পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719602850](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চারপাশের ৮টি নদী ও গঙ্গা-পদ্মায় পানি বাড়ছে : ব্রহ্মপুত্র যমুনায় কমছে, তবে বিপদসীমার ওপরে আগামী দুই সপ্তাহে হিমালয় চীন তিব্বত নেপাল ভুটান ও ভারতে ফের অতিবর্ষণ হলেই দেশে বন্যা হতে পারে আরো ভয়াবহ : উত্তর মধ্য দক্ষিণ মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক ভাঙন : খাদ্য পানি ওষুধ সঙ্কট চরমে
ভারত থেকে নেমে আসা পানি পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করায় দেশের বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক আকার ধারণ করছে। দেশের অন্যতম প্রধান ও উত্তরাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, ধরলা, আত্রাইসহ অন্যান্য প্রধান নদ-নদীতে পানি বিপদ সীমার ওপর তীব্রবেগে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ভেঙে পড়ছে অসংখ্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বাঁধ মেরামত ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সময়ের সাথে বন্যার প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানী ঢাকাতেও বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে আশপাশের নদ-নদীগুলোতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা ও চারপাশের ৮টি নদী বিপদসীমার ৩০ থেকে ১২০ সেমি নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে বুড়িগঙ্গা নদী ১২০ সেমি নিচে, ডেমরায় বালু নদী ৫৫ সেমি নিচে, নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী ৩০ সেমি নিচে রয়েছে।
গতকাল বিকাল পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সূত্রে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যায় ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যা অর্ধকোটি ছাড়িয়ে গেছে। বন্যার পানিতে বসতবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবার-পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি, অন্যের উঁচু জমি ও বাঁধে আশ্রয় নিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন।। এদের অধিকাংশই রয়েছে খোলা আকাশের নিচে। রাতে মানুষ তাদের গবাদি পশু নিয়ে একই স্থানে গাদাগাদি করে কোন রকমে রাত পার করছে । খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানী, ও গো-খাদ্যের চরম সঙ্কট। দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগব্যাধি। সরকারি ত্রাণ অপ্রতুল হওয়ায় সবার ভাগ্যে জুটছেনা ত্রাণের চাল। ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে কোন ট্রলার বা নৌকা দেখলে ত্রাণে আশার ছুটছে লাখ লাখ মানুষ। কিছু খাবার, বিপরীতে কতজন হাত পেতে বসে আছে। ফলে দীর্ঘসময় উপোষ আর পানির মধ্যে একটু ত্রাণের আশায় দাড়িয়ে থাকলেও ফিরতে হয় খালি হাতে। এরকমই হাহাকারে দিন কাটছে বন্যার্ত মানুষগুলোর। ক্ষুধার্ত মুখগুলোর দিকে চোখ তুলে তাকানো যাচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন যাবৎ ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সমাপনী পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল না করার আশঙ্কা করছেন অভিভাবকগন। বন্যায় তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। এসব মানুষের দুঃখ কষ্ট নিয়ে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য নিয়ে রিপোর্ট:
শফিউল আলম চট্টগ্রাম থেকে জানান, দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি ঘটছে। ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে আশপাশের নদ-নদীগুলোতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা ও চারপাশের ৮টি নদী বিপদসীমার ৩০ থেকে ১২০ সেমি নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল। এরমধ্যে বুড়িগঙ্গা নদী ১২০ সেমি নিচে, ডেমরায় বালু নদী ৫৫ সেমি নিচে, নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী ৩০ সেমি নিচে রয়েছে। উত্তরের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ ও অন্যান্য নদী এবং গঙ্গা-পদ্মার পানি হু হু করে নামছে ভাটির দিকে। গঙ্গা-পদ্মার উজানে নেপাল ও ভারতের বিহার থেকে ঢলের পানির চাপে