Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

থামছে না বানভাসিদের কান্না

| প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গোয়ালন্দে বিপদসীমার উপরে : ভাটিতে স্রোত ও ভাঙন বেড়েছে : যমুনা-ব্রহ্মপুত্রে উন্নতির সম্ভাবনা বর্ষণ কমেছে ভারতের উজানে : সর্বত্র খাদ্য পানি চিকিৎসার জন্য লাখো মানুষের আহাজারি : ত্রাণ খুবই অপ্রতুল : সামনে ঘোর বর্ষা নিয়েই শঙ্কা : জামালপুরে আরো দু’টি শিশুর মৃত্যু


ইনকিলাব ডেস্ক : বাংলাদেশের উজানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বৃষ্টিজনিত বন্যার পানি নেমে ভাটির জনপদ ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ফলে থামছে না গৃহহারা ও বানভাসী মানুষের কান্না। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে ভাটির জনপদ। সপ্তাহের অধিক সময় বন্যায় বন্দি মানুষ খাদ্য ও পানির অভাবে আস্তে আস্তে অপুষ্টির শিকার হয়ে প্রাণশক্তি ও বেঁচে থাকার আশা হারিয়ে ফেলছে। পদ্মা নদীর দুই তীরও হয়েছে বন্যা কবলিত। পদ্মায় পানি অবিরত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে এবং অভিযোগ আসছে ত্রাণ না পাওয়ার। বগুড়ায় গৃহহীন হয়ে পড়েছে ৪শ’ ৮০ পরিবার : সিরাজগঞ্জে বাহুকায় পাউবো’র বিকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ রিং বাঁধের ৩০ মিটার ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। সেনা তত্ত¡াবধানে বাঁধ মেরামত কাজ চলছে। কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরির্বতিত থাকলেও ত্রাণের জন্য সর্বত্র রয়েছে হাহাকার। এখানে সরকারি ত্রাণ অপ্রতুল বলে জানা যাচ্ছে। জামালপুরে বন্যায় আরো দু’টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে, দুর্ভোগে রয়েছে বানভাসীরা। ত্রাণমন্ত্রী পরিদর্শন করে সেখানে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। ফরিদপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফুলপুরে কংশ নদীর ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে স্কুল মসজিদসহ শতাধিক পরিবার। বন্যা, ভাঙন ও মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এ রিপোর্টটি করা হয়েছে।
শফিউল আলম চট্টগ্রাম থেকে জানান, পদ্মা নদীর দুই তীরও হয়েছে বন্যা কবলিত। গঙ্গা-পদ্মার অববাহিকায় উজানে ভারত থেকে পানি নেমে আসছে এবং পদ্মায় পানি অবিরত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গঙ্গা-পদ্মায় পানি বৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টায়ও অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পানি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টে পদ্মা নদী বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপরে বয়ে যাচ্ছিল। ৩০ ঘণ্টায় পদ্মার পানি বৃদ্ধি পায় ১৯ সেমি। সেখানে পানির উচ্চতা এখন ৮ দশমিক ৭৪ মিটার, বিপদসীমা হলো ৮ দশমিক ৬৫ মিটার। উজানের পানি ভাটির দিকে নামার চাপ বেড়ে গেছে। এতে করে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ থেকে শুরু করে আরিচা, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, শরিয়তপুর, মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে নদীর তীব্র ঘূর্ণি স্রোত এবং নদীভাঙন বেড়ে গেছে। বিপন্ন বন্যার্ত গ্রামবাসী রাতজেগে বাঁধ পাহারা ও মেরামত করছে। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বর্তমানে ১১টি নদী ১৬টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। আরো বিভিন্ন স্থানে সতর্কাবস্থায় রয়েছে। উত্তর জনপদ, মধ্যাঞ্চল ও বৃহত্তর সিলেটের বন্যা কবলিত ১৭টি জেলার সর্বত্র এ মুহূর্তে খাদ্য, পানি ও বন্যাবাহিত নানা রোগে আক্রন্ত অসুস্থদের জরুরী চিকিৎসার জন্য লাখো মানুষের আহাজারি চলছে। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা ও চহিদার তুলনায় ত্রাণ সাহায্য সেসব স্থানে যা যাচ্ছে তা খুবই অপ্রতুল এমনকি ছিঁটেফোঁটা। নৌকাযোগে কেউ কোথাও ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আসছে শুনলে বন্যার্ত হাজারো মানুষ সেখানে যেন আছড়ে পড়ছে। তবে ত্রাণ না পেয়ে বিমুখ হয়ে ফিরতে হচ্ছে অনেককেই। বন্যা কবলিত এলাকায় শিশু-বৃদ্ধ ও মহিলাদের দুর্ভোগের নিত্যদিনকার চিত্র সকরুণ। আর যাদের বসতঘর ঢল-বানের পানিতে ডুবে গেছে তারা অসহায়ভাবে এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটু আশ্রয়ের আশায়।