Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রূপগঞ্জের সড়কগুলো যান চলাচল অনুপযোগী

বৃষ্টিতে কাদাপানি আর রোদে ধূলির ঝড় : ভোগান্তিতে অর্ধ লাখ মানুষ

| প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জ থেকে মো. খলিল সিকদার: ক্ষত-বিক্ষত সড়ক। একে সড়ক বলা ঠিক হবে কী? সড়কতো নয় যেনো এঁদো ডোবা। কোথাও খানাখন্দে ভরা। কোথাও বড় গর্ত। আবার কোথাও হাঁটু পানি। স্বাধীনতার ৪৭ বছর ধরে সড়কটি নিয়ে অর্ধলাখ বাসিন্দা বঞ্চনা বয়ে বেড়াচ্ছেন। এলাকায় শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেছে। গড়ে উঠেছে জনবসতি। সরকার আসে সরকার যায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় প্রতিশ্রæতিও দেয়। কিন্তু সড়কটির ভাগ্যে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। বলছি রূপগঞ্জ উপজেলার শিল্পাঞ্চলখ্যাত তারাবো পৌরসভার কর্ণগোপ-গন্ধবপুর সড়টির কথা। প্রায় এক কিলোমিটার এ সড়কের জন্য দশ গাঁয়ের অর্ধলাখ মানুষ বছর জুড়েই ভোগান্তি আর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, সত্তর দশকে সড়কটি লোকজনের পায়ে হেটে চলাচলের উপযোগি ছিলো। পরে ১৯৮৩ সালে তৎকালীন তারাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. শওকত আলী ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কর্ণগোপ থেকে গন্ধর্বপুর পর্যন্ত মাটি ভরাট করে সড়কটি নির্মাণ করেন। এরপর ১৯৯৬ সালে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মতিউর রহমান স্থানীয় এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল মন্ত্রণালয়ে দৌড়ঝাঁপ করেন। ঐ সময় এলাকাবাসী কিছুটা আশার আলো দেখলেও পরে তা নিভে যায়। সড়কটি না হওয়ার পেছনের কারন হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কর্ণগোপসহ আশপাশের এলাকাগুলোয় আনুপাতিক হারে ভোটার সংখ্যা কম ছিলো। ফলে জনপ্রতিনিধিরা এ এলাকাগুলোকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। যেই এলাকাগুলোর আশপাশে শিল্পকারখানা গড়ে উঠলো, সেই থেকে এলাকায় জনবসতিও গড়ে উঠে। এরপর থেকে এলাকার দিকে নয়, এলাকার জমির দিকে চোখ পড়ে শিল্পকারখানার মালিক ও জনপ্রতিনিধিদের। রাস্তাঘাটের উন্নতি হলে জমির দাম বেড়ে যাবে এমন আশঙ্কা থেকেই অনেকে এ সড়কটি নির্মাণ হোক তা চাচ্ছে না।
স্থানীয়রা আরো বলেন, কর্ণগোপ-গন্ধর্বপুর সড়কটি সংস্কার হলে এ সড়কের আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষের জীবনমান উন্নয়নের পরিবর্তন ঘটবে। এলাকার ছেলেমেয়েদের ভাল স্কুলে লেখাপড়ার সুযোগ মিলবে। সড়কটির কারণে এ এলাকাগুলোর ছেলেমেয়েরা ভাল স্কুলে যেতে পারে না। অসুস্থ কিংবা গর্ভবতী নারীদের দ্রæত হাসপাতালে নেওয়া যায় না। হাঁট-বাজারে জন্যও কাঁদা-পানি মাড়িয়ে বহু কষ্টে এলাকাবাসীকে যেতে হয় পার্শ্ববর্তী বাজারে। অথচ গ্রামগুলো থেকে মাত্র দশ মিনিটের পথ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। এ মহাসড়কের পাশ ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে আলরাজি স্পিনিং, জিয়া স্টিল মিলস, আল আছোয়াদ স্টিল মিলস, গাজী পাইপ, গাজী ট্যাংক, হাতিম স্টিল, এম ই বি সিট গøাশ, মেট্রো স্পিনিং ও ইউ এস বাংলা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট-বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় অধিকাংশ শ্রমিক দীর্ঘদিন ধরে পরিবার-পরিজন নিয়ে কর্ণগোপ-গন্ধর্বপুর সড়কের পাশ্ববর্তী কর্ণগোপ, নোয়াগাও, বংসীনগড়, বোচারবাগ, নামা গন্ধর্বপুর, নারসিংগল, গন্ধর্বপুর, মাছুমপুর, বারৈইপাড়া, শান্তিনগড় গ্রামে বসবাস করে আসছে।
কথা হয় কর্ণগোপ গ্রামের দুলাল ভুইয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার জানা মতে এত্তো খারাপ রাস্তা কোথাও নাই। কি-যে কষ্ট মানুষের। তেল-নুন-ডাইল আনতেও পেক-পানি (কাঁদা-পানি) দিয়া পাশের বাজারে যাইতে অয়। ব্যবসায়ী রহিম বক্স বলেন, পোলাপানগো ভালা স্কুলে দিবার পারি না এই রাস্তার কারণে। বছর ভইরা রাস্তা খারাপ থাহে। মেঘ-বৃষ্টির দিনো কাঁদা-পানি থাহে। আর শীত সিজনে ধূলার জ্বালায় রাস্তা দিয়া হাটাও যায়না। কতো সরকার যে আইলো আর গেলো ভাই। ওই ভোট আইলে কয় ভোট দিয়েন কতা দিলাম কইরা দিমু। ভোট শেষ আর খবর লয়না। আমাগো কপালডাই খারাপ।
তারাবো পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজী বলেন, এ বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। জেনেছি যেহেতু এ বিষয়টি সম্পর্কে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বৃষ্টি

৫ অক্টোবর, ২০২২
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