অন্যতম প্রধান এ অববাহিকায় পানি বাড়ছে প্রতিটি পয়েন্টে। গতকাল (বৃহস্পতিবার)সহ গত দু’দিনে উজানের ঢল হ্রাস পাওয়ায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদে পানি কমছে। তবে বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার উপরে রয়েছে। বিশেষজ্ঞ সূত্রগুলো ইনকিলাবকে জানায়, হিমালয় পাদদেশ, চীন তিব্বত, নেপাল, ভূটান ও ভারতে মৌসুমি বায়ু এখনো সক্রিয় রয়েছে। এ কারণে আগামী দুই বা তিন সপ্তহের মধ্যে যদি ফের সেসব অঞ্চলে অতিবর্ষণ হয় তাহলে বাংলাদেশে উজানের ঢল-বান নেমে এসে আবারও বন্যা পরিস্থিতি মোড় নিতে পারে আরো ভয়াবহ আকারে। তাছাড়া আগামী ২১ আগস্ট অমাবস্যার ভরা ‘জো’ বা জোয়ারের সময়। আসন্ন অমাবস্যায় ও তার আগে-পরেও বঙ্গোপসাগর-উপকূলভাগ ফুলে-ফুঁসে উঠতে পারে। তদুপরি সাগরে এমাসে একটি মৌসুমি নিম্নচাপ সৃষ্টির পূর্বাভাস যদি মিলে যায় সে ক্ষেত্রে বঙ্গোপসাগর থাকবে উত্তাল-অশান্ত। এহেন বৈরী পরিস্থিতির শঙ্কার কারণগুলো থেকে যাবে আগস্টের বাদবাকি সময়জুড়ে এমনকি সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। এর পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর জনপদের একাংশে বন্যার সাময়িক উন্নতি নিয়ে আপাত স্বস্তি পরবর্তীতে অস্বস্তিরও কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, যেখানে বন্যা-জনিত দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো জরাজীর্ণ ও দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এদিকে দেশের উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে নদ-নদী পাড়ে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এসব এলাকায় মূলত ভাঙাচোরা বাঁধের কারণে একের পর এক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে গতকাল পর্যন্ত ৬টি বিভাগের ২৬টি জেলায় বন্যার্ত ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৫০ লাখ। বন্যায় এ যাবত অন্তত দেড় দুই লাখ হেক্টর জমির ফসলহানি হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তে দেশের নদ-নদীর ৯০টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ১৯টি নদ-নদী ২৯টি পয়েন্টে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে ছিল। পানি বৃদ্ধি ৪৮টি ও হ্রাস পায় ৪০টি পয়েন্টে, অপরিবর্তিত থাকে ২টিতে।
আশঙ্কার আরও কারণ-
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, হিমালয়ান অঞ্চলে চীন তিব্বত, নেপাল বিশেষত ভারতে মৌসুমি বায়ু-তাড়িত অতিবৃষ্টির ঘনঘটা অপসারিত হয়নি; বরং সক্রিয় রয়েছে। এ অবস্থায় আগামী দু’তিন সপ্তাহে যদি চীন, নেপাল, ভূটান থেকে শুরু করে ভারতের বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম, অরুণাচল, মেঘালয়সহ ব্যাপক অঞ্চলে বর্ষণের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায় তাহলে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি ঘটতে পারে। এদিকে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের মূল উৎস বা অববাহিকা মূলত ভারতে হলেও সেখানকার উজানের প্রবাহ সম্পর্কে সঠিক সময়ে পূর্বাভাস মিলছে না। ভারতের পক্ষ থেকে মাত্র একদিন বা ৩ দিন আগে এ সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত দেয়া হয়ে থাকে। ৪টি নদ-নদীর উজান অববাহিকার তাও মাত্র ৮টি পয়েন্টের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে- এক. ব্রহ্মপুত্র-যমুনার উজানভাগের অববাহিকায় ৪টি পয়েন্ট, উত্তর-পূর্ব ভারতের আসামের গুয়াহাটি, পান্ডু গোয়ালপাড়া ও ডুবড়ি। দুই. গঙ্গা অববাহিকায় ২টি পয়েন্ট, উজানের ফারাক্কা এবং সাইফগঞ্জ (বিহার)। তিন. সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উজানে বরাকের শিলচর। এবং চার. তিস্তার উজান ভাগের একটি উজান পয়েন্টের। ভারতের পক্ষ থেকে উজানের অববাহিকার নদ-নদীর সমতল বা প্রবাহের কারণে বাংলাদেশ বন্যা কবলিত হওয়া সম্পর্কে কোন ধরনের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রদান করা হচ্ছে না। অথচ পৃথিবীর অধিকাংশ প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত বিনিময় ও দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস আদান-প্রদানের ব্যবস্থা স্বাভাবিক নিয়মেই প্রচলিত আছে।
