ফ্ল্যাগশিপ দুর্নীতি মামলায় খালাস পেলেও আল আজিজিয়া স্টিল মিল দুর্নীতি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে পাকিস্তানের আদালত। সোমবার ইসলামাবাদে দেশটির অ্যাকাউন্টিবিলিটি আদালত নওয়াজের বিরুদ্ধে এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় ভাতিজা হামজা শাহবাজসহ আদালতে উপস্থিত ছিলেন পিএলএম-এন নওয়াজ শরিফ। খবর ডন।

অ্যাভেনফিল্ড মামলার রায় ঝুলে থাকলেও নওয়াজের বিরুদ্ধে ইসলামাদের অ্যাকাউন্টিবিলিটি আদালতে বহুল আলোচিত ফ্ল্যাগশিপ ইনভেস্টমেন্ট ও আল আজিজিয়া স্টিল মিল দুর্নীতি মামলার রায় শুনানির দিন ধার্য ছিল সোমবার। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। সকাল থেকে নওয়াজের দল পিএমএল-এন’র নেতাকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করতে শুরু করেন। নওয়াজ শরিফ আদালতে হাজির হলে স্লোগান দেয়া শুরু করেন তারা। এ সময় নওয়াজের সমর্থকরা পুলিশের ওপর পাথর নিক্ষেপ শুরু করলে টিয়ার গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। রায়ে তাকে আল আজিজিয়া স্টিল মিল দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ফ্ল্যাগশিপ ইনভেস্টমেন্ট দুর্নীতি মামলায় খালাস দেয় আদালত। এছাড়া দুই মামলায় তাকে ২৫ মিলিয়ন ডলার এবং দেড় মিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা করা হয়। নওয়াজকে আদিয়ালা জেলে না পাঠিয়ে লাহোরের কোট লাখপাত জেলে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তার আইনজীবী। অনুরোধ বিবেচনায় নিয়ে তার মেডিক্যাল রিপোর্ট চেয়েছে আদালত।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুনে লন্ডন যাওয়ার পর থেকে নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন। গত ৬ জুলাই অ্যাভেনফিল্ড দুর্নীতি মামলা তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। তার মেয়ে মরিয়মকে দেওয়া হয় ৭ বছরের কারাদণ্ড। মরিয়মের স্বামী ও নওয়াজের মেয়ের জামাই অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ সফদরকেও আদালত এক বছরের সাজা দেয়। ১৩ জুলাই লন্ডনে বসবাসরত নওয়াজ ও তার মেয়ে কুলসুম জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু বিমানবন্দরেই তাদেরকে গ্রেফতার করে লাহোরের আদিয়ালা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। গত সেপ্টেম্বরে নিম্ন আদালতের দেওয়া এ রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ। মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত ৫ লাখ রুপিতে নওয়াজ ও তার পরিবারের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের জামিন মঞ্জুর করে আদালত।

গত বছর পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে নওয়াজ ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে সম্পদের উৎস জানাতে ব্যর্থ হওয়ায় আদালতের রায়ে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষিত হন নওয়াজ। আদালতের এমন রায়ের পর নওয়াজ শরিফ পদত্যাগ করেন।