পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবু হেনা মুক্তি, খুলনা থেকে : আওয়ামী লীগ বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় থাকার রোল মডেল মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকার জনগনের সঙ্গে প্রতারণা-ছলচাতুরী করে অনৈতিকভাবে ক্ষমতায় টিকে আছে। বর্তমান সংসদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই পার্লামেন্ট জনগনের প্রতিনিধিত্ব করে না। ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সেই পার্লামেন্টে পঞ্চদশ সংশোধনী গ্রহণযোগ্য হবে না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তিনি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধনের আহ্বান জানান। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনার টাইগার গার্ডেন মিলনায়তনে জেলা বিএনপি’র নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আরেকটি সাজানো নির্বাচনের পায়তারা করছে। নির্বাচনকালীন যদি একটি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে তাহলে সেই নির্বাচন কখনও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি আরোও বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল-ডাল-তেল লবন ও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। কৃষকের সারের দাম বেড়েছে অথচ তারা তাদের পণ্যের উৎপাদিত পণ্যের মূল্য পায় না। তিনি নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ বাস্তবায়নে নির্বাচনের আগে সব রাজনৈতিক দলকে একই রাস্তায় আনতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। এই কাজে ব্যর্থ হলে পুরো দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও আমরা বলেছি, একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে সমর্থন পাবে। স¤প্রতি নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। খুব ভাল কথা। কিন্তু নির্বাচন করতে হলে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে একই রাস্তায় নিয়ে আসতে হবে, সেই রাস্তা কোথায়? রোড’ই যখন নেই তখন ম্যাপে কী হবে? এ সময় আগে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে ইসির প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করুন। অন্যথায় নির্বাচনী রোডম্যাপ স্বার্থক হবে না। আর ব্যর্থ হলে এর দায় আপনাদের নিতে হবে।
খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্র ইসলাম অমিত, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। জেলা বিএনপির আয়োজনে এ কর্মসূচীর শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন খুলনা সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, সাবেক এমপি সৈয়দ নার্গিস আলী, বিএমএ’র সাবেক মহাসচিব প্রফেসর গাজী আব্দুল হক, সাবেক এমপি কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, শাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, বাগেরহাটা জেলা বিএনপি’র সভাপতি আলী রেজা বাবু, আশরাফুল আলম নান্নু, আবু হোসেন বাবু, সাবেক এমপি মুজিবুর রহমানসহ প্রমুখ।
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ফরহাদ মজহারের মত একজন মানুষকে অপহরণ করা হয় এবং এখন তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো চেষ্টা হচ্ছে। রামপাল তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবনের ক্ষতি করবে। সুন্দরবন যদি ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে খুলনা বিভাগ হুমকির মুখে পড়বে।
সরকারের নির্যাতনের সমালোচনা করে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল আরো বলেন, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর সন্ধান ৫ বছরেও পাওয়া যায়নি। পাঁচশরও বেশি নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছে। এক হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমন দেশ আমরা তৈরী করেছি যেখানে সভা সমাবেশ করা যায় না। সরকারের পালাবার একমাত্র সুযোগ সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। অন্যথায় সত্যি সত্যিই দেশের মানুষ তাদের পালাতেও দেবে না।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসুক এবং দেশে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক বর্তমান সরকার তা চায় না। কারণ তারা জানে ভোটের মাধ্যমে তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি’র গঠনতন্ত্রের বিধান মোতাবেক প্রতি বছর প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সর্বশেষ ২০০৯ সালের দলের কর্মসূচিতে খুলনা জেলায় ৩৫ হাজার সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন করা হয়েছিল। তবে নানা প্রতিকূল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিগত ৮ বছর এ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। তবে এবার এ কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশক্রমে দেশের সকল জেলা, মহানগর, থানা, পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিটে গত ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। গত ১ জুলাই দলের চেয়ারপারসন এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় আনুষ্ঠানিকভাবে খুলনায় বিএনপি এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য নিয়েছে নানা কর্মসূচি। অন্যদিকে জেলা বিএনপি এ বছর এক লাখ নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের টার্গেট নিয়েছে। গতকাল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে এ কর্মসূচি শুরু করা হয়। এরপর ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অভিযান পরিচালনা করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।