সর্বশেষ নদ-নদী পরিস্থিতি
দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের প্রবাহ ও বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে গতকাল বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, গঙ্গা-পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং মেঘনা এই তিনটি প্রধান অববাহিকার মধ্যে গঙ্গা-পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের উজানের ভারতীয় অংশে এবং মেঘনা অববাহিকার ভারতীয় ও বাংলাদেশ অংশে পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের ভারতীয় অংশের গোহাটিতে ৪৩ সেমি, পান্ডুতে ৩৪ সেমি, গোয়ালপাড়ায় ২৬ সেমি এবং ধুবরীতে ১৪ সেমি পানির সমতল হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি সমতল নুনখাওয়া, চিলমারী, বাহাদুরাবাদ এবং সারিয়াকান্দি পয়েন্টে হ্রাস পেয়েছে। অপরদিকে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৪ সেমি বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপর অপরিবর্তিত থাকে। দেশের উত্তরাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাবে। তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার অববাহিকার নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। ফলে এ অঞ্চলে বন্যার উন্নতি অব্যাহত থাকবে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি রয়েছে। মেঘনা অববাহিকায় বন্যার আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় উন্নতি অব্যাহত থাকবে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনার ভারতীয় অংশে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টায় গড়ে ৩০ সেমি পানি হ্রাস পেতে পারে। বাংলাদেশ অংশে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার বিভিন্ন্ পয়েন্টে আগামী ৭২ ঘণ্টায় পানি হ্রাস অব্যাহত থাকবে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টায়ও অব্যাহত থাকবে। তবে এখানে পানি বৃদ্ধির হার আগের তুলনায় কমে এসেছে। মেঘনা অববাহিকায় পানি আগামী ৪৮ ঘন্টায় হ্রাস অব্যাহত থাকবে। দেশের উত্তরাঞ্চলের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি বিশেষত কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়ায় উন্নতির দিকে রয়েছে। অপরদিকে সিরাজগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চল তথা ঢাকার অনতিদূরে মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মুঞ্জিগঞ্জ, শরীয়তপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে।
এদিকে ঢাকার আশপাশের নদ-নদীসমূহের মধ্যে উজানের পানি আসার চাপের কারণে ভাটিতে পানি বাড়ছে। এতে করে রাজধানী ঢাকার আশপাশ বন্যা কবলিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। গতকাল সর্বশেষ নদীপ্রবাহের তথ্যে ৮টি নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। তবে অবস্থান ছিল বিপদসীমার নিচে। এরমধ্যে ঢাকার বুড়িগঙ্গা ১২০ সেমি, শীতলক্ষ্যা ৩০ সেমি, বালু ৫৫ সেমি, তুরাগ ৭২ সেমি, টঙ্গী-খাল ৫৬ সেমি। তবে কালিগঙ্গা নদীতে পানি বেড়ে বিপদসীমার ১২ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর ধলেশ্বরী ৪৮ সেমি, বংশী নদী ১৭৪ সেমি নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল। ঢাকা বিভাগের অন্যতম নদী ধলেশ্বরী মধ্যাঞ্চলের টাঙ্গাইলের এলাসিনঘাটে পানি আরও বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ১০৯ সেমি উপরে এবং দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে তিতাস নদীর পানি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৫ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
প্রধান নদ-নদীর অবস্থা
