Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এক দশকে সর্বোচ্চে এশিয়ার শেয়ারবাজার

বৈশ্বিক শেয়ারবাজারও টানা নয় কার্যদিবসের লেনদেনে ঊর্ধ্বগতি বজায় রেখেছে

| প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারের চাঙ্গাভাবের সুবাদে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এশিয়ার শেয়ারবাজার। পাশাপাশি বৈশ্বিক শেয়ারবাজারও টানা নয় কার্যদিবসের লেনদেনে ঊর্ধ্বগতি বজায় রেখেছে। বাজারের এ চাঙ্গাভাবে নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক। এদিকে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি-বিষয়ক সিদ্ধান্তে ইয়েনের মান শিথিল হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই এশিয়ার বাজার চাঙ্গা রয়েছে। চীনের অপ্রত্যাশিত শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সুবাদে এশিয়ার বাজার দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকায় এশিয়ার বাজার এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। এদিকে ইউরোপীয় বাজারেও ইতিবাচক শুরুর আভাস পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ব্রিটেনের এফটিএসই ১০০ ও ফ্রান্সের সিএসি ৪০ দশমিক ১ শতাংশ এবং জার্মানির ডিএএক্স দশমিক ২ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি দিয়ে লেনদেন শুরু করার প্রত্যাশা করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিএমসি মার্কেটস। জাপান ব্যতীত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিস্তৃত এমএসসিআই সূচকে দশমিক ১ শতাংশ যোগ হয়েছে। যার সুবাদে সূচকটি ২০০৭ সালের ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ স্তরের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার বাজারে দশমিক ৫ শতাংশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি সূচকে দশমিক ৩ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। এদিকে চীনের বøুচিপস দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে সাংহাই কম্পোজিট ও হংকংয়ের হাং সেং দশমিক ২ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি অর্জন করেছে। এদিকে শক্তিশালী আয়ের ভিত্তিতে ওয়াল স্ট্রিটের লেনদেন সর্বকালের উচ্চতায় শেষ হয়েছে। যার সুবাদে এমএসসিআই ওয়ার্ল্ড ইনডেক্স টানা ১০ কার্যদিবসের লেনদেনে ঊর্ধ্বগতি অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। একই সঙ্গে সূচকটি টানা ষষ্ঠদিনের জন্য রেকর্ড উচ্চতা অর্জন করেছে। সিঙ্গাপুরের আইজি গ্রæপের বাজার কৌশলী জিংয়েই প্যান বলেন, শক্তিশালী আয় প্রতিবেদনের কারণে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও নাসডাকসহ বিভিন্ন মার্কিন সূচক আরো একবার সর্বকালের রেকর্ড উচ্চতা অর্জন করল। যুক্তরাষ্ট্রের অর্জন ও ক্রুডের উচ্চমূল্য আঞ্চলিক বাজারগুলোর শক্তি বৃদ্ধি করেছে। একই সঙ্গে বাজার-সংশ্লিষ্টরা এশিয়া অঞ্চলের আয় প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করছে। এদিকে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশ অর্জনের উদ্দেশ্যে ব্যাপকমাত্রার প্রণোদনা কর্মসূচি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে মুদ্রা বাজারে ইয়েনের মান দুর্বল হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রণোদনা কর্মসূচি থেকে সরে আসতে শুরু করলেও ব্যাংক অব জাপান (বিওজে) এ কর্মসূচিতে অটল রয়েছে। বিওজের সিদ্ধান্তের পর জাপানি মুদ্রাটির মান দশমিক ২ শতাংশ অবমূল্যায়িত হয়ে ডলারের বিপরীতে ১১২ দশমিক ১৩৫ ইয়েনে দাঁড়িয়েছে। দুর্বল ইয়েনের কারণে নিক্কেই সূচক দশমিক ৬ শতাংশ স¤প্রসারিত হয়েছে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ডলারের বিপরীতে ইউরোর মান অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল ১ ইউরো লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ১৫১১ ডলারে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) মুদ্রানীতি পরিবর্তন-বিষয়ক একটি বৈঠকে বসার কথা। চলতি সপ্তাহে একক মুদ্রাটি ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে। বৈঠকে ইসিবি শরত্কালীন অধিবেশনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বন্ড ক্রয় কর্মসূচির আকার বা সময়সীমা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। থিংকমার্কেটস ইউকের প্রধান বাজার-বিশ্লেষক নাইম আসলাম জানান, ইসিবি শিথিল মুদ্রানীতির প্রক্রিয়া বন্ধ করতে যাচ্ছে, এ প্রত্যাশায় ইউরোর মান ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যত্ নির্দেশনা নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করা প্রয়োজন ইসিবির। ব্যাংকের যে কোনো আগ্রাসী সিদ্ধান্ত আর্থিক বাজারকে ধাক্কা দিতে পারে। ইউরোর পাশাপাশি ডলার ইনডেক্স দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৯৪ দশমিক ৮৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া গতকাল অস্ট্রেলীয় ডলারের মান বেড়ে দুই বছরের মধ্যে নতুন উচ্চতায় দাঁড়িয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রিজার্ভ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার বৈঠক থেকে দেশের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস জোরালো করা হয়েছে। কানাডার মুদ্রার মান দশমিক ১ শতাংশ কমে ডলারের বিপরীতে ১ দশমিক ২৬২ কানাডিয়ান ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার স্থানীয় পণ্যের রেকর্ড বিক্রি ও শক্তিশালী তেলের দামের সুবাদে কানাডিয়ান ডলার ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। প্রায় দুই দশক পর ডট-কম বুদবুদের অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে ওয়ালস্ট্রিটের এসঅ্যান্ডপি ৫০০-এর তথ্যপ্রযুক্তি সূচক। বুধবার ডট এসপিএলআরসিটি সূচকটি দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় শেষ হয়েছে। দিন শেষে সূচকটি ৯৯২ দশমিক ২৯ পয়েন্টে দাঁড়ায়। এর আগে ২০০০ সালের ২৭ মার্চ সূচকটি ৯৮৮ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে পৌঁছেছিল। অ্যাপল, ফেসবুক, মাইক্রোসফট ও এনভিডিয়ার মতো হেভিওয়েট প্রযুক্তি কোম্পানির জোরালো শেয়ারের সুবাদে সূচকটি এ নিয়ে টানা নয় কার্যদিবসের লেনদেনে ঊর্ধ্বগতি লাভ করল। এছাড়া ওয়ালস্ট্রিটের অন্যতম দুই সূচক ডাও জোনস ৬৬ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বা দশমিক ৩১ পয়েন্ট বেড়ে ২১ হাজার ৬৪০ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে এবং নাসডাক কম্পোজিট ৪০ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ৩৮৫ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ১৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৪৭৩ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে লেনদেন শেষ করেছে। রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেয়ারবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