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান গতকাল সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে ইনকিলাবকে জানান, যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদে একটানা পানিবৃদ্ধির পর এখন স্থিতিশীল হয়ে আসছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি হ্রাস পাওয়া শুরু হতে পারে। যদিও যমুনা বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার সর্বোচ্চ ৮৭ সেমি উপরে অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। ধীরে ধীরে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর বৃহৎ উৎস বা উজানের অববাহিকায় উত্তর-পূর্ব ভারতের আসামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গত দু’তিন দিনে বৃষ্টিপাত কমেছে। আসামের গোয়াহাটি, গোয়ালপাড়া, ডুবড়ি পয়েন্টে পানি হ্রাস পাচ্ছে। এরফলে উজানের ঢল ধেয়ে আসার মাত্রাও কমেছে। আগামী ২৪-৪৮ ঘন্টায় আরো কমতে পারে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদের বাংলাদেশের ধারায়। তবে তিনি আরো জানান, গঙ্গা-পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে ভাটিতে পানি বেড়ে গিয়ে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। ইতোমধ্যে গোয়ালন্দে পদ্মা বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। সিলেটে সুরমা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও কুশিয়ারা নদীতে পানি ফের বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
বন্যা ও নদ-নদীর সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, যমুনা-ব্রহ্মপুত্র ও সুরমা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল প্রায় স্থিতিশীল রয়েছে। গঙ্গা-পদ্মা ও কুশিয়ারা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীসমূহের পানির সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টায় হ্রাস পেতে শুরু করতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টায়ও অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল হতে পারে। তবে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। পাউবোর ৯০টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের মধ্যে গতকাল ১৬টিতে বিপদসীমার উপরে, ৫৪ পয়েন্টে বৃদ্ধি, ২৭টিতে হ্রাস এবং ৫টিতে অপরিবর্তিত থাকে।
এদিকে নদী ও পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা যায়, দেশে বন্যা পরিস্থিতির কখন কোন দিকে মোড় নিতে পারে বলা যায় না। কারণ এবারের চলমান এই বন্যা মূলত দেশের আবহাওয়া-জলবায়ুর নিরিখে আগাম বন্যা। বর্ষার দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এ বছর আগেভাগে এসে গেছে। কিন্তু সামনেই তো ঘোর বর্ষাকাল। আসছে আষাঢ়ে (জুলাই-আগস্ট) পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে কিনা তা স্পষ্ট নয় এখনও। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতে তখন বৃষ্টিপাতের মাত্রা যদি বৃদ্ধি পায় বা অতিবর্ষণ ও দীর্ঘায়িত বৃষ্টিপাত হয় তখন বন্যা পরিস্থিতি আরেক ধাপে অবনতি ঘটতে পারে। এ বছর মৌসুমি বায়ু ভারতে খুব জোরালো সক্রিয় থাকার ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয় দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।
গতকাল ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাসে জানানো হয়, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, অরুণাচল, মিজোরামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কমে এসেছে। আগাগী ১৮ জুলাই পযন্ত সেসব অঞ্চলে কম কিংবা সাময়িক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া দপ্তর সূত্র বলছে, আগামী ৭২ ঘন্টায় দেশে হালকা থেকে মাঝারি, তবে বিক্ষিপ্ত ও সাময়িক বৃষ্টিপাত হতে পারে।
গতকাল সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, দেশের ১৭টি জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহের উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে- ঘাগট নদী গাইবান্ধায় সামান্য কমে বিপদসীমার ৪২ সেমি উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে মাত্র ৪ সেমি কমে ৩৩ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা বাহাদুরাবাদে আরও ৩ সেমি বেড়ে ৮৭ সেমি উপর দিয়ে, তবে সারিয়াকান্দিতে ৫৮ সেমি উপরে অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে যমুনা কাজীপুর ও সিরাজগজ্ঞে আরো বেড়ে যথাক্রমে ৬৬ ও ৭৭ সেমি উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে এবং ভাটিতে আরিচায় আরো বেড়ে বিপদসীমার কাছে ১৭ সেমি নীচে এসে গেছে। আত্রাই নদী বাঘাবাড়ী পয়েন্টে আরো ১৬ সেমি বেড়ে বিপদসীমার ২৬ সেমি উপরে, ধলেশ্বরী টাঙ্গাইলে আরো ১১ সেমি বেড়ে গিয়ে ৬০ সেমি উপরে, যশোরের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ বিপদসীমার ৫ সেমি উপরে অপরিবর্তিত রয়েছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে হ্রাস-বৃদ্ধিতে কুশিয়ারা আরও বৃদ্ধির দিকে। আর সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে পুরাতন-সুরমা বিপদসীমার এক সেমি উপর দিয়ে বইছিল। নেত্রকোনায় কংস নদী সামান্য কমে বিপদসীমার ৪১ সেমি উপরে রয়েছে।