প্রধান নদ-নদীর পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তে বিপদসীমার উপরে এবং নিচে কাছাকাছি অবস্থানে ছিল- অন্যতম প্রধান অববাহিকায় ব্রহ্মপুত্র নদ কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী পয়েন্টে গতকাল পানি হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৫৯ সেমি উপর দিয়ে, তবে গতকাল নুনখাওয়া পয়েন্টে আরও কমে গিয়ে ২১ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যমুনা নদের পানি ৫টি পয়েন্টে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। ফলে বাহাদুরাবাদে বিপদসীমার ১১৮ সেমি উপরে, সারিয়াকান্দিতে ১১৯ সেমি উপরে, কাজীপুরে ১৫০ সেমি উপরে, সিরাজগঞ্জে ১৫০ সেমি উপরে এবং ভাটিতে আরিচায় কিছুটা বেড়ে ৭২ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পদ্মা নদী গতকালও তিনটি পয়েন্টেই পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এরমধ্যে গোয়ালন্দে ৯৯ সেমি উপরে, ভাগ্যকুলে ৩৩ সেমি উপরে এবং সুরেশ্বরে ১৬ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পদ্মার উজানে গঙ্গানদী পাংখা পয়েন্টে পানি আরও বেড়ে বিপদসীমার ১৩৩ সেমি নীচে, রাজশাহীতে ১৩২ সেমি নীচে এবং হার্ডিজব্রীজ পয়েন্টে ৬৪ সেমি নীচে এসে গেছে।
উত্তর জনপদে ধরলা নদীর পানি আরো হ্রাস পেয়ে কুড়িগ্রামে বিপদসীমার ৪৯ সেমি উপরে, বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরীর পানি সামান্য হ্রাস পেয়ে ১১৭ সেমি উপর দিয়ে, ঘাগট গাইবান্ধায় ৬৮ সেমি উপরে ছিল। অন্যদকে মেঘনা অববাহিকায় বৃহত্তর সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদীর পানি আরো হ্রাস পেয়েছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে। বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহ ছিল- সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৭৮ সেমি, সিলেটে ১৬ সেমি, সুনামগঞ্জে ৩২ সেমি এবং কুশিয়ারা নদী অমলশীদে ৫০ সেমি, শেওলায় ৫৩ সেমি, শেরপুর-সিলেটে এক সেমি উপরে। পুরাতন সুরমা দিরাইতে কিছুটা বেড়ে বিপদসীমার ২৯ সেমি উপরে এবং নেত্রকোণায় কংস নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে, তবে বিপদসীমার ১১৮ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীর মোহনপুরে ভীমনামক স্থানে বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকা নতুন করে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পাঁচদিনেও ভাঙন স্থান মেরামত করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। বন্যা কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকের মধ্যে রয়েছেন।এদিকে পাঁচদিনের প্রবল স্রোতের তোড়ে গতকাল পর্যন্ত ২ হাজার ৮শ’ ৬৬ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ত্রান ও সহযোগিতা পায়নি বলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন
মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে জানান, বগুড়ায় বন্যাদূর্গত এলাকায় গবাদী পশুর খাদ্য সংকটের মড়ক দেখা দিয়েছে। পিপিআর সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু-ছাগল-ভেড়া মারা যাচ্ছে দূর্গত এলাকায়। শত শত গরু ছাগল ভেড়া খোলা আকাশের নীচে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধে বৃষ্টিতে ভেজার পাশাপাশি অপুষ্টির কারণে মারা যাচ্ছে গরু ভেড়াসহ অনেক পশু।
গাইবান্ধা জেলা সংবাদদতা জানান, গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপদসীমার ৯০ সে.মি., ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৭৫ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ৫৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে। যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পূনর্ভবা নদীর পানি ২৪ সেমি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭ টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলায় প্রায় ১হাজার হেক্টর রোপা আমন ও আউশ ধান ও ৫৩ হেক্টর জমির অন্যান্য ফসল জলামগ্ন হয়ে পড়েছে। সড়কে পানি উঠায় শেরপুরের সাথে উত্তরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ।
শেরপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, শেরপুর জেলার পুরাতন ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় শেরপুর সদর উপজেলার সার্বিক বন্যাপরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। সদর উপজেলার ৫০ গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে এসব এলাকার রোপা আমন ও সবজী ক্ষেত তলিয়ে যাচ্ছে। যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গত দুইদিনে পানিতে ডুবে এক মাদ্রাসার ছাত্র ও এক শিশুসহ বন্যার পানিতে ডুবে তিনজন মারা গেছে।
শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কুড়িগ্রাম ফেরীঘাট পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৬ সে.মি এবং চিলমারী পয়েন্টে ব্রক্ষপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৬৭ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনদুর্ভোগ। ত্রাণ অপ্রতুল হওয়ায় দুর্গম অঞ্চলে পৌঁছেনি খাদ্য সহায়তা। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়া অসহায় মানুষদের দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার কুড়িগ্রামে আসছেন। বন্যার পানিতে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ ৪৪কিঃ মিঃ। ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের সংখ্যা ৬০৭টি। কাঁচা ও পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১৪২ দশমিক ৫০ কিঃ মিটার। নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে ২হাজার ৬৯৪টি বাড়ি।
সৈয়দ শামীম শিরাজী সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি শতবছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে বিপদসীমার ১৬৫ সে:মি: উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার মোট ৭৮ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের ৭-৮ কিলোমিটার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে । ফলে জেলার নদীর তীরবর্তী এলাকার দূর্গোম চরঞ্চলের মানুষেরা অবর্নীয় দূর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। তাদের দু:খ দুরদর্শার যেন অন্ত নেই। সেই সঙ্গে সিরাজগঞ্জবাসী বাঁধ ভাঙ্গার আতংঙ্কে নির্ঘূম রাত কাটাচ্ছে। বাঁধ ভাঙ্গার ভয়ে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে ভাঙ্গন কবলিত মানুষ নির্ঘূম রাত কাটাচ্ছে।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, নওগাঁয় আত্রাই নদীর মহাদেবপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৬ সেঃমিঃ ও ছোট যমুনার শহরের লিটন ব্রীজ পয়েন্টে ৮০ সেঃমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মান্দা, আত্রাই ও নওগাঁ সদর নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৫০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে । গতকাল ভোর রাতে ছোট যমুনা নদী ও রাতে জেলার পত্মীতলা উপজেলার নজিপুর নামক স্থানে আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে কয়েকটি ইউনিয়নের বিস্তৃীর্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদরের সাথে আত্রাই উপজেলার ও নাটোর জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে অসহায় পরিবার গুলো বিশ্ব বাঁধে, স্কুলে ও উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোন সরকারী সাহায্য বা ত্রাণ তাদের কাছে না পৌছায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সরিষাবাড়ী (জামালপুর ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের স্থল এলাকায় তারাকান্দি-বঙ্গবন্ধু সেতু সড়ক গত বুধবার গভীর রাতে ভেঙে গেছে। এতে রাজধানীসহ উত্তরাঞ্চলে যাতায়াতের সব ধরনের যানবাহন ও যমুনা সার কারখানার সার পরিবহণ এ সড়কে বন্ধ হয়ে গেছে। ২০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ৪৮৮৫ হেক্টর রোপা আমন, ১২৫ হেক্টর বীজতলা ও ৪২৫ হেক্টর সবজিসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, নাটোরের সিংড়ায় আত্রাই নদীর পানি আরো ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিনই পানি বাড়াছে একটু একটু করে। প্লাবিত এলাকায় এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ তৎপরতা শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। তাদের দাবি, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন বিশুদ্ধ পানি ও সাপের ইনজেকশন। হুমকির মুখে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মার গতকাল বিপদসীমার ৯২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের ফাজেলখার ডাঙ্গী গ্রামের ভাঙন কবলিত ২২ পরিবারের মাঝে ত্রাণ প্যাকেজ বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক ।
