পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719602701](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পঞ্চায়েত হাবিব : পানিতে ভাসছে দেশ। গত কয়েকদিনে বন্যায় সারাদেশে ৫ লাখ ৬১ হাজার হেক্টর জমির ফসলডুবি দুর্ভোগের শিকার কৃষকরা। এদিকে গতকাল পর্যন্ত সারাদেশের কৃষকের কি পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে তার সঠিক তথ্য এখনো জানে না কৃষি মন্ত্রণালয়।
গত কয়েকদিন ধরে টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢল। দুর্যোগ ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কৃষকরা। অকাল বন্যায় ক্ষেতের ফসল হারিয়ে এখন তারা দিশেহারা। সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ওমৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম জেলা, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান,খাগড়াছড়ি ,লালমনিরহাট , কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধ এবং কক্সবাজার জেলা বন্যার পানির নিচে। ঝড়-বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়েছে। সিলেট বিভাগের চার জেলায় এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬১ হেক্টর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সিলেট কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯১ হাজার হেক্টর রয়েছে সুনামগঞ্জে। সিলেটে ৫৮ হাজার হেক্টর, মৌলভীবাজারে ১০ হাজার ৫৮, হবিগঞ্জে আড়াই হাজার হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এছাড়া কুড়িগ্রামে উলিপুর, উপজেলার হাতিয়া বেগমগঞ্জ, সাহেবের আলগা, বজরা, গুনাইগাছ, থেতরাই, দলদলিয়া, রাজাহাট, যাত্রাবাড়ি এলাকায় প্রায় একশ হেষ্টের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। গতকাল পযন্ত অনেক জেলায় হাজার হাজার হেষ্টর জমির ফসল পানি নিচে বয়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে জানা গেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, এখনো সারাদেশে বন্যা দেখা দেয়নি। মাত্র ১১/১২ জেলা বন্যা দেখা দিয়েছে। আগামীতে আরো অনেক জেলায় বন্যা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে তার আগে কত হেষ্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলা যাবে না। তিনি বলেন বন্যার শেষ হওয়ার পর পরে আমরা কৃষকদের জন্য সার, বীজসহ সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছি। এবার বন্যা শেষ হলে আবারো দেয়া হবে।্ এ গুলো তথ্য সংগ্রহ করে আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তারা আরো ভাল বলতে পারবে।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ গোলাম মারু কে এবাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেনি।
সিলেট জেলায় সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, গোলাপগঞ্জ, বিশ্বনাথ, বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট, দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জের ৫৮ হাজার হেক্টর ফসলি জমি টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর হাওরপাড়ের কৃষকরা নতুন করে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিও মূল্যবৃদ্ধিতে। এসব জেলায়র বাজার গুলোতে সব ধরনের পণ্যেও মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। চাল, ডাল, আটা, আলু প্রতি বস্তা ৪০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। দাম বেড়েছে শাকসবজিরও। প্রতিকেজি তরকারি ৪-৫ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে হাওরাঞ্চলের হাট-বাজারে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন মজুতদারদের অতিরিক্ত মুনাফা রোধে মাঠে নেমেছে। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাজার দর স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভাও করছেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। যেসব এলকায় বন্যার পানিতে ফসল তলিয়েগেছে সে গুলো হচ্ছে, সিলেট, গোলাপগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ, হাকালুকি হাওরের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকাধীন বোরো ফসল, দামড়িয়া, দুবড়িয়া, চিলুয়া, মলিকপুর হাওরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাওরের দুই হাজার হেক্টর ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হাহাকার উঠেছে। বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী রুবাইয়াত ফয়সল আল মাসুম বলেন, বণ্রার পানি এক্সেভেটর দিয়ে মাটি সরিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোলাপগঞ্জে সর্ববৃহত্তর হাকালুকির হাওর, ধামড়ির হাওর ও বাঘার হাওরসহ ছোট-বড় প্রায় ১৫-২০টি বিলে থাকা মাছ, ইরি- বোরো ধান ও ফসলের জমি তলিয়ে গেছে বন্যার অথৈই পানিতে। এসব ফসল হারিয়ে কৃষকদের চোখে-মুখে নেমে এসেছে অমানিশার ঘোর অন্ধকার। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকার আশঙ্কা করেছেন স্থানীয় লোকজন। অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, গত কয়েকদিনে বন্যায় ৫ লাখ ৬১ হাজার হেক্টর জমির ফসলডুছে। বেশি করে শাক সবজী ও বেগুন, মরিচ বেশি ক্ষতি হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত সারাদেশের কৃষকের কি পরিমান ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার তথ্য আসেনি কৃষি মন্ত্রণালয়।
মৌলভীবাজার, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া , সোনাদিঘি, কাওয়াদিঘির হাওর ও কইরকোনা বিলসহ বিভিন্ন গতকাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ৮৬২ হেক্টর জমি পানির নিছে তলিয়ে গেছে। হবিগঞ্জ, জেলার সাত উপজেলার ১০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমির ফসল বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। জামালপুর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র কোলায় চরাঞ্চলের চাষীরা স্থানীয় জাতের বোর ধান চাষ করে। গত তিন দিনের ভারী বর্ষণে রোপণকৃত চারাগুলো তলিয়ে যায়। চিকাজানীর চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ জানান। তিনি বলেন, বন্যার কারণে শুকনো মরিচ ও ভুট্টা শুকানো যাচ্ছে না। শুকনো মরিচ ও ভুট্টা ক্ষেতেই পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মরিচ ও ভুট্টা বিক্রি করতে না পেরে চিন্তিত হয়ে পড়েছে কৃষক। নেত্রকোনা ও কেন্দুয়া জেলার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ, কলমাকান্দা, মদনসহ বিভিন্ন উপজেলায় নতুন করে তলিয়ে যাচ্ছে বিল ও হাওরের ইরি- বোরো ফসলি জমি। হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করছে। এতে ১৮ হাজারের অধিক হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। তবে বেসরকারি হিসেবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি। ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়ছেন কৃষকরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : নাসিরনগর উপজেলার ৪টি গ্রামের প্রায় দুই হাজার বিঘা জমির বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. আবু নাছের জানান, নাসিরনগরে সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ হেক্টর ফসলি আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। তবে পানি দ্রæত নিষ্কাশিত হলে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হবে না। সৈয়দপুর উপজেলায় গত কয়েকদিনের অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কৃষকের ফসলের ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। এ জেলার ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য এখনো সংগ্রহ করতে পারেনি কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর। বন্যার পানিতে ভৈরবের ৩টি ইউনিয়নে ১ হাজার হেক্টর জমির আধা পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতি হবে প্রায় ৭ কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।