্তক্ষেপ ছাড়া প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে ও আইনানুয়ী বিচার বিভাগ তাদের কাছে উত্থাপিত বিষয়সমূহের ব্যাপারে নিরপেক্ষভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিচারিক প্রকৃতির সকল মামলায় বিচার বিভাগের এখতিয়ার এবং আইনে প্রদত্ত ক্ষমতার আওতায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তাদের কাছে পেশ করা বিষয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের একান্ত কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা থাকতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ায় অযথাযথ কিংবা অনাকাক্সিক্ষত হস্তক্ষেপ, হুমকি কিংবা ভয়ভীতি প্রদর্শন থাকতে পারবে না এবং বিচার বিভাগীয় প্রক্রিয়া ব্যতীত অন্য কোন প্রক্রিয়ায় আদালতের কোন বিচারিক সিদ্ধান্ত রিভিউ করা যাবে না।
এই পর্যালোচনা থেকে এটি পরিষ্কার যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শুধুমাত্র এর কর্ম-পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে না, বরং বিচারক হিসেবে নিরপেক্ষ ব্যক্তিত্ব ও যোগ্য মানুষ নির্বাচনের ওপরও এটি নির্ভর করে। আর এই বিষয়টি আইনের শাসন সমুন্নত রাখার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং বিচার কার্যে জনগণের আস্থা বিপন্ন করার ক্ষেত্রেও সম গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এই মামলায় জড়িত বিষয়ের মধ্যে বাচারকদের নিয়োগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট নয়, তথাপি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্ন তুললে আলোচনার জন্য নিয়োগ ও অপসারণ উভয় বিষয় এসে যায়। কেননা উভয় প্রক্রিয়া একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। সুতরাং গুণগত মান বা মেধা, সু-উল্লেখিত শর্ত ও প্রকাশ্যে ঘোষিত সকলের জন্য সমান সুযোগ সুষ্টিকারী পদ্ধতির ভিত্তিতে সুষ্ঠু ও পক্ষপাতহীন প্রক্রিয়ায় যারা মেধার বিচারে যোগ্য বিবেচিত হবেন তারা নারী-পুরুষ যেই হোন কেন কিংবা এ ধরণের কোন
বৈষম্য ছাড়া তাদরেকে বিচারক পদে নিয়োগ দিতে হবে। প্রগতিশীলতা অর্জনের চাহিদা পূরণে বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। কোন বিচারক নিযুক্ত হওয়ার পর তার চাকরির মেয়াদকালের যথাযথ নিরাপত্তা ও বেতন-ভাতার স্তর সুরক্ষা এবং অযৌক্তিক রুদ্ধ না করে সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য বিচার ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে। আর এই অযৌক্তিক রুদ্ধের কারণে বিচার বিভাগের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হতে পারে। আমাদের সংবিধানে ৯৪(৪) এবং ১১৬ক অনুচ্ছেদে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রসঙ্গ এসেছে। এই ডিভিশন মাসদার হোসেন মামলার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেঃ
‘৯৪(৪) এবং ১১৬ক অনুচ্ছেদে স্বীকৃত ও ঘোষিত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের অন্যতম মৌলিক স্তম্ভ। একে সংবিধানের বিদ্যমান বিধান ব্যতীত অন্য কোনভাবেই ভেঙ্গে ফেলা, টুকরো টুকরো করা, সঙ্কুচিত বা হ্রাস করা যাবে না.....আমরা সংবিধানে এমন কোন বিধান পাই নি যা এই স্বাধীনতাকে সঙ্কুচিত, হ্রাস বা অন্য কথায় সংক্ষিপ্ত করতে পারে।’
উল্লেখিত এই মামলায় এই ডিভিশন কানাডা সুপ্রিম কোর্টের Water Valente Vs. Her Majesty the Queen (1985) 2 R.C.S. 673 মামলায় বর্ণিত নীতিমালা তুলে ধরে বলে, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ, যোগ্য ও নৈতিকতাবাদী বিচার বিভাগ অপরিহার্য।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লেগাল ফ্রেম ওয়ার্কের মধ্যে থাকবেঃ
(১) বিচারক বাছাই ও নিয়োগ পদ্ধতি;
(২) তাদের চাকরির মেয়াদ;
(৩) বিচারকদের কেউ অসদাচরণ করেছেন কি না কিংবা তিনি অযোগ্য বা অসমর্থ্য কি না তা নির্ধারণের জন্য একটি যোগ্য সংস্থা।----’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।