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, দুর্ভোগের শেষ নেই
সিলেট থেকে ফয়সাল আমীন জানান, সিলেটে আটটি উপজেলায় দীর্ঘমেয়াদী বন্যার পানি এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। তাই ওইসব এলাকার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। দুর্ভোগ কমার চেয়ে উল্টো তাদের মধ্যে দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার বন্যা কবলিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে। এছাড়াও হাওড়ে অকাল বন্যার মতো চলমান বন্যায়ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন উপজেলায় নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়ে ১০-১৫ দিন ধরে স্থায়ী বন্যার আকার নিয়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকার লোকজনের দাবি, সঠিক সময়ে, সঠিক পন্থা অবলম্ভন কওে নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হলে বন্যার সৃষ্টি হত না। এছাড়াও সুরমা ও কুশিয়ারা নদরীর বাঁধ সঠিক সময়ে মেরামত করা হয়নি। এজন্য দুর্গত এলাকার মানুষ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি পাউবো’র অবহেলাকে দায়ী করছেন। তবে পাউবো’র শীর্ষ কর্মকর্তারা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে অপ্রতুল বরাদ্দের কথা বলছেন।
বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাসখানেক আগের বন্যায় হাকালুকি হাওর তলিয়ে যায়। এখন নতুন করে অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদী ভরাট হওয়ার পর পানি যাওয়ার জায়গা পাচ্ছে না; যেহেতু আগে থেকেই হাকালুকিসহ আশপাশের ছোট-বড় হাওর ভর্তি। এজন্য অনেক এলাকায় মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে।
তিনি বলেন, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে বিভাগের চার জেলায় সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। একদিকে পাহাড় ও অন্যদিকে বিশাল হাওর এলাকা থাকায় যৌথ পরিকল্পনা নেওয়ার জোর দিয়ে তিনি বলেন, পাহাড়ি ঢলের সমস্যা যেমন আছে, তেমনি হাওর উপচে পড়ার সমস্যাও রয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ রক্ষা বাঁধ মেরামত ও নতুন বাঁধ নির্মাণে অপ্রতুল বরাদ্দ প্রসঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, বন্যার্ত এলাকায় সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসল রক্ষায় সাধ্যমত চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে গত এপ্রিলে সুনামগঞ্জের ১৫৪টি ছোট-বড় হাওরের ফসল অকাল বন্যায় তলিয়ে হাজার কোটি টাকার ফসলহানি হয়। সেই সময় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির জন্য বাঁধ নির্মাণে পাউবো’র অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করেন জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগী মানুষ। গত ২ জুলাই ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৫ কর্মকর্তাসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করে। এরপর ৪ জুলাই সিলেট সফরকালে সুনামগঞ্জের প্রসঙ্গ উপস্থাপন করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সবাইকে সতর্ক করে বলেন, এরই মধ্যে একটা ওয়ার্নিং হয়ে গেছে। দুর্নীতি ও দায়িত্ব অবহেলা জন্য ৬১ জন গেছেন। আমরা সবাই ভাল হয়ে যাই। দুনীতি করে ৬১ যেনো ৬২ না হয়। তিনি সিলেট ও মৌলভীবাজারে চলতি বন্যার জন্য সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে বলেন, আপনারা সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করলে আজ এ অবস্থা হত না। কয়েকদিন আগে খোয়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছিল হবিগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ।
