পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : প্রবণ বর্ষণ আর ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা তিস্তা সুরমা কুশিয়ারাসহ ১৪টি নদ-নদী ২১ স্থানে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বগুড়ায় যমুনায় পানি বিপদ সীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুড়িগ্রামে ধরলা নদীতে ব্রীজ পযেন্টে ৯৩ সে.মিটার, ব্রহ্মপুত্র নদে চিলমারী পয়েন্টে ৬০ সে.মিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৬ সে.মিটার. এবং তিস্তায় ২৪ সে.মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভারত নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের দুঃখ খোয়াই নদীর পানির বিপদ সীমার ২০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপে তিস্তা সেচ প্রকল্পের নীলফামারীর জলঢাকায় দুটি স্থানে ১শ’ ফুট ভেঙে গেছে। ফুলছড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। লালমনিরহাটে তিস্তা বিপদসীমার ৩০ সেঃ মিঃ, ধরলা বিপদসীমার ৪৫ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতীয় জারী ধরলা গ্রামের প্রায় ৬ শ’ মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। গফরগাঁওয়ে প্রবল বর্ষণে মৎস্য বহু মাটির কাঁচাঘরবাড়ি নরম হয়ে গেছে। যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে। বিভিন্ন জেলায় ত্রিশ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ও মৎস খামার তলিয়ে গেছে। ফলে খামারি ও কৃষকের মাথায় চিন্তার ভাঁজ। এসব এলাকায় মানষের দুঃখ কষ্ট নিয়ে আমাদের সংবাদাতাদের পাঠানো তথ্য নিয়ে ডেস্ক রিপোর্ট:
শফিউল আলম চট্টগ্রাম থেকে জানান, এবার ভয়াল বন্যার কবলে পড়েছে দেশ। বর্তমানে আরও দ্রুত ও তীব্রবেগে ধেয়ে আসছে ভারত থেকে ঢল-বান। প্রধান নদ-নদীসমূহে উজানভাগের পানির চাপ ক্রমাগত বাড়ছেই। জুলাইয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার ধকল না কাটতেই ফের বন্যার মুখোমুখি হয়েছে অনেক এলাকা। গতকাল (শনিবার) সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তে জানা গেছে, উত্তর জনপদের যমুনা নদ, তিস্তা, ধরলা নদীসমূহ থেকে শুরু করে উত্তর-মধ্য, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াইসহ ১৪টি নদ-নদী ২১ পয়েন্ট বা স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম করে গেছে। দ্রুত ফুঁসে উঠা ব্রহ্মপুত্র নদ কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার খুব কাছাকাছি পৌঁছে যায় এবং গতরাত নাগাদ বিপদসীমা অতিক্রমের শঙ্কায় রয়েছে। দেশের মোট ৯০টি নদী পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের মধ্যে ৮১টিতেই পানির সমতল বেড়েছে। বন্যা কবলিত হওয়ার সাথে সাথেই উত্তর, মধ্য ও উত্তর-পূর্ব জনপদের নদ-নদী সংলগ্ন শহর-গঞ্জ-জনপদের সর্বত্রই নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিধ্বস্ত হচ্ছে আগে থেকেই জরাজীর্ণ ও নাজুক অবস্থায় থাকা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো। সেই সাথে বানের তোড়ে বাড়ছে ফসলহানি। এ অবস্থায় দিশেহারা কৃষক। গত মার্চ-এপ্রিলে ভারতের আসাম মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঢলের তোড়ে সুনামগঞ্জে কৃষকদের ব্যাপক সর্বনাশের ক্ষত না শুকাতেই ফের বানে ভাসছে বিস্তীর্ণ হাওড় জনপদ। নদ-নদী পরিস্থিতি ও বন্যা পূর্বাভাসে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি আগামী ৭২ ঘণ্টায় তথা তিন দিনেও অব্যাহত থাকতে পারে। সুরমা-কুশিয়ারা উভয় নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও।
নদী ও পানি বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, আগামী ১৬ আগস্ট বুধবার পর্যন্ত ৫ দিন ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী এর শাখা ও উপনদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
অন্যদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদী অববাহিকায়ও মূলত ভারতের ফারাক্কা বাঁধের ছেড়ে দেয়া পানি অব্যাহতভাবে ভাটির দিকে নামছে। গঙ্গা-পদ্মা নদী বিপদসীমার এখনও অনেক নিচে থাকলেও এই অববাহিকায় একাধিক নদীর পানি বেড়ে গিয়ে গতকাল বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ, গঙ্গা-পদ্মা এবং মেঘনা নদী অববাহিকায় (সুরমা-কুশিয়ারাসহ) বিভিন্ন শাখানদী উপনদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উজানের ঢলের সাথে বাংলাদেশের উপর সক্রিয় ও জোরালো মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রায় সর্বত্র টানা ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের কারণেও এখন বেড়েই চলেছে নদ-নদীতে পানির দ্বিমুখী চাপ। অবশ্য গতকাল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর উত্তাল না থাকায় কোন সতর্ক সঙ্কেতও ছিল না। আবহাওয়া তেমন অবস্থার উদ্ভব ঘটলে সাগর উপকূল ফুলে-ফুঁসে থাকবে এবং উজানের ঢল-বানের পানি নামতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বন্যা আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ মাসে সাগরে এক থেকে দু’টি লঘুচাপ ও একটি মৌসুমি নিম্নচাপ সৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়। তাছাড়া আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ কমিটির দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে আগস্টে অতিবৃষ্টিতে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বন্যার আশঙ্কার কথা জানানো হয়।
