মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
জবাবদিহি আদালতে সাজাপ্রাপ্ত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিয়া নাওয়াজ শরিফ ও তার মেয়ে মরিয়ম নাওয়াজ গতকাল দেশে ফিরেই গ্রেফতার হয়েছেন। লাহোরের আল্লামা ইকবাল বিমানবন্দরে তাদের বহনকারী বিমান অবতরণের পরপরই বিমান থেকেই তাদের হেফাজতে নেয় আগে থেকে প্রস্তুত থাকা ন্যাব-এর একটি দল। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তাদের পাসপোর্ট জব্দ করে এবং বিমানবন্দর থেকেই হেলিকপ্টারে করে ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেখানে আদিয়ালা কারাগারে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে। একটি সূত্র এও জানিয়েছে যে, আদিয়ালা কারাগারের ভেতরেই তাদের পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এর আগে গতকাল লন্ডন থেকে রওনা হয়ে আবুধাবী বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও মুসলিম লীগ (এন)-এর সাবেক প্রধান মিয়া মোহাম্মদ নাওয়াজ শরিফ ও তার মেয়ে মরিয়ম নাওয়াজ। সেখানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, পাকিস্তান একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পথে চলতে বাধা দেয়া হচ্ছে, মানুষের পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে। ৭০ বছর অনেক সহ্য করেছি। ৭০ বছর একটি দেশের জন্য কম সময় নয়। কিন্তু আমরা ৭০ বছরে কী পেয়েছি। মানুষকে অপমান লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানি জাতি লাঞ্ছনা সহ্য করার জাতি নয়। তিনি বলেন, মানুষের মাঝে ঈর্ষা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। শত শত মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে মানুষ যেন বিমানবন্দরে যেতে না পারে। তিনি বলেন, নির্বাচনে মাত্র ১০ দিন বাকি, এটা কি, নির্বাচনের আগেই এই পরিবেশ? সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে নির্বাচন কে মানবে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ১০ এবং মরিয়মকে ৭ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি পাকিস্তানে ফিরে আসছি। পাকিস্তান এবং আমার জাতি আমার কাছে অত্যন্ত প্রিয় এবং ভবিষ্যতের প্রজন্ম আমার কাছে ঋণী।
আমি হাসপাতালে আমার স্ত্রীকে রেখে এসেছি। কিন্তু তারা পাকিস্তানকে একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে, শত শত শ্রমিককে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
ওদিকে তাদের গ্রেপ্তারের খবরে লাহোরে ব্যাপক বিক্ষোভের খবর পাওয়া গিয়েছে। লাহোর জুড়ে বেশ বড়সড় বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে তাঁর দল পিএমএল-এর সমর্থকেরা। তবে এখনো কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
দুর্নীতির দায়ে ৬ জুলাই নওয়াজ শরিফকে ১০ বছরের কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজকে ৭ বছর কারাদন্ডাদেশ দেন আদালত।
আদালতের রায় ঘোষণার সময় নওয়াজ ও মরিয়ম লন্ডনে অবস্থান করছিলেন। শুক্রবার লন্ডন থেকে আবুধাবি হয়ে দেশে ফিরলেন তাঁরা। তাঁদের আগমন উপলক্ষে নওয়াজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (পিএমএল-এন) লাহোরে ব্যাপক শোডাউনের আয়োজন করে। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়।
আদালত নওয়াজ-মরিয়মের সঙ্গে ক্যাপ্টেন সফদারকে এক বছরের কারাদন্ড দেন। সফদার হলেন মরিয়মের স্বামী। পাকিস্তানের অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্ট ওই রায় দেন। কারাদন্ডাদেশের পাশাপাশি নওয়াজকে ৮০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড ও মরিয়মকে ২০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে। ক্যাপ্টেন সফদার গ্রেফতার হয়ে এখন কারাগারে।
লন্ডনে চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনাকে কেন্দ্র করে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। নব্বইয়ের দশকে লন্ডনে পার্ক লেনের অ্যাভেনফিল্ড হাউসে চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনে নওয়াজের পরিবার। নওয়াজ শরিফ বরাবরই দুর্নীতির এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছেন। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ফ্ল্যাট কেনার অর্থের বৈধ উৎস দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন নওয়াজ।
এর আগে ২০১৫ সালে পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে নাম আসে নওয়াজের। ওই সময় জানা গিয়েছিল, বেশ কয়েকটি অফশোর কম্পানির সঙ্গে নওয়াজ শরিফের ছেলে-মেয়েদের যোগসূত্র রয়েছে।
অভিযোগ আছে, এই কম্পানিগুলোকে ব্যবহার করে বিদেশে অর্থপাচার করা হয়েছে এবং বিদেশে নানা সম্পদ কেনা হয়েছে। আলোচনায় ছিল লন্ডনে কেনা এই বিলাসবহুল ফ্ল্যাটগুলোও।
পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে হয় নওয়াজ শরিফকে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাকে অযোগ্য ঘোষণা করেন। আদালত তাকে রাষ্ট্রীয় যেকোনো পদে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। পরে আদালতের রায়ে দলীয় প্রধানের পদও ছাড়তে হয় নওয়াজকে। সূত্র : ডন, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।