মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : পাকিস্তানের সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ জানিয়েছেন, যে কারণ দেখিয়ে তাকে সুপ্রিমকোর্ট বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন, তার কোনো ভিত্তি তিনি দেখছেন না। তবে বলেছেন, সংবিধানের শ্রেষ্ঠত্ব এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। গত শনিবার ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে দেয়া এক বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। নওয়াজ বলেন, আমাকে কেন বরখাস্ত করা হল সেটা আমার এখনও বুঝে আসছে না। তবে আমি সন্তুষ্ট যে, কথিত দুর্নীতির অভিযোগে আমাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়নি। বরখাস্তের পর এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (এমএল-নওয়াজ) প্রধান নওয়াজ শরিফ। নওয়াজ বলেন, একজন সৈনিকের মতো আমি দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমি সব সময় আইনের শাসন ও সংবিধানকে রক্ষা করতে চাই। এ জন্য দলের নেতাদের সহযোগিতা দরকার। যা ঘটেছে তো ঘটেছেই। আমি খুশি যে আমার চরিত্র হনন করা হয়নি। আমি এখন আর প্রধানমন্ত্রী নই। কিন্তু আমি আমার সাধ্যমতো কাজ করে যাব। আমার সারা জীবনের সংগ্রাম বৃথা যেতে দেব না। আমি চাই দেশের জন্য আমার সংগ্রাম যেন ফলপ্রসূ হয়। আমার ক্ষমতার নেশা নেই, পদের নেশা নেই। আমি শুধু চাই, দেশ ভারমুক্ত হোক। নওয়াজ বলেন, আমাদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে তা লজ্জাজনক। প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমি তো আরব আমিরাতের কোম্পানি থেকে কোনো বেতনই নেইনি, তো সেটার ঘোষণা দেব কিভাবে। আদালত বলেছে, নওয়াজ ২০০৬ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দুবাইভিত্তিক কোম্পানির কাছ থেকে বেতন হিসেবে নেয়া ১০ হাজার দিরহামের তথ্য গত সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় প্রকাশ করেননি। বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে নওয়াজ বলেন, সে সময় আমি নির্বাসনে ছিলাম। আর ভিসা পাওয়াটাও কঠিন ছিল। আমি তখন সউদীর উদ্দেশে লন্ডন যাই। কিন্তু লন্ডনে ছয় মাসের বেশি থাকা যেত না। আমাকে তখন আরেকটি দেশে গিয়ে ফের ছয় মাসের ভিসা নিতে হতো। আর লন্ডন যাওয়াটা জরুরি ছিল। কেননা সেটি আমাদের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। কাজেই বৈধভাবে ভিসা পাওয়ার জন্য আমার ছেলে একটি কোম্পানি চালু করে আর আমাকে তার চেয়ারম্যান দেখায়। আইন অনুযায়ী আমার জন্য একটি বেতন নির্ধারণ করতে হয়। নওয়াজ বলেন, সেটা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, আমার ছেলের কোম্পানি। আর টাকার পরিমাণটাও লাখ লাখ নয়। তা ছাড়া আমি তো টাকাই নেইনি, কিন্তু আদালত আমাকে টাকা নেয়ার অভিযোগে বরখাস্ত করলেন। নওয়াজ বলেন, কোনো কিছু নিলেও সমস্যা, না নিলেও সমস্যা। ভাষণে নওয়াজ বলেন, আমার পরিবারই কী শুধু ভুল করে? দেশের বাকি সবাই ধোয়া তুলসী পাতা? তিনি বলেন, কিছু লোক আমাকে পদত্যাগের আহŸান জানায়। কিন্তু আমি যেখানে বসে আছি সেটা পুষ্পশয্যা নয়, কণ্টকাকীর্ণ। আমার বিবেক বলে আমি কোনো অন্যায় করিনি। তিনবারের বরখাস্ত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ বলেন, ২০ বছর আগে আমি আজকের মতো আদর্শিক ছিলাম না, কিন্তু ঘটনাপ্রবাহ আমাকে আদর্শবান বানিয়েছে। আমার বিবেক পরিষ্কার। আমি যদি কোনো ভুল করতাম কিংবা দেশের কাছ থেকে এমন কিছু নিতাম যা আমার না, তাহলে আমি নিজেই অনুতপ্ত হতাম। নওয়াজ বলেন, সারা জীবনই আমি সংগ্রাম করেছি। আমাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে, জেলে পোরা হয়েছে, ২৭ বছর কারাদÐ দেয়া হয়েছে। আমি যখন ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী তখন বলা হয়েছে আমি নাকি ছিনতাইকারী। এসব তো আমি দেখেছি এবং সহ্য করেছি। আমার আগেও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তাদের ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে এবং আপনারা তা দেখেছেন। নওয়াজ বলেন, আগামীর পথ পরিষ্কার। সংবিধানের শ্রেষ্ঠত্ব এবং আইনের শাসন থাকতে হবে। আমাদের ইতিহাসে দুঃখজনক ঘটনা আছে, কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ হতে হবে এসব থেকে মুক্ত। সবাইকে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কীভাবে দেশের কল্যাণ করা যায়। আমি নিজের জন্য ভাবি না, ভাবি দেশ আর দেশের মানুষের জন্য। বিদেশের গণমাধ্যমের রায়ের সমালোচনার দিকে ইঙ্গিত করে নওয়াজ বলেন, এই রায় নিয়ে সারাবিশ্ব কথা বলছে। তাদের লেখা পড়–ন যে তারা কী বলছে। আমি আর কী বলতে পারি। ডন, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।