পূর্ব-প্রস্তুতি চরম উপেক্ষিত
গত এক সপ্তাহেরও বেশিদিন যাবত হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চল, পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম এবং আসাম, মেঘালয়, অরুণাচলসহ সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে ভারী থেকে অত্যধিক ভারী বর্ষণে পাহাড়ি ঢল ও বন্যাজনিত দুর্যোগের ব্যাপারে আগাম সর্বাত্মক প্রস্তুতির সঙ্গে চূড়ান্ত সতর্কতা রেড অ্যালার্ট এবং অরেঞ্জ অ্যালার্ট ধারাবাহিকভাবেই বজায় রাখা হয়েছে। অথচ উত্তর-পূর্ব ভারতে অতি বর্ষণ-জনিত উজানের ঢল-বানের চাপ ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে ভয়াবহ মাত্রায় গড়াবে তা পরিস্থিতিদৃষ্টে এক প্রকার নিশ্চিত থাকা সত্তে¡ও দেশে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্কতা ও প্রস্তুতির অভাব অত্যন্ত প্রকটভাবেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাছাড়া বন্যা পূর্বাভাস ব্যাবস্থাও সামগ্রিকভাবে সেকেলে, দুর্বল ও গলদপূর্ণ হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে। কেননা গত ২৬ জুলাই পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ঢাকায় জেলা প্রশাসক সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে দেশে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এরজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বন্যার আগে বাঁধগুলো মেরামতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে’। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহের গোড়াতেই ফের বন্যা কবলিত হয়েছে দেশ। যেখানে বন্যা পরিস্থিতি তথা দুর্যোগ মোকাবিলায় পূর্ব-প্রস্তুতির অপরিহার্য কার্যক্রমই বলতে গেলে চরম উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। পুনরায় বন্যা ও নদীভাঙনের মুখোমুখি অবস্থায় উত্তর, মধ্য ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের মাঝে এ মুহূর্তে ভর করেছে ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক।
১৪ নদী ২১ স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম
গতকাল সর্বশেষ বন্যা ও নদ-নদী প্রবাহের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, ১৪টি নদ-নদী ২১টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এছাড়া কয়েকটি নদী বিপদসীমার কাছাকাছি পানি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীসমূহের মধ্যে- যমুনা নদ গতকালই আরও ফুঁসে গিয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে এবং ৪টি পয়েন্টেই একযোগে ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে যমুনা বাহাদুরাবাদে ১৬ সেমি উপরে, সারিয়াকান্দিতে ২ সেমি উপরে, কাজীপুরে ৩ সেমি এবং সিরাজগঞ্জে ২৫ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ব্রহ্মপুত্র নদ কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ১২ সেমি নিচে প্রবাহিত হয়। উত্তর জনপদের অন্যতম নদী তিস্তার উজানভাগে ভারতে বানের চাপ কমাতে গজলডোবা বাঁধের গেটগুলো খুলে দেয়ায় নীলফামারী জেলার ডালিয়া পয়েন্টে গতকাল তিস্তা বিপদসীমা অতিক্রম করে এবং ১৩ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। উত্তরের নদী ধরলা কুড়িগ্রামে বিপদসীমার ৪৯ সেমি উপরে, বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরী ৪৯ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
অন্যদিকে গঙ্গা-পদ্মার অববাহিকায় অবস্থিত পঞ্চগড়ে অবস্থিত করতোয়া নদী (আপার) বিপদসীমার ৪ সেমি উপর দিয়ে, ঠাকুরগাঁও জেলায় টাঙ্গন নদী বিপদসীমার ৮১ সেমি উপরে, খুলনায় পশুর নদী ৯ সেমি উপরে (যদিও ফ্লাশিং রিভার হওয়ার কারণে হ্রাস-বৃদ্ধি সাময়িক) প্রবাহিত হচ্ছিল। অপরদিকে মেঘনা অববাহিকায় অবস্থিত অন্যতম প্রধান নদী সুরমা তিনটি পয়েন্টে এবং কুশিয়ারা দু’টিতে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এরমধ্যে সুরমা নদী কানাইঘাটে ১১৬ সেমি, সিলেটে ১৬ সেমি এবং সুনামগঞ্জে ৭৭ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কুশিয়ারা নদী অমলশীদে ২৬ সেমি এবং শেওলায় ৩৫ সেমি উপরে বইছিল। সারিঘাটে সারিগোয়াইন নদী বিপদসীমার ৮০ সেমি উপর দিয়ে, মনু নদী মনু রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে ২০ সেমি উপরে, খোয়াই নদী বাল্লাহ ও হবিগঞ্জ পয়েন্টে যথাক্রমে ১০০ ও ২০০ সেমি উপরে, ভুগাই নদী নাকুয়াগাঁও পয়েন্টে ২৪১ সেমি উপরে, সোমেশ্বরী নদী দুর্গাপুর পয়েন্টে ১৩৭ সেমি উপরে এবং কংস নদী নেত্রকোণা জেলার জারিয়া জঞ্জাইল পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫০ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তাছাড়া দেশের দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকায় তথা বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে উজানের ঢলের সাথে অভ্যন্তরে টানা অতি বর্ষণের কারণে বিভিন্ন নদ-নদীতে গত দু’দিনে পানির সমতল বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনও বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও পানি বৃদ্ধির দিকে রয়েছে খর স্রোতা পাহাড়ি কর্ণফুলী নদী, সাঙ্গু এবং মাতামুহুরী নদী।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রায় সারাদেশে নদ-নদী অববাহিকায় ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় দেশের নদ-নদীর ৯০টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ১০০ মিলিমিটারের উপরে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৫টিতে, ৫০ মিমির উপরে বৃষ্টি হয় ৩৮টি স্টেশনে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ বর্ষণ হয় সুনামগঞ্জে ২০৫ মিমি।
পানি আরও বৃদ্ধির শঙ্কা
পানিসম্পদ ও নদী বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ ছাড়াও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি গত সপ্তাহে ধীরগতিতে বাড়লেও বর্তমানে দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। ভারতের উজানভাগের ঢল-বানের সাথে দেশের অভ্যন্তরে ভারী বর্ষণের কারণে পানির দ্বিমুখী চাপ এভাবে অব্যাহত থাকলে আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে নদীসমূহে পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন নদ-নদী বিপদসীমায় পৌঁছতে পারে। প্রধান নদ-নদীর সাথে যুক্ত শাখানদী উপনদীগুলোতেও পানি বৃদ্ধি ঘটছে। প্রসঙ্গত ভৌগোলিকভাবে ভাটিতে বাংলাদেশের অবস্থানের কারণে নদ-নদীসমূহের পানির উৎস ৭০ থেকে ৯০ শতাংশই হচ্ছে ভারতে উজান অববাহিকাসমূহে। ব্রহ্মপুত্র নদের অন্যতম উৎস তিব্বত চীন ও ভারত। অপর নদীগুলোর প্রধান উৎস বা অববাহিকা ভারতে।
সাব-হিমালয় অঞ্চল, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম এবং আসাম, অরুণাচল, মেঘালয়সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে অতি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় গতকাল পর্যন্ত সেসব অঞ্চলে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানি ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসে। হিমালয় পাদদশীয় অঞ্চল, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম এবং আসাম, মেঘালয়, অরুণাচলসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত অতি বর্ষণের কারণে ভয়াবহ পাহাড়ি ঢল ও বন্যাজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় চূড়ান্ত সতর্কতা বা ‘রেড অ্যালার্ট’ গতকালও বলবৎ থাকে। নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরা রাজ্যে প্রস্তুতি-সতর্কতা বা ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি আছে। এতে করে উজান তথা ভারত থেকে ঢল-বানের পানি আরও ধেয়ে আসার আশঙ্কা রয়েই গেছে।
বিশেষ সংবাদদাতা বগুড়া থেকে জানান, শ্রাবনের শেষ প্রান্তিকে টানা বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ী ঢলে ফলে বগুড়ায় যমুনা, বাঙ্গালী, করতোয়াসহ ছোট বড় সব নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল শনিবার বিকেলে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডে খবর নিয়ে জানা গেছে, যমুনায় পানি বিপদ সীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পাদদেশে যে সমস্ত বাসভাসী মানুষ কয়েকদিন আগের বন্যায় বাঁধের অস্থায়ী আশ্রয় থেকে নিজের বাড়ীতে ফিরে গিয়েছিল সেইসব বানভাসী মানুষ আবার নতুন করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়া’র নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বলেছেন, আগামী সপ্তাহ জুড়েই যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বন্যা কবলিত এলাকার পরিমানও বাড়বে। অন্যদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, আগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরেক দফা বন্যার পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল। তাই বন্যার্তদের জন্য প্রয়োজনীয় করনীয় সম্পর্কে প্রশাসন আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছে। তাই এবারের বন্যা মোকাবিলায় তেমন সমস্যা হবে না।
