পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বন্যার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে দেশের উত্তর ও উত্তরপূর্বাঞ্চলের প্রায় সাড়ে তিন হাজার স্কুল কলেজ। বন্যাদুর্গত এলাকার এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনটি তলিয়ে গেছে পানিতে। আবার কোনটিকে বানানো হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম। স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন চলতি বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর পরীক্ষার্থীরা। বেশকিছু স্কুল বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আসবাবপত্র, খাতাপত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। বন্যা কবলিত জেলাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তলিয়ে যাওয়া ছাড়াও দুর্গতদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের তথ্য মতে ২২ জেলার তিন হাজার ৫২৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম। বিশেষ করে কিছু জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল-মাদরাসায় অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার্থীরা। স্কুল বন্ধ থাকায় এসব পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আগামী ১৯ নভেম্বর পিএসসি সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়ে ২৬ নভেম্বর শেষ হওয়ার ঘোষণা দেয়া হলেও তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, পানিবন্দি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন পরীক্ষা নেয়া যায়নি। আগস্টে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা নেয়ার কথা। বন্যা পরিস্থিতি চলমান থাকায় সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোতে এ পরীক্ষা পিছিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
তথ্য মতে, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের প্রায় ১ হাজার ৩৫৯টি প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামে ৬৮৪টি, লালমনিরহাটে ২০৩টি, গাইবান্ধায় ১৭৮টি, রংপুরের তিন উপজেলায় ১৫৬টি, দিনাজপুরে ১৩২টি ও নীলফামারীতে ১০টি স্কুল পানিবন্দি রয়েছে। বিভিন্ন জেলায় এ বিভাগের শতাধিক স্কুলের কোনটির মাঠ, দেয়াল বা কক্ষের মেঝে নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। এর আগে বন্যায় সিরাজগঞ্জ জেলার ২০০টি ও জামালপুরে ১৬১টি স্কুল পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়া মানিকগঞ্জ, চাঁদপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, বান্দরবান এবং রাঙ্গামাটিতেও কিছু প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে বন্যার পানি নেমে গেলে স্কুল-কলেজগুলো মেরামত করে বাড়তি ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহম্মদ বলেন, প্রতিটা জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সে জেলার সমস্যা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কারও বই নষ্ট হয়ে গেলে তাদের বই সরবরাহ করা হবে। অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার দরকার হলে তা নেওয়া হবে।
এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে জামালপুর জেলায়। সেখানেই বন্যায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির চিত্র উঠে এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে। জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর বলেন, বন্যার পানি ওঠায় এ পর্যন্ত জেলার ৯১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বন্যা শেষ হলে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম বলছেন, বন্যার পানি কমতে থাকায় বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমছে। তিনি বলেন, পানি ওঠার কারণে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়নি, বন্যা দূর্গতরা আশ্রয় নেওয়ায় ৩৯৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল এতদিন। এখন পানি কিছুটা কমছে, ২০০ এর মতো প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ। আমরা অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করে এ ধাক্কাটা সামলে নেব। গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল জানান, বন্যার পানি ওঠায় তার জেলার ২১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ আছে। মোট ৯০টি আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক আব্দুর রউফ বলেন, প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পুরোপুরি পাওয়া যায়নি। পানি নেমে গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হবে। সেপ্টেম্বরে এ বাবদ অর্থ বরাদ্দ ছাড় দেয়া হবে। তারপর নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। বন্যার কারণে সমাপনী পরীক্ষা পিছিয়ে যেতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) বিদ্যালয় শাখার পরিচালক এলিয়াস হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা পানিবন্দি হওয়ায় প্রতিদিন ক্ষতিগ্রস্থ বিদ্যালয়ের তালিকা আসছে। তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে তালিকার কাজ চলছে। পানি নেমে গেলে বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।