পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংশোধনীতে সংবিধানের সীমা লঙ্ঘিত ও মৌলিক কাঠামো পরিবর্তিত হলে আদালত তা বাতিল করার ক্ষমতা রাখে
ইনকিলাব ডেস্ক : পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, সংবিধান ও সংশোধনীর মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে সংশোধনীটি সংবিধানের অংশ হওয়ার আগে তাকে কিছু পরীক্ষা পেরিয়ে আসতে হবে। কেননা সেটি সরাসরি জনগণের দ্বারা পাস হয় নি। পরীক্ষার মধ্যে রয়েছেঃ একে বাধ্যতামূলক পদ্ধতিগত চাহিদা কঠোরভাবে মেনে আনা হয়েছে কিনা, সংবিধিবদ্ধ আইনের ওপর প্রতারণা কিংবা জালিয়াতি করে এটি আনা হয়েছে কিনা, এটি সংবিধানে বিদ্ধমান প্রবিধানের পরিপন্থী হয় কিনা, সেগুলোর সঙ্গে সহাবস্থানে থেকে সংবিধানকে অকার্যকর করে তোলে কিনা এবং মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনে বারের মতবাদ গ্রহণ করা হলে সংশোধনীটি যেন সংবিধানের কোন মৌলিক কাঠামো বিনষ্ট না করে। সংবিধানিক ক্ষমতা অর্থাৎ সংবিধান তৈরি করার ক্ষমতা সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয়, এ ক্ষমতা একমাত্র জনগণের। এটাই মূল ক্ষমতা। সংবিধান তৈরির পর তা সংশোধনের জন্য জনগণ এই ক্ষমতা সংবিধানকে দেয়। তবে বেশ কিছু বিশেষ পদ্ধতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে তাকে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হয়। কয়েকটি দেশের সংবিধান অন্য যেকোন সংবিধির মত আইনসভার সাধারন পদ্ধতি অনুসরণ করে সংশোধন করা যায়। এমন কি সাংবিধানিক ক্ষমতা সংসদের কাছে দেয়া হলেও এ ক্ষমতটি বুৎপন্ন বা অমৌলিক। অবিমিশ্র সত্য এই যে, অমৌলিক সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে আনীত সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে স্বংক্রিয়ভাবে অদায়িতা পাবে না। এ বিবেচনায় সংশোধনীটি আইন কিনা সেবিষয়ে মত পার্থক্য নেই বললে চলে। কারণ বৈধতা পরীক্ষার ক্রমের মধ্যদিয়ে এটি পাস করতে হবে।
বর্ণিত মামলায় ৪০৪ প্যারায় সুষ্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা’ সংবিধানের অন্যান্য বিধানাবলীর বেশ কয়েকটি দ্বারা ক্ষুন্ন বা প্রভাবিত হতে পারে। বিচারকদের নিয়োগ ও অপসারণের পদ্ধতি, চাকরির মেয়াদের নিরাপত্তা, বিশেষ করে,অবসরের নির্ধারিত বয়স সীমা, এবং অবসর কিংবা অপসারণের পর প্রজাতন্ত্রের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, স্বাধীন বিচারকদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উক্ত পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, মৌলিক কাঠামো বজায় রাখার বিষয়ই হলো সংশোধনী। আর তাই কোন সংশোধনীতে সংবিধানের সীমা লঙ্ঘিত হলে এবং মৌলিক কাঠামো পরিবর্তিত হলে আদালত তা বাতিল করার ক্ষমতা রাখে।
সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট ডিভিশনের একজন বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেন, জনগণের সার্বভৌমত্ব, সুপ্রিম কোর্টোর আধিপত্য, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, সরকার থেকে প্রজাতন্ত্র, একক রাষ্ট্র, ক্ষমতা পৃথকীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার, সমাজতন্ত্র এগুলো হলো সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। বক্ষমান মামলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হলোঃ (১) জনগণের সার্বভৌমত্ব, (২) সংবিধানের আধিপত্য এবং (৩) বিচর বিভাগের স্বাধীনতা।
কুদরত-ই-ইলাহী পনির বনাম বাংলাদেশ (সরকার) ৪৪ ডিএলআর (এডি) ৩১৯ মামলায় এই ডিভিশন উল্লেখ করে যে, প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতা জনগণের। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের মামলা ৫২ ডিএল আর (এডি) ৮২-তে ভি মাসদার হোসেন বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৪(৪) এবং ১১৬(ক) তে স্বীকৃত ও ঘোষিত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের অন্যতম মৌলিক স্তম্ভ এবং এটি সংবিধানের বিদ্ধমান বিধান ছাড়া কোনভাবে বা পস্থায় বিচূর্ণ, ভেঙ্গে ফেলা, কাটছাট কিংবা হ্রাস করা যাবে না।
সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছেঃ ‘রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচারবিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবে৷আর ৯৪(৪) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছেঃ ‘এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারক বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।’ ঐ বিধানগুলো আরও কার্যকর ও অর্থবহ করে তুলতে বিচারকদের চাকরির বয়স সীমার নিরাপত্তা অপরিহার্য। বিচারকদের দায়িত্ব থেকে সহজে অপসারণের বিরুদ্ধে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক গ্যারান্টির অনুপস্থিতিতে সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ ও ৯৪(৪) অনুচ্ছেদের বিধানাবলী অর্থহীন হয়ে পড়বে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা এবং পাশাপাশি ষোড়শ সংশোধনীতে প্রদত্ত বিচারকদের অপসারণের বিধান, যাতে বিচারকদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের তদন্ত অনুষ্ঠানের কোন বিধান রাখা হয় নি, তা রদ করতে সংবিধানে একটি গণতান্ত্রিক ধারা সংযোজন করা প্রয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।