স্পোর্টস রিপোর্টার : মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ক্রিকেটারদের আনাগোনা শুরু হয়েছিল বেশ ক’দিন আগে থেকেই। ঈদের ছুটির কাটিয়ে নিজের মত করে জিমে, ইনডোরে সময় কাটাচ্ছিলেন অনেকেই। তবে ফিটনেসের আসল ‘যুদ্ধ’ শুরু হলো গতকাল। নতুন মৌসুমের আগে শুরু হলো ফিটনেস ক্যাম্প। প্রথম দিন যথারীতি ছিল ‘বিপ টেস্ট’। ক্রিকেটারদের ফিটনেসের অবস্থা পরখ করে নেওয়া।
কন্ডিশনিং ক্যাম্পের প্রথম দিনে নিয়মিতই দেখা যায় ছবিটা। স্টেডিয়ামের ইনডোরে খেলোয়াড়েরা ঢোকেন হাসিমুখে। কিন্তু বের হওয়ার সময় হাসিটা আর থাকে না। বিøপ টেস্টের পর ঘর্মাক্ত মুখে ভর করে একরাশ ক্লান্তি। তবে ফিটনেসের এই পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেলে নিশ্চয়ই তৃপ্তি কাজ করে সবার মনে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ সামনে রেখে শুরু হওয়া কন্ডিশনিং ক্যাম্পে গতকালও যেমন দেখা গেল। গত দুই বছরে ফিটনেসে চোখে পড়ার মতো উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের। গত সেপ্টেম্বরে কন্ডিশনিং ক্যাম্প শেষে বিøপ টেস্টের গড় ফল ছিল ১১.৫। এবার প্রথম দিনে গড় অনেকটা একই- ১১। সবচেয়ে বেশি ১২.৯ পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ছুটিতে থাকায় জাতীয় দলের স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ মারিও ভিল্লাভারায়নের কাঁধেই আপাতত ক্যাম্পের দায়িত্ব।
ফিটনেস ট্রেনিংয়ের ক্লান্তিকর ও বিরক্তিকর কাজটি বরাবরই উপভোগ্য করে তোলার চেষ্টা করেন ভিল্লাভারায়ন। পরখ করে নেয়ার প্রক্রিয়াতে যে ব্যপক পরিবর্তন এসেছে সেটিতেই খুশি এই লঙ্কান। ক্রিকেটারদের মনোভাবেও পরিবর্তনটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন শ্রীলঙ্কার এই ফিটনেস ট্রেনার। ফিটনেস ট্রেনিংকে এখন আর লড়াই হিসেবে দেখেন না ক্রিকেটাররা। বছর জুড়ে নিজেদের মত করে ফিটনেস ট্রেনিং করেন অনেকেই। উপভোগ করেন দলীয় ট্রেনিংটাও, ‘মনোভাবে অনেক বড় পরিবর্তন এসেছে। মানসিকতার এই পরিবর্তনই সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয়। ওরা এখন আরও বেশি কিছু করতে চায়। আরও বেশি পরিশ্রম করতে চায়। এখন ওরা নিজেরাই ট্রেনিং করে, আগে যেটা হতো না। এই যে গত ৮-১০ মাস ওরা টানা খেলেছে; ফিটনেস ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে ওরা এখন ফিটনেস উপভোগ করে বলেই।’
ভিল্লাভারায়ন জানালেন, আলাদা করে সবার অবস্থা বুঝেই নেওয়া হবে ব্যবস্থা, ‘বেশ লম্বা সময় পর ফিটনেস ক্যাম্প হচ্ছে আমাদের। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিলিয়ে ৮ মাস আমরা টানা খেলার মধ্যে আছি। কার ফিটনেস এখন কোন অবস্থায় আছে, আলাদা করে সেটি বোঝার ভালো সুযোগ এটি আমার জন্য। যার যেখানে ঘাটতি আছে, সেটি নিয়েই আগামী তিন থেকে ছয় সপ্তাহ কাজ করতে চাই।’
আগামী মাসে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ, সেপ্টেম্বরের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। দুই সিরিজের জন্য কন্ডিশনিং ক্যাম্পের ২৯ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে গত ২২ জুন। সেই দল থেকে কন্ডিশনিং ক্যাম্পের প্রথম দিনে অনুপস্থিত ছিলেন এসেক্সে খেলতে যাবার কারণে তামিম ইকবাল, চোটের কারণে রুবেল হোসেন ও বিসিবির হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে থাকায় এনামুল হক বিজয়, লিটন দাস, আবুল হাসান, তানভীর হায়দার ও সাইফউদ্দিন। ২৮ জুলাই হাথুরুসিংহের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরার কথা। প্রধান কোচ ফেরার পরই অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করবেন নির্বাচকরা।