পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ ব্যাংকে দায়িত্বে থেকে শেয়ারবাজার বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা কর্মকর্তা আমিনুর রহমান চৌধুরীকে মাত্র ৪৩ দিন বা দেড়মাসেরও কম সময়ের মধ্যে পুনরায় বদলি করা হয়েছে। ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ফরেক্স রিজার্ভ এন্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টে তাকে বদলি করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-১ (প্ল্যানিং প্রমোশন এন্ড ট্রান্সফার উইং) এর অতিরিক্ত পরিচালক গোলাম মহিউদ্দীন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার নতুন বিভাগে পদায়ন করা হয়।
জানা গেছে, পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমিনুর রহমানের অগ্রণী ভূমিকা ছিল। ফলে গত ১৫জুন প্রায় দুই দশক একই বিভাগে থাকার পর আমিনুর রহমানের একচ্ছত্র অধিপত্য ও প্রভাব নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় বাধ্য হয়ে সাবেক গভর্নর ডিপার্টমেন্ট অফ অফসাইট সুপারভিশন থেকে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে তাকে বদলি করেন। সে সময় বাজার চাঙা করতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে যেসব প্রস্তাব ও পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, তার মধ্যে একটি ছিল আমিনুরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া।
এ বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকের এক্সপোজারের হিসাব বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন, আমি ছিলাম এ সংক্রান্ত বৈঠকে। আমরা আলাপ-আলোচনা করেই করেছি। এখন যেটা হচ্ছে, সেটা প্রসিডিউর। আমাদের আলোচনা হয়েছে, হয়ে যাবে। আমরা তিনজনই একমত। তবে পূর্বের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এই গভর্নর যখন সচিব ছিলেন, তখন ফাইলটা গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। ওনার সুপারিশ নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংকে ফাইল যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপরের লেভেল ঠিক ছিল। কারণ ডেপুটি গভর্নর উপস্থিত ছিলেন মিটিংয়ে। কিন্তু ওখানে (বাংলাদেশ ব্যাংক) যাওয়ার পর জুনিয়র অফিসার কেউ হয়তো নেগেটিভ দিয়ে ফাইলটা এমনভাবে করে উপস্থাপন করেছিলেন, যাতে সাবেক গভর্নরও কিছু করতে পারেননি। যাই হোক নতুন গভর্নর আসার দুদিন পরই আমরা ওনার সঙ্গে দেখা করি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন জাস্ট এটা প্রসিডিউরে আছে।
জানা গেছে, সদ্য বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে আমিনুর রহমানের সুসম্পর্ক ছিল। তাই গভর্নরের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও দাফতরিক সকল কাজেই সিদ্ধান্ত নিতেন আমিনুর। সেই সুবাদে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ইচ্ছেমতোই ছড়ি ঘুড়িয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নতুন নিয়মনীতি যেন তিনি একাই প্রণয়ন করে থাকেন। গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক ও জিএম’র পরিবর্তন হলেও তার চেয়ার নড়তো না। চাকরির প্রায় দুই যুগ পার করেছেন একই বিভাগে কর্মরত অবস্থায়। দেশের বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দিয়ে সুবিধাদি দেয়াসহ বাংলাদেশ ব্যাংকে নিজের কর্তৃত্ব জাহির করেছেন। এমনকি অফিসে কর্মরত ঊর্ধ্বতন কাউকেই তোয়াক্কা করেন না। তবে সাবেক গভর্নরের দায়িত্বের শেষ সময়ে দৈনিক ইনকিলাবের আমিনুরকে নিয়ে দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করায় তাকে নিরাপদ স্থানে পদায়ন করেন। একটানা প্রায় দুই যুগ বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশনের দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ আমিনুর রহমান চৌধুরীকে গত ১৫ জুন আরেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে বদলি করেন।
সূত্র মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্রমে ডিজিএম পদটি তৃতীয় সারিতে থাকলেও গভর্নরের ক্ষমতায় আমিনুর তুমুল আলোচিত ছিলেন এ কারণে যে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন সব বিষয় দেখভাল করতেন, যা পুঁজিবাজারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলতো। পাশাপাশি গভর্নর তার সবকিছু দেখভাল করাতেন আমিনুরকে দিয়ে। কয়েক বছর ধরেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আলোচনা ছিল যে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার নিয়ে রক্ষণশীল। প্রায়ই এমন সিদ্ধান্ত এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে, যা বাজারের জন্য নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে।
অভিযোগ আছে, দীর্ঘদিন একই দফতরে থেকে গভর্নরের মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজারকে অস্থিতিশীল করছেন তিনি। শেয়ারবাজারের অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলেই নতুন কোনো নিয়মনীতি প্রবর্তন করে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছেন। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নানামুখী উদ্যোগে বাজারের প্রতি মানুষের কিছুটা আস্থা ফিরলেও তা আবার চিড় ধরাতে নৈপথ্যে ছিলেন রেখেছেন আমিনুর। অথচ বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে যখন ভাটার টান এবং অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় আর্থিক খাতের যখন নাজুক অবস্থা; তখন বিনিয়োগকারীদের আশার আলো দেখিয়েছে একমাত্র শেয়ারবাজার। বিএসইসি, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভলপমেন্ট অথরিটিসহ (বিডা) সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিনিয়োগ আকর্ষণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড ও আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সম্ভাবনা তুলে ধরছে। এ সব কার্যক্রমের ফলে করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও দেশের শেয়ারবাজারে মানুষের আস্থা ছিল। বিনিয়োগ বাড়ছিল। এছাড়া বিএসইসি আইনের শাসন এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করায় শেয়ারাবাজারের প্রতি ক্রমান্বয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরতে শুরু করে। যা করোনার অভিঘাত কাটিয়ে অর্থনীতিকে চাঙা করতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু আমিনুরসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি স্বার্থান্বেষী গ্রুপের অপতৎপরতায় শেয়ারবাজারে বিএসইসি’র নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ বারবার ভেস্তে যেত।
আর গত সেপ্টেম্বর থেকে পুঁজিবাজারে ধীরগতির পেছনে যেসব কারণ উঠে এসেছিল তার মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র মধ্যে মতবিরোধের বিষয়টি সামনে এসেছে। পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে, এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে দুই সংস্থা সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নেবে Ñ২০১৪ সালে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি জানানো হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায়ই নানা সময় আমিনুরের কূটচালে একক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা নিয়ে বিএসইসি একাধিকবার প্রকাশ্যেই তাদের অসন্তোষ জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।