দিনাজপুর অফিস জানায়, গত শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় উজান থেকে নেমে আসা পানিতে দিনাজপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে রোপনকৃত হাজার হাজার একর জমির আমন চারা। সদর, বিরল ও নবাবগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি স্থানে বাধ উপচে পানি ঢুকছে জনবসতি এলাকায়। অনেক এলাকায় বাধের ক্ষতি আশঙ্কাজনক বলে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে প্রবল বর্ষণে বন্দরের রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যাওয়ায় হিলিস্থলবন্দরের কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত। এদিকে দিনাজপুরের পূর্ণভবা, আত্রাই, ইছামতি নদীর পানি বিপদসীমা ছুইছুই করছে। গতকাল সন্ধ্যার পর বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, আগামী ২৪ ঘন্টায় আরো ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ব্যাপকহারে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সিলেট অফিস জানায়, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সারাদেশেই বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে। এতে স্বাভাবিক জনজীবনে বিঘœ ঘটছে। সুনামগঞ্জসহ দেশের অনেক এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বৃষ্টির এ প্রবণতা আরও তিন দিন থাকতে পারে। ভারিবর্ষনে সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। নগরীর অনেক স্থানে পানিবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে বন্যার।ইতোমধ্যে জেলার কয়েকটি উপজেলার নিস্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।গতকাল বিকেল ৩ টায় সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বিভিন্ন বিদালয়ের চারিদিকে পানি থাকায় সুনামগঞ্জের ৭ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। গতকাল শনিবার সকালে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জাহেদুল হক জানান, এবার জেলায় ২৪ হাজার ৪৭৫ হেক্টর রোপা আমন চাষাবাদ হয়েছে। এভাবে পানি বাড়লে আরো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
মোঃ আইয়ুব আলী বসুনীয়া, লালমনিরহাট থেকে জানান, টানা ৩ দিনের বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে লালমনিরহাট জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর পানি বিপদ সীমার ৩০ সেঃ মিঃ ও ধরলা নদীর পানি ৪৫ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গোটা জেলার চরাঞ্চলসহ বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলার মোগলহাট ধরলা নদীর বুমকা এলাকায় নির্মিত বাধঁ ভেঙে যাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।এ বন্যায় জেলার প্রায় ৫০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বানভাসী মানুষগুলো তাদের গরু, ছাগল,হাসঁ মুরগী নিয়ে বিপাকে পড়েছে। ভারতের উজান থেকে আসা পাহারী ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ধরলা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার মোগলহাট সীমান্তে ভারতীয় জারীধরলা গ্রামের ৬ শতাধিক মানুষ দিশেহারা হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের আতœীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নেয় বলে এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যাক্তি জানায়। এদিকে মোগলহাট বিজেবি ক্যাম্পের ভিতরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ক্যাম্পের গুরুত্বপুর্ণ জিনিষপত্র সরিয়ে নিতে দেখা যায়।
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, অবিরাম বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে তিস্তায় পানি অল্প অল্প করে বাড়তে থাকে এবং শনিবার বিকাল ৩ টা থেকে ১৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তায় পানি বৃদ্ধির কারনে জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে পানির চাপে তিস্তা সেচ প্রকল্পের দিনাজপুর সেচ ক্যানেলের নীলফামারীর জলঢাকায় দুটি স্থানে ১’শ ফুট ভেঙে গেছে। এতে জলঢাকার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন পানির নীচে তলিয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেচ ক্যানেল ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ভারী বর্ষন ও নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় এ জেলার প্রায় কয়েক লাখ মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছে
গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধা জেলার সাত উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলে ২৪ ঘন্টার টানা বর্ষণে ব্যবসা বানিজ্যসহ জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ছে। টানা বর্ষণে এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ও পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে এই বর্ষা মৌসুমে সাদুল্যাপুর হতে মীরপুর পাকা সড়কটি সংস্কার কাজ ধীরগতি চলায় যানবাহন চলাচল ও পথচারিদের নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। আর এ কারণে ঘটছে ছোট-খাটো সড়ক দুর্ঘটনা।
হবিগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, ভারত নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের দুঃখ খোয়াই নদীর পানির বিপদ সীমার ২০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খোয়াই নদীর হবিগঞ্জ শহর রক্ষা বাধের দুর্বল স্থান গুলোর প্রতি এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। টানা বর্ষণ ও ভারত নেমে আসা পানিতে শুক্রবার রাত ১০টার পর থেকে খোয়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। গতকাল শনিবার বেলা ৫ টায় খোয়াই নদীর পানি বিপদ সীমার ২০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে।
আবুল কালাম আজাদ বালাগঞ্জ (সিলেট) থেকে জানান, সিলেটের ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জে দ’ুদিনের প্রবল বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হড়েছে। গত দুদিন ধরে শ্রাবণের অঝোর ধারা বর্ষণে জনজীবন দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। টানা বৃষ্টিপাতে ব্যবসা বাণিজ্যসহ স্বাভাবিক কাজকর্মে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। রাস্থাঘাটে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচলও ছিলো কম। খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষের দুর্ভোগ দৃশ্যদখা গেছে। টানা বৃষ্টির কারণে হাট বাজারের অলিগলিতে জমেছে পানি। অনেকের বাসা-বাড়িতেও পানি ঢুকে সৃষ্টি করেছে ভোগান্তির।
মোঃ আতিকুল্লাহ গফরগাঁও থেকে জানান, গফরগাঁও পৌরসভাসহ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের গতকাল শনিবার ও শুক্রবার লাগাতার দু,দিনে প্রবল বর্ষণের ফলে আমন ও মৎস্য খামার এবং বিভিন্ন শাকসবজি ফসল তলিয়ে গেছে। ফলে কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়েছে। আমনের চারাসহ ফসলাদি সর্ম্পুণরুপে পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকদের অপুরনীয় ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকায় আমনের বীজতলায় তলিয়ে গেছে। ফলে চলতি মৌসুমে আগস্ট মাসে আমনের চারার ভয়াবহ সঙ্কট দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া অবিরাম বৃষ্টির ফলে বহু মৎস্য খামার/পুকুর তলিয়ে গেছে। লাখ লাখ টাকার মৎস্য সম্পদ বিনাশ হয়ে গেছে। বহু মাটির কাঁচাঘরবাড়ি নরম হয়ে গেছে। যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে। তরিতরকারী ও পেয়াঁজসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদ্রির দামও অনুরুপভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, টানা প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও রেলওয়ে মেরিন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল ৫টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় ৭০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে তলিয়ে গেছে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমি ও সবজি ক্ষেত। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এদিকে বন্যা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদী তীরবর্তী কয়েক হাজার মানুষ।
পীরগাছা (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রংপুরের পীরগাছায় গত চার দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অস্থায়ী বন্যা দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় বসত-ভিটা পানি নিচে তলিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১২ হাজার লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বেশকিছু স্কুল-কলেজের মাঠ হাঁটু পানি নিচে তলিয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টা থেকে উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে জনজীবনে ছন্দ পতন দেখা দিয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার প্রায় তিনশত হেক্টর জমির রোপা আমন চারা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে ৩ দিন যাবৎ টানা বর্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। কখনো ভারী বর্ষণ, ক্খনো মাঝারী বর্ষণে বাড়ীঘর, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এতে সাড়া উপজেলার ফসলসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে। শহরের রাস্তাঘাট তলিয়ে যেতে বসেছে। অনেকে ঘরবাড়ী ছেড়ে স্কুল কলেজে গরুবাছুর নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।