প্রসঙ্গত, টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের জন্য সিলেট জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে আটটিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। ওইসব উপজেলায় মোট ৫৬ টি ইউনিয়নের ৪৬৬ গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। এসব এলাকার ১৭ হাজার ৮৫৮ পরিবারের ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৫৫ জন লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাছাড়া ৪ হাজার ৪৯১ টি ঘরবাড়ি বন্যায় ক্ষতি হয়েছে। ৪ হাজার ৩৩০ হেক্টর আউশ ধান ও আমনের বীজতলাসহ ফসলী জমি তলিয়ে গেছে। বন্যার কারণে বন্ধ রয়েছে দু’শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান। এ পর্যন্ত হয়েছে ২৭৫ মেট্রিক টন ত্রাণ ও ৪ লাখ ৫৫ হাজার নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিতরণ করা হচ্ছে শুকনো খাবারও।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ
এস এম উমেদ আলী মৌলভীবাজার থেকে : মৌলভীবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি আবারও অবনতি হয়েছে। সরকারি ও বে-সরকারি ভাবে প্রতিদিন আশ্রয় কেন্দ্র সহ বন্যা দূর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হলে অনেকেই অভিযোগ তোলেছেন ত্রাণ না পাওয়ার। গত কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার রাতের কয়েক ঘন্টার ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি আবারও অবনতি হয়েছে। ফলে আবারও বাড়িঘর রাস্তাঘাট ডুবতে শুরু করেছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। জেলায় তৃতীয় দফা বন্যা দীর্ঘ মেয়াদী বন্যায় রুপ নেয়ায় আক্রান্ত এলাকায় প্রতিদিন ভাড়ছে দূর্ভোগ। বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলেও আবার উজানে বুষ্টিপাত হওয়ায় বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, রাজনগর ও সদর উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের ৩৫০টি গ্রামের ৩ লক্ষাধিক মানুষ প্রায় ১ মাস থেকে পানিবন্দী রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যা এখন স্থায়ী জলাবদ্ধতায় রুপ নিয়েছে। সরকারি ও বে-সরকারি ভাবে প্রতিদিন আশ্রয় কেন্দ্র সহ বন্যা দূর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হলে অনেকেই অভিযোগ তোলেছেন ত্রাণ না পাওয়ার। আবার অনেকেই ত্রাণ পেয়েছেন স্বীকার করে বলেন, পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশী হওয়ায় তা দিয়ে কোন রকম ক্ষিদা নিবারণ করছেন। অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে না গিয়ে বন্যার পানির ঢেউ থেকে বাড়ি-ঘর রক্ষায় নিজ গৃহে পানির মধ্যে বসবাস করছেন। জুড়ী উপজেলার শাহপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত নাজমা বেগম জানান, সরকারি ও বে সরকারি ভাবে ত্রান সামগ্রী পাচ্ছেন, তবে ১ মাস যাবত পানি না কমায় তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, এই জেলে বন্দী অবস্থায় আর কতদিন থাকবো। এ আশ্রয় কেন্দ্রের সায়না বেগম ও দিলারা বেগম জানান একই জায়গায় দীর্ঘদিন থেকে তাদের সময় না কাটায় তারা শীতলপাটি তৈরী করছেন আশ্রয় কেন্দ্রের ভেতর। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অকাল বন্যায় বড়লেখা উপজেলার বর্ণি, তালিমপুর, সুজানগর ও দাসেরবাজার ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার অন্তত ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এক মাসের অধিক সময় ধরে পানিবন্দী হয়ে পড়েন। বন্যার অবনতি ঘটায় উপজেলার তালিমপুর, বর্নি, সুজানগর, উত্তর শাহবাজপুর, দাসেরবাজারসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়া দুর্গত ২৫৩ পরিবার আশ্রয় নেয়। কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল এলাকার বন্যা কবলিত একাধিক মানুষ জানান, দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় কর্মহীন হয়ে পরেছেন। আয় রোজগার নেই, ত্রানের আশায় বসে থাকতে হয়। এলাকার অধিকাংশ টিউবলেল পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানিয় জলের রয়েছে অভাব। ঘরের চুলাও পানিতে ডুবে গেছে। তাই রান্না বান্না খাটের উপর। ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, বেসরকারিভাবে কে কিভাবে ত্রাণ দেয় তা আমাদের কেউ জানায়না। তার এলাকার সদিপুর গ্রামে সরকারী ভাবে ত্রান দেয়া হচ্ছে, তবে লোক সংখ্যার তোলনায় খুবই অপ্রতুল। জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম জানিয়েছে, জেলার ৫ উপজেলায় ৩৫টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ৩৫০টি গ্রামের ৫৫২৬৭টি পরিবার হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সংখ্যা ৩ লক্ষ ১০ হাজার আশি জন। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্থরের ২৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ২৮টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে ৫৩৪টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বন্যা আক্রান্ত এলাকায় শুকনো খাবার সহ প্রতিদিন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রতিদিন জেলা প্রশাসক সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ বড়লেখা, কুলাউড়া, জুড়ী ও রাজনগর উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করছেন। মৌলভীবাজার জেলা সদরের সাথে বড়লেখা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ এখনও বন্ধ রয়েছে। এছাড়া রাজনগর-বালাগঞ্জ সড়ক বন্যার কারণে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদী বন্যায় এখনও রাস্তা ঘাট, বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব সহ বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগব্যাধিও বাড়ছে। এলাকার মানুষের এটাই দাবী দীর্ঘস্থায়ী বন্যার হাত থেকে রক্ষায় সরকার স্থায়ী উদ্যোগ নেবে।
বগুড়ায় বন্যার্তদের দুর্ভোগ : গৃহহীন ৪শ’ ৮০ পরিবার
বগুড়া ব্যুরো জানায়, বগুড়ার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্থিতি অবস্থায় রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি বৃদ্ধি না পেলেও পানি বিপদ সীমার ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বগুড়ার বন্যা কবলিত সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষের দূর্ভোগ বাড়ছে। অনেক এলাকায় খাবার পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বাড়ি ঘর ছেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলো গবাদি পশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। গত দু’দিনে নদী ভাঙ্গনে বন্যাকবলিত সারিয়াকান্দির চরবেষ্টিত ৩টি ইউনিয়নের ৪৮০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
জেলা ত্রাণ অফিস জানায়, এপর্যন্ত বগুড়ার ৩ উপজেলার ৯২টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে প্রায় ৭২ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে সাড়ে ৩ হাজার পরিবার।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সারিয়কান্দি উপজেলা। এখানকার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়ন আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বন্যাকবলিত হয়েছে ১১ হাজার ২শ’ ২০ পরিবার। এ পর্যন্ত ১শ’ ৯০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন জানান, শুক্রবার নতুন করে পানি না বাড়লেও বিপদ সীমার ৫৮ সেমি উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ।
সিরাজগঞ্জে সেনা তত্ত¡াবধানে বাঁধ মেরামত কাজ শুরু
সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী জানান, নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার বাহুকায় পাউবো’র বিকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ রিং বাঁধের ৩০মিটার ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের বাহুকা এলাকায় এ ভাঙন দেখা দেয়। মাত্র তিন ঘন্টার মধ্যে যমুনার প্রবল স্রোতে অন্তত ১০টি বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়ে যায় এবং পানিতে প্লাবিত হয় বাহুকা, চিলগাছা, ইটালী, ভেওয়ামারা ও গজারিয়াসহ রতনকান্দি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, বাহুকা উচ্চ বিদ্যালয়, রতনকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ। এছাড়া, আরো ৩০-৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আতঙ্কিত লোকজন আসবাপত্র নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে ওয়াপদা বাঁধ ও স্কুলে আশ্রয় নিচ্ছেন।
সংবাদ পেয়ে রাত ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকাসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তাৎক্ষনিক পানিবন্দী মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেন এবং সবাইকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান। ভাঙনরোধে মেজর মো. সাইফুল হকের (পিএসসি) নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ১১ রিভার ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটেলিয়ন কাজ শুরু করেছেন। এদিকে, স্থানীয়রা বাঁধ ভাঙার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ি করেছেন। তবে, সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধের একটি অংশ ভেঙে গেছে। ভাঙন স্থানে জিওব্যাগ নিক্ষেপ করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি