পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায় বহাল আদেশের বিরুদ্ধে ‘রিভিউ পিটিশন’ শুনানির উদ্যোগ নেবে সরকার। নিয়মিত আদালত খুললেই নেয়া হবে এ উদ্যোগ। এ কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এএম আমিন উদ্দিন বলেন, নিয়মিত আদালত খুললেই সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল বিষয়ে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ শুনানির উদ্যোগ নেয়া হবে। দ্রæত শুনানির জন্য নিয়মিত আদালতে আবেদন করব আমরা।
এর আগে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। এর আগে ওই বছরের ৮ মে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি হয়। ধারাবাহিকভাবে টানা ১১ দিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আপিল শুনানিতে আদালতে মতামত উপস্থাপনকারী ১০ অ্যামিক্যাস কিউরির মধ্যে শুধু ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে মত দেন। অপর ৯ অ্যামিক্যাস কিউরি (আদালত সহায়ক আইনজীবী) ড. কামাল হোসেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট এমআই ফারুকী, আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট এএফএম হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার এম. আমীর উল ইসলাম, সিনিয়র অ্যাডভোকেট টিএইচ খান, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল, অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বিপক্ষে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
২০১৬ সালের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী ‘অবৈধ’ বলে রায় দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইনসভার কাছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রয়েছে। দেশের সংবিধানেও শুরুতে এই বিধান ছিল। তবে সেটি ইতিহাসের দুর্ঘটনা মাত্র। রায়ে আরও বলা হয়, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ৬৩ শতাংশের অ্যাডহক ট্রাইব্যুনাল বা ডিসিপ্লিনারী কাউন্সিলরের মাধ্যমে বিচারপতি অপসারণের বিধান রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে দলের বিরুদ্ধে এমপিরা ভোট দিতে পারেন না। তারা দলের হাইকমান্ডের কাছে জিম্মি। তাদের নিজস্ব কোনো সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা নেই। ৭০ অনুচ্ছেদ রাখার ফলে এমপিদেরকে সবসময় দলের পক্ষে থাকতে হয়। বিচারপতি অপসারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও তারা দলের বাইরে যেতে পারেন না। যদিও বিভিন্ন উন্নত দেশে এমপিদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। মানুষের ধারণা হলো, বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হবে। সেক্ষেত্রে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা দুর্বল হয়ে যাবে, মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রসঙ্গত: ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেয়া হয়। যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল।
মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন চলে আসবে এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করবে- এমন যুক্তিতে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।