Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীন জাপানের ১৩ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ প্রত্যাশা ফিলিপাইনের

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

একটি দেশের উন্নয়নের জন্য বিদ্যুতের বিকল্প নেই। এ কারণেই অর্থনৈতিক স¤প্রসারণ গতি আরো ত্বরান্বিত করতে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৪৩ গিগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে ফিলিপাইন। লক্ষ্যপূরণে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ পেতে চীন, জাপান, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি। এর মধ্যে চীন ও জাপান থেকে ১৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে ফিলিপাইন। ফিলিপাইনের জ্বালানি-বিষয়কমন্ত্রী আলফনসো কুজি জানিয়েছেন, দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে স্থিতিশীলতা আনতে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৪৩ গিগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। এরই মধ্যে বিভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। সে অনুযায়ী জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত প্রকল্পগুলো আগামী ৩০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হবে। এক সাক্ষাতকারে এ জ্বালানিমন্ত্রী আরো বলেন, ফিলিপাইনে বিনিয়োগে অনেকেই আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা এখন বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থলগ্নির বিষয়টা সহজ করতে যাচ্ছি। সব দেশ, সব দলের জন্য আমাদের দেশে বিনিয়োগের দরজা খোলা রয়েছে। বিএমআই রিসার্চের তথ্যানুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়নে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির দেশ চীন ও জাপান। এ অঞ্চলে নির্মাণাধীন বা পরিকল্পিত প্রায় ২১টি বিদ্যুৎ প্রকল্পে ২ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার অর্থায়ন করেছে জাপান। চীনের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ৩ হাজার ২৮০ কোটি ডলার। এ অবস্থায় দেশের বিদ্যুৎ প্রকল্প ও অফশোর গ্যাস প্রকল্প উন্নয়নের জন্য প্রেসিডেন্ট দুতার্ত গত বছর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই চীনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে দেশের অর্থনীতির দুই-তৃতীয়াংশ জোগানদাতা লোজন দ্বীপের উন্নয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০৪০ সাল নাগাদ সিঙ্গাপুরের উৎপাদন সক্ষমতার চেয়েও তিন গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রয়োজন হবে এখানে। এখানে বিমানবন্দর, রেলওয়ে, ব্রিজ নির্মাণ করা হলে তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অনেকটাই সহায়ক হবে। আগামী বছরের মধ্যে ১৯৫ কোটি ডলার ব্যয়ে একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে ফিলিপাইনে। আশা করা হচ্ছে, এখান থেকে ৩ দশমিক ৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এ টার্মিনাল থেকে গ্যাস প্লান্টগুলোয় গ্যাস সরবরাহ করা হবে। রাজধানী ম্যানিলার দক্ষিণের প্রদেশ বাতানগ্যাসে এ এলএনজি টার্মিনালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এর ধারণ সক্ষমতা ধরা হয়েছে ৫০ লাখ মেট্রিক টন। ২০২১ সালে প্রকল্পটি চালু হবে। এছাড়া টার্মিনালটিতে থাকবে একটি বিদ্যুৎ প্লান্ট। এর বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ধরা হয়েছে ২০০ থেকে ৮০০ মেগাওয়াট। ক্রমান্বয়ে এর বার্ষিক ধারণ সক্ষমতা বেড়ে এক কোটি টন হবে। মূলত ফিলিপাইন এশিয়ার মধ্যে এলএনজি ব্যবসায় কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠার লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী। টোকিও গ্যাস কোম্পানি, ওসাকা গ্যাস কোম্পানি ও মিতসুইকে জাপান সরকার ফিলিপাইনের এলএনজি টার্মিনালটিতে কাজ করার জন্য মনোনীত করেছে বলে জানা গেছে। টোকিও গ্যাস ও ওসাকা গ্যাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনের বিদ্যুৎ প্রকল্পে এ মুহূর্তে বিনিয়োগের পরিকল্পনা না থাকলেও সুযোগ অনুসন্ধান চলছে। অবশ্য মিতসুইকে সঙ্গে নিয়ে এ দুই কোম্পানি গত জুনে ফিলিপাইনের এলএনজি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে একটি চুক্তি সই করে। তবে এ বিষয়ে মিতসুইয়ের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। এদিকে ফিলিপাইনের জ্বালানি খাতে ৬০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। ফিলিপাইনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন জীবাশ্ম জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের জন্য চীনা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। এলএনজি খাতে বিনিয়োগের জন্য চলতি বছরই অংশীদার নির্বাচনের বিষয়টি চূড়ান্ত করবে ফিলিপাইন। চীন বা জাপান এদের মধ্যে একজনকে বেছে নেয়া হবে। লোজন দ্বীপে রিজার্ভের পরিমাণ কমে আসায় দক্ষিণ চীন সাগরে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের পরিকল্পনা করছে ফিলিপাইন। দেশটির ধারণা, এতে চীনের থেকে কৌশলগতভাবে জয়ী হবে দেশটি। কারণ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনও আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। পিএক্সপি এনার্জি করপোরেশনের নেতৃত্বে কনসোর্টিয়ামকে দক্ষিণ চীন সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দিয়েছে ফিলিপাইন সরকার। এ উত্তোলন কার্যক্রমের জন্য যে জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে, সেখানে রেড ব্যাংক স্থানটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; যার মালিকানা ফিলিপাইন ও চীন উভয়ই দাবি করে থাকে। এখানে যৌথ উত্তোলন কাজ শুরু হলে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বøুমবার্গ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিনিয়োগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