Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ফুটে উঠছে ক্ষত চিহ্ন

বন্যার তীব্রতা কমছে

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম


উত্তরাঞ্চলে কিছুটা উন্নতি হলেও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি আগের মতোই। জামালপুরে যমুনার পানি কমতে শুরু করলেও বাড়ছে ব্রহ্মপুত্রে। চার দিন ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ। ব্রহ্মপুত্রে সামান্য কমলেও, শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। গাইবান্ধা, লালমনিরহাটে বন্যার পানি কমলেও জামালপুরের বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনা, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে, টাঙ্গাইলে যমুনা, ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে তুলশীগংগা নদীর শহররক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে শহরে। ছোট যমুনার পানি বিপদ সীমার নীচে। টাঙ্গাইলে চরাঞ্চলের বেশির ভাগ ঘরবাড়িই পানির নিচে। দুর্ভোগের সীমা নেই শরীয়তপুরে পদ্মাপাড়ের নিম্মাঞ্চলের অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও রংপুরে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। চরম দুর্ভোগে পাঁচ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। পদ্মায় পানি না বাড়লেও মানিকগঞ্জের কালিগঙ্গা, ইছামতি, ধলেশ্বরীতে পানি বেড়েছে। নওগাঁয় ছোট যমুনার বাঁধ ইকড়তারায় ভেঙে তলিয়ে গেছে নতুন নতুন এলাকা। আত্রাই ও যমুনার পানি বিপদসীমার উপরে।প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বাড়ছে নানা রোগ-বালাই। দগদগে হয়ে উঠছে বন্যার ক্ষত। খানা-খন্দকে এবড়ো-থেবড়ো হয়ে গেছে গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়ক। দুর্গম এলাকায় মিলছে না সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ। দুর্ভোগ আর কষ্টের শেষ নেই। বানের পানিতে আশ্রয়হারা মানুষ। কেউ আশ্রয় নিয়েছে উঁচু রাস্তায়। কেউবা আশ্রয় কেন্দ্রে। কেউবা খোলা আকাশের নিচে। অনিশ্চিত সময় পাড়ি দিচ্ছেন খেয়ে না খেয়ে। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে। অনেকেই রাতে ঘুমিয়েছে ঘরে। এ ঘুমের মধ্যেই ঘর তলিয়ে গেছে পানিতে। কোন রকমে প্রাণ নিয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছেন অন্যত্র। ক্ষুধার যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন তারা। এরই মধ্যে কেউ ত্রাণ নিয়ে গেলে শুরু হয় কাড়াকাড়ি। ত্রাণের বরাদ্দও অপ্রতুল। বিভিন্ন স্থানে বাড়ছে সাপের উপদ্রব। বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভেসে গেছে লাখ লাখ হেক্টর ফসলি জমি ও খামারের মাছ। ঋণের টাকা ও জীবিকা নিয়ে দুচিন্তায় কৃষক। এসব মানুষের দুঃখ কষ্ট নিয়ে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য নিয়ে রিপোর্ট:
শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তাসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পারিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে দুর্ভোগ কমেনি বানভাসীদের। গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়কগুলোর স্থানে স্থানে ভেঙে যাওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দুর্গম এলাকায় মিলছেনা সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ। চারনভুমি তলিয়ে থাকায় টিউবয়েল তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। পানিতে বেশি সদয় থাকার ফলে হাত-পায়ে ঘা, জ্বর কাশিসহ ছড়িয়ে পড়ছে পানি বাহিত নানা রোগ। বন্যা দুর্গত এলাকায় চলছে ত্রানের জন্য হাহাকার। নৌকা দেখলেই ত্রানের আশায় ছুটছে বানভাসীরা। সরকারী, বেসরকারী ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রান বিতরনে সমন্বয়হীনতায় দুর্গম চরাঞ্চলের বন্যা দুর্গতের ভাগ্য জুটছে না কিছুই।
মোহাঃ ইনামুল হক মাজেদী গঙ্গাচড়া (রংপুর) থেকে জানান, রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলায় তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। তবে বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, শিশু খাদ্য, গোখাদ্য ও খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় বানভাসিদের জন্য মিলছে না প্রয়োজনীয় ত্রাণ। অপরদিকে তিস্তার ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে। স¤প্রতি বন্যায় একদিনের ব্যবধানে উপজেলার নোহালী ইউনিয়নে ৩শ ৫০, আলমবিদিতর ইউনিয়নে ১০, কোলকোন্দ ইউনিয়নে ১০, ল²িটারী ইউনিয়নে ১শ ১৭, মর্ণেয়া ইউনিয়নে ৪০টি ঘরবাড়ীসহ ৩০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির রোপনকৃত আমন ক্ষেত বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এ উপজেলার ধানের ক্ষেত তলিয়া তলিয়ে থাকায় উৎপাদন কমবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
মা: সোহেল রানা খান, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) থেকে জানান, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা ঘাট পয়েন্টে যমুনার আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনা নদীর পানি। ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে রয়েছে। বানভাসি মানুষের বাড়ি-ঘরে হাটু ও কোমড় পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গৃহ বন্দি হয়ে পড়েছে তারা। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে জেলার ৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দৌলতপুর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার বাসিন্দারা। এসব উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে বিশুদ্ধ খাবার ও জ্বালানী সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এসব এলাকার লোকজন নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে ভাসমানভাবে বসবাস করার সুযোগ পেলেও বিপাকে পড়েছেন তাদের গৃহপালিত পশু নিয়ে।