পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মোঃ হেদায়েত উল্লাহ, টঙ্গী থেকে : দুর্ভোগের আরেক নাম যেন গাজীপুর মহানগরী ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। মহাসড়কের স্থানে স্থানে বড় বড় গর্ত, দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন ভেঙ্গে পড়া ড্রেনের আবর্জনা যুক্ত পানিতে মহাসড়ক তলিয়ে যাওয়া, রাস্তার দু’পাশ হকার ও প্রভাবশালী কর্তৃক বেদখল এবং স্থানে স্থানে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার স্তুপে বেহাল এই মহাসড়কটি যেন দেখার কেউ নেই। এছাড়া মহাসড়কের সাথে যুক্ত অধিকাংশ সংযোগ সড়কেরও বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। এতে শিল্প কারখানার মালামাল বহনকারি যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটায় তার চাপও মহাসড়কে পড়ছে। বিগত তিন বছর ধরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের পদ নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া, মহাসড়কের উন্নয়নের দায়িত্ব বিআরটি প্রজেক্টে হস্তান্তরের অযুহাত, এবং দায়িত্বশীল মন্ত্রী-এমপি ও প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় রাজধানীর অতিনিকটতম এই গাজীপুর মহানগর যেন এক পরিত্যাক্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে। মহানগর এলাকার অধিকাংশ সড়ক বর্তমানে ভাঙ্গাচুরা ও স্থায়ী পানিবদ্ধতায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে খানাখন্দে ভরপুর ও দীর্ঘদিন সংস্কারহীনতার ফলে ভেঙ্গে পড়া ড্রেনের আবর্জনা যুক্ত পানিতে অধিকাংশ সময় মহাসড়কের দুই পাশ তলিয়ে থাকায় প্রতিদিন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা আব্দুল্লাহপুর থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এই মহাসড়কে যাতায়াতকারি যাত্রী সাধারণকে ৩০ মিনিটের রাস্তা পার হতে ৩-৪ ঘন্টা আটকে থেকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মহাসড়কের স্থানে স্থানে খানাখন্দ ও পানিবদ্ধতা এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী বাজার-আবদুল্লাহপুর থেকে শুরু করে ষ্টেশন রোড, চেরাগআলী বাসস্ট্যান্ড, হেসেন মার্কেট, তারগাছ, বোর্ডবাজার, চৌধুরী বাড়ি, ভোগড়া, বাসন বাইপাস মোড়সহ জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের এসব গর্তের কারণে থেমে থেমে ধীর গতিতে পরিবহন চলায় দেখা দিচ্ছে তীব্র যানজট। এ ছাড়াও এ মহাসড়কের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দুই পাশে স্থায়ী পানিবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নির্ধারিত বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ড্রেনের আবর্জনাযুক্ত স্থায়ী পানিবদ্ধতার কারণে বাসচালকরা বাধ্য হয়েই সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠাচ্ছেন ও নামাচ্ছেন। ফলে যানজট আরো প্রকট আকার ধারণ করছে। এছাড়া মহাসড়কের ওপর অবাধে সিএনজি, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধীরগতির যানবাহনের স্ট্যান্ড গড়ে ওঠেছে। অনেক স্থানে দূরপাল্লার বাস ও ট্রাক স্ট্যান্ডও গড়ে তুলেছে প্রভাবশালীরা। প্রতিটা বাসস্ট্যান্ড এলাকা ও তার আশপাশে মহাসড়কের দুই পাশ দখল করে তরিতরকারি, ফলমুল থেকে শুরু করে রকমারি বাজার গড়ে ওঠেছে। পত্র পত্রিকায় লেখালেখির পর প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে এসব বাজার ও স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করলেও কিছুক্ষণ বা একদিন পরেই আবার দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে মহাসড়ক। এরপর দিনের পর দিন প্রশাসনের সামনেই রাজত্ব চলে এসব দখলবাজদের। ট্রাফিক পুলিশও এসবক্ষেত্রে নির্বিকার থাকতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, ফুটপাত ও মহাসড়ক দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান জোরদার করা হয়েছে এবং মানুষের যাতায়াত নির্বিঘœ করতে প্রশাসনের পক্ষ হতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এদিকে যাত্রীরা অভিযোগ করছে, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় গর্ত এবং দুই পাশে পানি জমে থাকায় গাড়ি থেমে থেমে চলে। এতে নির্দিষ্ট দূরত্বের রাস্তা অতিক্রম করতে তিন চারগুন সময় লেগে যাচ্ছে।
জয়দেবপুর থেকে বিমান বন্দরগামী যাত্রী আব্দুস সালাম জানান, তিনি সকাল ৯টায় জয়দেবপুর থেকে বাসে উঠেছেন। কিন্তু পথে দীর্ঘ যানজট ও ভাঙ্গাচোরা সড়কের কারণে তাদের বহনকারী গাড়িটি দুপুর ১টায় বিমান বন্দর স্টেশনে পৌছে। তিনি তার এক প্রবাসী আত্মীয়কে বিমান বন্দর থেকে এগিয়ে নিতে আসেন বলে জানান। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন, রাজধানীর সবচেয়ে নিকটতম জেলা হচ্ছে গাজীপুর অথচ মনে হলো যেন কোন দুর্গম মফস্বল থেকে এলাম।
গাজীপুরের চেরাগ আলী, হোসেন মার্কেট, তারগাছ, সাইনবোর্ড, মালেকের বাড়ি ও ভোগড়া বাইপাস এলাকায় একটু বৃষ্টি হলেই মহাসড়কের উপড় জমে থাকে হাঁটুপানি। পানি জমে থাকায় সৃষ্টি হয় বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দের। এসব এলাকায় লোকজন পায়ে হেটে চলার অবস্থাও নেই। সকাল বিকাল হাজার শ্রমিক ও পথচারিদের ময়লা আবর্জনাযুক্ত পানি মাড়িয়ে তাদের কর্মস্থলে যেতে হয়।
টঙ্গীর খাঁ-পাড়া এলাকার বাসিন্দা মাহবুবুল আলম বড়বাড়ি এলাকার একটি পোশাক কারখানায় সুপারভাইজার পদে চাকরি করেন। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৫৪ নং ওয়ার্ডের জনবহুর খাঁ-পাড়া রোডে সবসময় হাট ুসমান কাদাপানি জমে থাকে। সেই এলাকায় এখন কোন রিকশাও চলাচল করতে চায় না। সকাল ৭টায় ঘর থেকে বের হয়ে পায়ে হেঁটে কাদাপানি মাড়িয়ে খাঁ-পাড়া রোডের মাথায় এসে দেখি মহাসড়কে তীব্র যানজট। তাই কোন গাড়িতে না উঠে হেঁটেই রওয়ানা দেই অফিসের উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে বড়বাড়ি আসতে আমার সকাল ৯টা বেজে যায়। অথচ রাস্তা ভালো থাকলে অফিসে আসতে আমার মাত্র আধা ঘন্টা সময় লাগতো। তার মতে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়র দায়িত্ব পালন করতে না পারায় মহানগর এলাকার কোন উন্নয়নই হচ্ছে না।
এব্যাপারে গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিন রেজা জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী বাজার বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্পের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।