পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে নির্বাচনী বাতাস বইতে শুরু করায় অশিক্ষিত কিশোর সন্ত্রাসীরা সংঘবদ্ধ হচ্ছে। উজ্জীবীত হচ্ছে কথিত সন্ত্রাসীরা। আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র গুডবুকে সক্রিয় হওয়ার জন্য বিভিন্ন কলাকৌশলে তারা দৌড় ঝাপ শুরু করেছে। গোয়েন্দা সংস্থা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার উঠতি বয়সী অপরাধী এবং দাগী কথিত নিষ্ক্রিয় সন্ত্রাসীদের তালিকা তৈরী করে নজরদারি বাড়িয়েছে। অনেক নিষ্ক্রিয় সন্ত্রাসীরা এখন ফের সক্রিয়। কাছে টানছে টিনএজ সন্ত্রাসীদের। আর রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশ্রয়ে লালিত কিশোর সন্ত্রাসীরা অধিকাংশই অশিক্ষিত। যাদের পারিবারিক কোন ভাল ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। নির্বাচনের হাতিয়ার হিসেবে এরা এখন মার্কেটে। ডিমান্ড হাই। অথচ বস্তিতে থাকা কিম্বা গ্রাম থেকে উঠে আসা এসব অপরাধীদের সামান্যতম অক্ষর পর্যন্ত নেই। পোশাক পরিচ্ছদে বোঝারও উপায় নেই। অশিক্ষিত এসব চরমপন্থী বা সন্ত্রাসীদের মার্কসবাদ সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। কিন্তু এরা স্বশস্ত্র এবং ভয়ংকর। রাজপথে মার্কেটে অফিস আদালতে কিম্বা ভোট রাজনীতির মাঠে এরা সন্ত্রাসের বিষ্ফোরণ ঘটায়। আতংকিত করে তোলে নিরীহ জনপদ। অস্ত্রের মহড়ায় প্রকম্পিত করে তোলে নির্বাচনী মাঠ। মহানগর থেকে গ্রাম গ্রামান্তরে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ এদের কাছে জিম্মি। এদের বন্দীদশা থেকে মুক্তি চায় নিরীহ আমজনতা। র্যাব, পুলিশ সহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সাড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। ধরা পড়ছে অস্ত্র সহ এসব সন্ত্রাসীরা। তারপরও থেমে নেই এদের কার্যক্রম। সরকার প্রতিবছর এই সন্ত্রাস দমনে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। অনেক সন্ত্রাসীদের আত্মসমর্পনে বাধ্য করছে। গোয়েন্দা সংস্থা তালিকার পর তালিকা করছে। এই সন্ত্রাসীদের কাছে রাজনীতিক, ডাক্তার, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি কোন শ্রেনী পেশার মানুষ নিরাপদ নয়।
র্যাব, পুলিশ সহ অন্যান্য সংস্থারা দফায় দফায় এ্যাকশন নিচ্ছে চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের নির্মূলে। আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে রাজনৈতিক শেল্টার। তাই সুযোগ বুঝে কিশোর সন্ত্রাসীরা অস্ত্রবাজিতে মেতে উঠছে। গত ৬ মাসে বৃহত্তর খুলনায় অর্ধশতাধিক হত্যাকান্ড সহ বেআইনী অস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। কিশোর সন্ত্রাসীরা জড়িয়ে পড়ছে ধর্ষনের ঘটনায়। মামলাও হচ্ছে উল্লেখযোগ্য পরিমানে। যা উদ্বেগজনক।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে বর্তমানের হটকেক কিশোর সন্ত্রাসীদের মাঝে বামপন্থী মতাদর্শ খুঁজে পাওয়া যায় না। মূলত চাঁদাবাজি আর আধিপত্য বিস্তার এদের মূলমন্ত্র। পাশাপাশি মাদক সেবন ও বিক্রি তাদের অর্থ যোগানের অন্যতম মাধ্যম। এরা ভাড়াটিয়া কিলারও বটে। খুলনা জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফুলতলা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মিঠু হত্যাকান্ডে চরমপন্থী কিশোর সন্ত্রাসীরাই অংশ নেয়। খুলনায় একাধিক যুবলীগ নেতা ও রায়েরমহল মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হত্যাকান্ডে কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছে কিশোর সন্ত্রাসীরা।