উলে­খ করেন। জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা বলেন, বাঁধ ভাঙ্গার সাথে সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন স্থানে সংস্কার কাজ শুরু করতে না পারলেও আশপাশের লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এবং রাতেই সেনা বাহিনীর সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন। দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বাঁধ ভাঙার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এক বিবৃতিতে এলাকার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাঁধের ভাঙা অংশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার এবং ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। উলে­খ্য, পাউবো গত মে মাসের শুরুতে ২ কি.মি রিং বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শামীম কনস্ট্রাকশনসহ বেশ কয়েকজন ঠিকাদার ওই কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পান। কাজের শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গড়িমসি এবং পাউবো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা। স¤প্রতি রিং বাঁধের সন্নিকটে ভাঙন দেখা দিলে স্থানীয়রা পাউবো কর্তৃপক্ষকে আবারও সতর্ক করেন। কিন্তু বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেয়ায় এ ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন ।
কুড়িগ্রামে পরিস্থিতি অপরির্বতিত : ত্রাণের জন্য হাহাকার : সরকারি ত্রাণ অপ্রতুল
কুড়িগ্রাম থেকে শফিকুল ইসলাম বেবু জনান, কুড়িগ্রাম জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অপরির্বতিত। ঘরে ঘরে বিরাজ করছে শুকনা ও শিশু খাবারের সঙ্কট। সরকারিভাবে ত্রাণ অপ্রতুল হওয়ায় সবার ভাগ্যে ত্রাণ জোটেনি এখনও। এসব দুর্গত মানুষের পাশে এখন পর্যন্ত দাঁড়ায়নি কোন এনজিও। ফলে বন্যা দুর্গত মানুষরা এখন চরম সঙ্কটে। কুড়িগ্রামের চিলমারীতে শত কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের ৫০মিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলিন হওয়ায় গোটা এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা ৯ দিন ধরে স্থায়ী বন্যায় জলবন্দি মানুষগুলো এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। কারো কারো খাবার থাকলেও রান্না করার অভাবে অভুক্ত থাকতে হচ্ছে । এছাড়াও দিনমজুর পরিবারগুলো এক প্রকার না খেয়েই মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রায় ৭শ’ বর্গকিলোমিটার এলাকা ব্যাপি বন্যা কবলিত সাড়ে ৫শ’ গ্রামে সাড়ে তিন লক্ষ পানি বন্দী মানুষের কাছে এখনো জনপ্রতিনিধিরা পৌঁছাতে পারেনি ত্রান। ত্রাণ বিতরণেও কারচুপির অভিযোগ তুলছে স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাযায়, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ২সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুড়িগ্রাম সেতু পয়েণ্টে ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার ১৭ সেন্টিমিটার কমলেও এখনও বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুধকুমর নদের পানি ১ সেঃ মিঃ এবং তিস্তা নদীর পানিও কমেছে। এদিকে কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে জরুরী বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান। বৈঠকে অর্ধশত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জেলা প্রতিনিধিরা অংশ নেয়। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বন্যায় ৪২টি ইউনিয়নের ৫৪১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।বন্যা কবলিত হয়েছে প্রায় সোয়া দুই লাখ মানুষ।বন্যায় ৩৮হাজার ৩১২টি ঘরবাড়ি,১৭টি ব্রীজ, দেড় কিলোমিটার বাঁধ,১৪০ কি.মি রাস্তা,৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৪৯হাজার ৩৯২জন।ফসল নিমজ্জিত ৩ হাজার ৬২০ হেক্টর। বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে ৩জন।এ পর্যন্ত বন্যার্তদের মাঝে ৪০০ মেট্রিকটন চাল, ১১লাখ ৫০ হাজার টাকা, শুকনো খাবার ৪হাজার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে।
জামালপুরে বন্যায় ২ জনের মৃত্যু : খাদ্য-পানির অভাব