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, নওগাঁ জেলায় পানি কমতে শুরু করলেও ক্রমেই বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। প্রশাসন ও বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে নগদ অর্থ ও ত্রান সামগ্রী বিতরন করা হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে বানভাসিরা জানান। চলছে বিশুদ্ধ পানি ও পশু খাদ্যের সংকট। এ পর্যন্ত জেলায় সরকারী ভাবে ৩৪৭ মেট্রিক টন চাল এবং ১৫ লক্ষ ২২ হাজার নগদ টাকা বিতরন করা হয়েছে। বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে ১২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জেলায় মোট ৬৮ হাজার ৫৩৬ হেক্টর জমির ফসল বিন্ষ্ট হয়েছে। কয়েক হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। জেলায় প্রায় ৮১ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ হাজার বাড়িঘর সম্পূর্নভাবে এবং ২৬ হাজার বাড়িঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যায় মোট ১২ জন লোক নিখোঁজ রয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে রুহিত বাবু (৮) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মোঃ আজিজুল হক টুকু, নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, নাটোরের সিংড়ায় আত্রাই নদীতে বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় সিংড়া-আত্রাই বাঁধ ভেঙ্গে সড়কের ওপর দিয়ে উপচে পড়ছে পানি। এতে উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের ১০ টি ও শেরকোল ইউনিয়নের ৫ টি গ্রামসহ মোট ১৫ টি গ্রাম নতুন করে প্ল­াবিত হয়েছে। ২২টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হালতি বিলে তলিয়ে গেছে ৭০০ হেক্টর আমন ধান ভেসে গেছে ৬০টি পুকুরের মাছ আরোও কয়েক শতাধিক পুকুরের বাঁধ ঝুকির মধ্যে রয়েছে। বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকার কয়েক শতাধিক পরিবার রোববার বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় গবাদি পশু গরু ছাগল নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
রবিউল কবির মনু, গোবিন্দগঞ্জ(গাইবান্ধা)উপজেলা থেকে জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া নদীর পানি কাটাখালী পয়েন্টে বিপদ সীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৪ টি ইউনিয়নের ২শতাধিক গ্রাম ও পৌর সভার একাংশ বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েআছে গত ৫দিন থেকে। রাখালবুরুজ ইউনিয়নের ধর্মপুর বাজারে করতোয়া নদীর বড়দহ সেতুর সংযোগ সড়কে মারাত্মক ফাটল দেখা দেয়ায় গোবিন্দগঞ্জ-নাকাই-গাইবান্ধা সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে গতকাল আলিয়া(৮) ও বুলি(৫০)আরো দুজনের মৃত্যু হয়েছে, এনিয়ে গত ৫দিনে ৮ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ফাটল দেখা দিয়েছে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সুন্দরগঞ্জে বন্যার পানিতে পড়ে মিতু (১৫ মাস) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, গতকাল রোববার সকালে কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামের মাহাতাব হোসেনের বসতবাড়ি বন্যার পানিতে প্লাবিত থাকায় তারই কন্যা পানিতে পড়ে মারা যায়
আবুল হাসান সোহেল মাদারীপুর জেলা থেকে জানান, পদ্মায় পানি বেড়ে বিপদসীমার ৩৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মাদারীপুরের শিবচরে আড়িয়ালখাঁ নদের উপর নির্মাণাধীন ২য় সেতুর স্টকইয়ার্ড নদী ভাঙ্গনে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এবার আড়িয়াল নদেরও ভাঙনের ব্যাপকতা বেড়েছে। নদী ভাঙনে আক্রান্ত হয়েছে জেলার শিবচরের ৫ ইউনিয়ন।
নাজিম বকাউল, ফরিদপুর জেলা থেকে জানান, ফরিদপুরের পদ্মা নদীর বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। পানিতে তলিয়ে গেছে শতাধিক কাঁচা ও পাকা সড়ক। পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ফরিদপুর সদরের ১০ টি, চরভদ্রাসনে ১৭ এবং সদরপুরে ২২টিসহ মোট ৪৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় পাঁচদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। ফরিদপুরের তিনটি উপজেলায় ধান ও সবজিসহ মোট ১ হাজার ৪১০হেক্টর জমির ফসল এখনো পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে।
শিবচর (মাদারীপুর) সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুরের শিবচরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে পদ্মা নদী বেষ্ঠিত চরাঞ্চলের বন্যা ও নদী ভাঙ্গন কবলিত ১ স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
ইসলামপুর( জামালপুর ) থেকে উপজেলা সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের ইসলামপুর মলমগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে খিচুরী ও মেলান্দহে বন্যা কবলিত এলাকায় অসহায় মানুষের মাঝে চিড়া, মুড়ি, স্যালাইন, ম্যাচ, মোম ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
বি এম হান্নান, চাঁদপুর জেলা থেকে জানান, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলে উজানের পানির তীব্র স্রোতে ২শ’ ৮০ বসতঘর পদ্মা-মেঘনা নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় ত্রান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুর ৩টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি।



 

Show all comments
  • মুনতাহা আকাশ ২১ আগস্ট, ২০১৭, ১০:৩২ এএম says : 0
    অসহায় মানুষের পাশে দাডানো সবার দায়িত্ব, সামর্থ্যানুযায়ী সহযোগীতা করুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