সূত্রমতে, খুলনা জেলায় চরমপন্থী এবং অস্ত্রধারীর সংখ্যা প্রায় ৩ শতাধিক। আর বৃহত্তর খুলনায় এর সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক । চরমপন্থী বলে স্বীকৃত উল্লেখযোগ্য সংগঠনগুলো হচ্ছে, পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি (এম-এল), নিউ বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টি (মৃণাল), পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি (জনযুদ্ধ) ও কৃষক সংগ্রাম পরিষদ। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সূত্রমতে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি (জনযুদ্ধ) বুরুজ মোল্লা, তৌহিদ শেখ, তারিকুল ইসলাম বারকী মোড়ল, জামাল হোসেন, জহির শিকদার, নজরুল ইসলাম, রাজু মোল্লা, মুরাদ শেখ অশিক্ষিত এবং সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন তৃতীয় শ্রেনী, কাজল অষ্টম শ্রেনী পাশ বলে দাবি করেছে। ৯৯ সালে অত্মসমার্পন শেষে আনসারের চাকরি নিয়ে পালিয়ে যাওয়া লালন শেখ, মুসা মোল্লা, মুজাম গাজী, অধিকাংশের অক্ষর জ্ঞান নেই। নিউ বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির এখনকার প্রধান নিহত শৈলন্দ্রনাথ বিশ্বাসের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে পুলিশের কোন রেকর্ড নেই। পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি ( জনযুদ্ধ)’র সাবেক প্রধান হারুন শেখ অশিক্ষিত বলে পুলিশের নথিভূক্ত হয়েছে। গত দু’মাস র্যাব পুলিশের অভিযানে সন্ত্রাসীরা গা ঢাকা দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা র্যাবের হুশিয়ারী উচ্চারনের কারনে অনেক রাজনৈতিক নেতা সন্ত্রাসীদের শেল্টার দিতে সাহস পাচ্ছে না।
অপরদিকে, গডফাদাররা চুপসে গেছে। টেন্ডারবাজিতে ইতোপূর্বে চরমপন্থী ও অস্ত্রধারীদের অংশগ্রহণ ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি হলেও সেখানে প্যাটার্নটি পাল্টিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক টেন্ডারবাজি গুলোতে ছাত্র যুবসংগঠনের উঠতি নব্য ক্যাডারদের শোডাউন পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে সুযোগ পেলেই চরমপন্থীরা এসব সেক্টেরে আগের মত মাথাচাড়া দিতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি (এমএল-জনযুদ্ধ) কমরেড মাও-সে-তুঙের ছবি সম্বলিত নানা লিফলেট প্রকাশ করে। তাতে মাও-সে-তুঙের উক্তি ‘সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া সর্বহারা শ্রেনী, জনগণ, কমিউনিষ্ট পার্টি কেহই স্থান পাবেনা এবং বিপ্লবে জয়লাভ করা সম্ভব হবে না’। লিফলেটে এক অংশে বলা হয়েছে আজকের দিনে জনগণের মুক্তি একমাত্র পথ হলো সশস্ত্র সংগ্রাম। শাসক শ্রেনী কর্তৃক আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া প্রতিটি হত্যার বদলা আগে নিতে হবে পাল্টা হত্যা দিয়ে। তাহলেই আমরা পারবো বিপ্লবী জনগনের মধ্যে থেকে আতংক কাটিয়ে তাদের বিপ্লবী চেতনার দার উম্মোচন করতে। শ্রেনীর শত্রু খতমের মধ্যে দিয়ে গ্রামে, গঞ্জ, শহরে বন্দরে জনগনরে গেরিলা বাহিনী গেরিলা যুদ্ধকে জনযুদ্ধে স¤প্রসারিত করার মধ্যে দিয়ে জনগনতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করি। অপরদিকে সা¤প্রতিক সময়ে র্যাব-পুলিশের সাথে চরমপন্থীদের বন্দুক যুদ্ধে একাধিক জলদস্যু, সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রধারী নিহত হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।