জামালপুর থেকে নূরুল আলম সিদ্দিকী জানান, যমুনার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে দুর্ভোগ। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বন্যার পানিতে ডুবে জেলার বকশীগঞ্জে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪ জনের। স্থানীয পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। ব্রহ্মপুত্রের পানিও বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জেলা কম বেশী ৭ উপজেলাই এখন বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবন্দি ৯দিন অতিবাহিত করায় ঘরের খাবার ফুরিয়ে গেছে অনেকের। এলাকায় কাজ না থাকায় আয়ও নেই। আয় না থাকায় খাবার পাচ্ছে না শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। ঘরের খাবার ফুরিয়ে যাওয়ায় ত্রাণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্ণা দিয়ে কেউ পাচ্ছে আবার ও অনেকেই না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষরা সব চেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছে গো-খাদ্য নিয়ে। অনেকেই খাবার দিতে না পারায় বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে পালের গরুটি। বন্যা কবরিত গো-খাদ্যের সংকট চরম আকার ধারণ করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে গো-খাদ্য দেয়ার কোন উদ্যোগ নেই। এতে গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছে বানবাসী মানুষ। বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রানের জন্য হাহাকার দেখা দিলেও প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাচ্ছে বানবাসী মানুষরা। স্থানীয় প্রশাসন পক্ষ থেকে এপর্যন্ত বানবাসী মানুষের দেয়ার জন্য ২৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৫ লাখ টাকা বারাদ্দ হয়েছে। লাখো মানুষের জন্য সামান্য এই ত্রাণ কতটুকু সহায়তা পাবে তা সচেতন মহরের বোধ্যমগ্য নয়। ত্রাণ সহাযতা বাড়ানোর পাশাপাশি বন্যা কবরিত এলাকায দ্রæত সহায়তা পৌছে দেয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি জনিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধি।
ইসলামপুর (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ইসলামপুরে বানভাসী মানেুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ অপ্রতল বলে জানাগেছে। যমুনার পানি বিপদ সীমার ৮৬ সেন্টি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ সহ পৌর শহরে খাদ্য গুদাম, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার,উপজেলা সংলগ্ন জনতা মাঠে পানি ঢুকে পড়েছে। যমুনা তীরবর্তী চরাঞ্চলের অসংখ্য ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। সরেজমিনে, পৌর এলাকার উত্তর দরিয়াবাদ ফকিরপাড়া চাড়িয়া গ্রামে ২শতাধিক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে দেখাগেছে। এসব এলাকার রাস্তা পানিতে ডুবে যাওয়ায় চলাচলে কলার ভেলা একমাত্র ভরসা হয়ে দাড়িয়েছে। এ এলাকা ব্রহ্মপুত্র নদের নিকটবর্তী হওয়ায় সকলের মাঝে ভাঙ্গনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পৌর এলাকার বেপারিপাড়া, নটারকান্দা, ভেঙ্গুরা, গঙ্গাপাড়া গ্রামের ৯ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ফকিরপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম জানান,আমাদের বাড়িতে ব্রহ্মপুত্রর পানি বেড়ে ঘরে ঢুকে পড়েছে। সকাল থেকেই রান্না বন্ধ হয়ে পড়েছে। নড়াচড়া করতে পারছি না। একই এলাকার সিদ্দিক শাহ ফকির জানান,বাড়িতে পানি উঠায় খার্টে উপর বসে দিন কাটালাম। তবে আমার হাসমুরগি গুলো পানিতে ডুবে মারাগেছে।
একই দিনে মুঠোফোনে হাড়গিলা নদীর উপর ১৫টি বাড়ি নদীর গর্ভে চলে গেছে। আরো ২০টি বাড়িঘর যাবার উপক্রম হয়েছে। মাইজবাড়ী এলাকার ২ শতাধিক পরিবারের হাঁস, মুরগি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে বলে নোয়ারপাড়া ইউপি মেম্বার আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন। দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে খোঁজখবর নিতেই গতকাল শুক্রবার ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন মায়া ইসলামপুর বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি উলিয়া, বামনা, বলিয়াদহ এলাকায় ৮ শতাধিক পরিবারের মাঝে ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন।
ফরিদপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত : সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর পানি গতকাল শুক্রবার বিপদ সীমার ৪ সে.মি.ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘন্টায় উপজেলা পদ্মা নদীর পানি ১৫ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে কাল পদ্মা নদীতে বন্যার পানি বিপদসীমার বিপদ সীমার ৪ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে ফরিদপুর পাউবো জানিয়েছেন। এতে উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও পদ্মা পাড় এলাকার প্রায় এক হাজার বসতবাড়ী ও পাঁচশো একর ফসলী জমি প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল উপজেলা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজাদ খান জানান, উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে পদ্মা নদীর পাড় এলাকার বসতিরা বিশেষ করে ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রাম, হাজীডাঙ্গী, সেকের ডাঙ্গী, বালিয়া ডাঙ্গী, ফাজিলখার ডাঙ্গী, এমপি ডাঙ্গী ও টিলারচর গ্রামের ফসলী জমি সহ প্রায় ১৫০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলার চরহরিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমির হোসেন খান জানান, ইউনিয়নের আরজখার ডাঙ্গী, শালেপুর গ্রাম, ভাটিশালেপুর, আমিনখার ডাঙ্গী, ছমির বেপারীর ডাঙ্গী ও নমুর ছাম নামক গ্রামের প্রায় চার শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চরঝাউকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মৃধা জানান, চরাঞ্চলের ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফসলী মাঠের মধ্যে বসবাসরত অন্তত: ৩শ’ পরিবারের বসত ঘরে বন্যার পানি ঢুকে গেছে। ইউনিয়নে পাদ্মার পাড়ের ছাহের মোল্যার ডাঙ্গী গ্রাম, শহর মোল্যার ডাঙ্গী, রেজু চৌকদার ডাঙ্গী, উত্তর নবাবগঞ্জ, চরকালকিনিপুর ও চৌধুরী ডাঙ্গী গ্রাম পানিতে ছয়লাব হয়ে গেছে। এছাড়া উপজেলা গাজীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াকুব আলী জানান, মাঝি ডাঙ্গী, বিন্দু ডাঙ্গী, চরহোসেনপুর, খালপাড় ডাঙ্গী, মধু ফকিরের ডাঙ্গী ও জয়দেব সরকারের ডাঙ্গী গ্রামের প্রায় দুইশো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব পানিবন্দি পরিবারগুলো নৌকা, ট্রলার ও ভেলায় করে চলাচল করছেন।
ফুলপুরে কংশ নদীর ভাঙন আতঙ্কে স্কুল মসজিদসহ শতাধিক পরিবার
ফুলপুর (ময়মনসিংহ) থেকে মোঃ খলিলুর রহমান জানান, এক দিকে বৃষ্টির পানি অপর দিকে ভারতের গারো পাহাড় ও হিমালয় থেকে নেমে পাহাড়ি ঢলে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে প্রবল স্রোতে কংশ যেন হয়ে ওঠে নদীপাড়ের মানুষের কাছে এক আতঙ্ক। এ সময় দুপারের বসবাস করা লোকজন এমনকি প্রতিষ্ঠানগুলোও হুমকির মুখে পড়ে। সরেজমিন প্রতিবেদন করতে যেয়ে কংশপাড়ের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সা¤প্রতিককালে কংশের ভাঙনে পড়ে বাড়িঘর নিয়ে সরে পড়েছেন কংশপাড়ের বাসিন্দা ফুলপুর উপজেলার ঠাকুরবাখাই গ্রামের জামাল উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, কফিল উদ্দিন, করিম, রহিম, মোহাম্মদ আলী, আঃ কাদির, নজরুল ইসলাম, লোকমান, মজিবর, মিল্টন, কাউছার, মতি, হারেজ আলী, এরশাদ ও ডেফুলিয়া গ্রামের রহেদ আলী, সাধু, আবদুল খালেক, আবদুল গফুর, আবদুল মজিদ, আবদুর রহিম, আক্কাছ আলী, আফরোজ, ইজ্জত আলী, হাফিজুদ্দীন, আজিমুদ্দীন, নাজিমুদ্দীন, হাকিমুদ্দীন ও আফাজুদ্দীনসহ অনেক পরিবারের প্রায় দুইশত মানুষ। তাদের ভিটেমাটি ও সহায় সম্পদ গ্রাস করে নিয়েছে সর্বনাশা ওই কংশ। ঐতিহ্যবাহী বাঁশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঁশতলা উচ্চ বিদ্যালয়, ডেফুলিয়া বাজার, নাসুল্লা বাজার, ঠাকুরবাখাই ঈদগা, ঠাকুরবাখাই বধ্য ভুমি ও স্মৃতি স্তম্ভ, ঠাকুরবাখাই গোরস্তান ও মহিলা মাদ্রাসা, বাজারসহ বেশ কিছু বাড়িঘর ও ফসলি জমি বর্তমানে চরম হুমকির মধ্যে আছে। ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে কংশ নদীর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলেন। স্থানীয় লোকজন তাদের কষ্টের কথা বলেন। তখন তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথ



 

Show all comments
  • নাসির ১৫ জুলাই, ২০১৭, ১০:৫৯ এএম says : 0
    আল্লাহ তুমি রহম করো।
    Total Reply(0) Reply
  • হারুন ১৫ জুলাই, ২০১৭, ৩:৩৬ পিএম says : 0
    বন্যার্তদের মাঝে দ্রুত খাবার ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • জার্জিস ১৫ জুলাই, ২০১৭, ৩:৩৭ পিএম says : 0
    ত্রাণ কার্যক্রমে যাতে কোন অনিয়ম না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রসাশনকে নজর দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • নোমান ১৫ জুলাই, ২০১৭, ৩:৩৮ পিএম says : 0
    আসুন আমরা সবাই তাদের পাশে দাঁড়াই
    Total Reply(0) Reply
  • পারভেজ ১৫ জুলাই, ২০১৭, ৩:৩৯ পিএম says : 0
    ত্রাণ সহাযতা বাড়ানোর পাশাপাশি বন্যা কবলিত এলাকায দ্রুত সহায়তা পৌছে দেয়া হোক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