Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

চট্টগ্রামে বিএসটিআই’র দুর্নীতির দায়সারা তদন্তে ক্যাবের ক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : খাদ্য ও ভোগ্য পণ্যের মান নিশ্চিতকরণে বিএসটিআই চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালায়ের অনিয়ম, দুর্নীতির দায়সারা তদন্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ। গতকাল (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে তারা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিতত করারও দাবি জানান।
ক্যাব নেতারা বলেন, সাবেক উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ইসহাক আলীসহ অন্যদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা তদন্তে গঠিত শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ মশিউর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত টিম প্রথম দফায় বিগত ১৮ মে সরেজমিনে তদন্তে আসলে গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে তদন্ত না করার ঘোষণা দেন। এতে ক্যাব নেতৃবৃন্দের প্রবল প্রতিবাদের মুখে গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বিএসটিআই চট্টগ্রাম অফিসের অনিয়ম ও মাসিক মাসোহারার সাক্ষ্য প্রমান উপস্থাপন করেন। যেখানে ভিডিও চিত্রে সরাসরি ঘুষ গ্রহণের প্রমান উপস্থাপন করা হয়।
পরবর্তীতে আরো অধিকতর তদন্তের জন্য ৯-১০ জুলাই ২য় দফায় তদন্তের বিষয় শিল্প মন্ত্রণালয় ক্যাব, বিএসটিআই চট্টগ্রাম অফিসকে জানালেও তদন্ত টিমের প্রধান শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মশিউর রহমান ১২ জুলাই চট্টগ্রাম আসেন এবং অনেকটা গোপনে তদন্ত পরিচালনার চেষ্টা করেন। ১৩ জুলাই ক্যাব নেতৃবৃন্দ বিষয়টি জানতে পেরে মশিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ক্যাব যে সমস্ত অভিযোগ উত্থাপন করেছেন তার সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করছেন। ক্যাব নেতৃবৃন্দ তদন্ত টিমকে অনুসরণ করে দখতে পান তিনি রিকশায় করে বিএসটিআইর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তাকে নিয়ে চট্টগ্রামের কিছু এলাকা প্রদক্ষিন করে, কিছু কেনাকাটা সেরে বিকালের ফ্লাইটে ঢাকা চলে যান। এই পরিস্থিতিতে ক্যাব নেতারা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যেমে স্ষ্ঠুু তদন্তের দাবি জানান। বিবৃতিদাতারা হলেন, ক্যাব কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু।
ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন সাবেক উপ-পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ইসহাক আলীর নেতৃত্বে বিগত ১২ বছরে চট্টগ্রাম কার্যালয়কে দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিনত করেছেন। কোন কারণে নমুনা পরীক্ষায় অকৃতার্য ফলাফল হলে তা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয় না, বিএসটিআই লাইসেন্স প্রদানের চেয়ে, না দিয়ে সংশ্লিষ্ট (লাইসেন্সবিহীন) প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে মাসিক মাসোহারার চুক্তিতে বেশী আগ্রহী। এ কারণে লাইসেন্স প্রদানে অনেকগুলি শর্ত যোগ করে অবৈধ কোম্পানীগুলিকে নিরাপদে ব্যবসা করার জন্য সুযোগ করে দিচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১২০-১০০টি মিনারেল ওয়াটার কোম্পানীর লাইসেন্স ছিল বর্তমানে তা ১৮-২০টিতে নেমে এসেছে। আর অধিকাংশ কারখানা এখন মাসিক মাসোহারা ভিত্তিতে চলছে। চট্টগ্রামের অধিকাংশ বেকারীর বিএসটিআই লাইসেন্স নেই, প্রতিটি বেকারী পণ্যের গায়ে বিএসটিআই’র লোগো লাগানো থাকলেও বেকারী পণ্যের বাজারজাত হলে লাইসেন্স প্রদান করা হয় না এবং উক্ত কারখানার নমুনা পরীক্ষা করা হয় না। প্রতিবছর ঈদ ও রমজানের পুর্বে ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকায় লাচ্ছা সেমাই, নুডুলস, চুটকি ইত্যাদি মৌসুমী পণ্যের বিএসটিআইর লাইসেন্স প্রদান করা, ভোজ্য তেল সয়াবিন ও পাম অয়েলের আমদানিকারক চট্টগ্রামে ২৫টিরও বেশী উৎপাদনকারী এবং ৫০টির বেশী ব্রান্ডের বাজারজাত হলেও বিএসটিআই অফিস থেকে লাইসেন্স না দিয়ে মাসিক মাসোহারা হারে কারখানা পরিচালনা করছে। যাদের লাইসেন্স প্রদান করছে সে সমস্ত কোম্পানীকে লাইসেন্স পাওয়ার পর তাদের পণ্যের মান কি রকম হচ্ছে তা যাচাই করা হচ্ছে না। অন্যদিকে লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড প্রতিনিয়তই বাড়ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