ফুলছড়ি উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বিপদসীমার ৮১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়। পানিবন্দি হয়ে আছেন লক্ষাধিক মানুষ। এসব মানুষ পানিবন্দি থাকলেও তারা সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে তেমন কোনও ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে তাদের অভিযোগ রয়েছে। খাদ্য অভাবে গবাদি পশু গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বানভাসী মানুষরা। বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল ।
গোবিন্দগঞ্জ(গাইবান্ধ)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া নদীর পানি কাটাখালী পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পৌরসভার পশ্চিম অংশ সহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে বন্যার পানি প্রবেশ করে একের পর এক গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। ৬০টি বিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং ষান্মাসিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ১২হাজার ৫৮৫ হেক্টর রোপা আমন ও ২হাজার ৪৫ হেক্টর সবজিসহ বিভিন্ন ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
ঈশ^রগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঈশ^রগঞ্জে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পানি কমার পর বিদ্যালয়টির স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বিভাগ।
জয়পুরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, জয়পুরহাটে তুলসীগঙ্গা নদীর পানি বিপদ সীমার ৩২সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ধান ইক্ষু, শাক-সবজি সহ রবি ফসল। প্রায় ৫শ’ মিটার রাস্তা এখনো হাঁটু পানির নীচে।
দিনাজপুর অফিস জানায়, দিনাজপুরে কিছু কিছু এলাকায় পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি ধীরে ধীরে কমছে।তবে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য রোববার দিনাজপুরে আসছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াও আজ শুক্রবার আসছেন। এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কৃষি। বাড়ী ঘর ধ্বসে পড়েছে ব্যাপকহারে
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানির তোড়ে মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মা বেষ্টিত জনবিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের কাঠালবাড়ি ও চরজানাজাতসহ ৪ ইউনিয়নে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
শিবচর (মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, শিবচরে বন্যা পরিস্থির অবনতি হয়েছে। পদ্মা নদীতে পানি পানি বেড়েছে ৮ সে.মি.। পানির চাপে দিয়েছে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন । নদী ভাঙ্গনে হুমকিতে রয়েছে এ দুই ইউনিয়নের একাধিক স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ ১টি ইউনিয়ন পরিষদসহ শত শত ঘর বাড়ি। বন্যা আক্রান্তরা মানবেতর জীবন করছে।
সিলেট জানায়, সিলেটে প্রধান দুই নদীর সবকটি পয়েন্টে এখনও বিপদ সীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্ভোগ বাড়ছে বন্যাকবলিত মানুষের। ত্রাণের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে এসব এলাকার মানুষ।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, যমুনা নদীর চরাঞ্চলে বসবাসরত দরিদ্র পরিবারগুলো বন্যার কবলে পড়ে সহায় সম্বল হারিয়ে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছিল। ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে এসব মানুষ। স্থানীয় গতকাল ‘দৈনিক প্রগতির আলো’ পত্রিকার উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
নুরুল আবছার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে জানান, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শতবর্ষী হযরত কাঙ্গালী শাহ (রহঃ) শাহী জামে মসজিদ ও মাজার এবং তৎ সংলগ্ন কবরস্থান নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে মসজিদের সীমানা প্রাচীরসহ অর্ধ শতাধিক কবর । স্থানীয়দের অভিযোগ ১৯৯৩ সালে কর্ণফুলীর শাখা নদী কাউখালী নদীর মোহনায় অপরিকল্পিতভাবে একটি ¯øুইস গেইট নির্মাণের কারণেই এমন ভাঙন দেখা দিচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।