পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে : চুয়ডাঙ্গার দর্শনা রেলবন্দরে মানা হচ্ছেনা না পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০। সংশ্লিষ্টদের অবহেলা, উদাসীনতা ও নানা অনিয়মের কারণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এ রেলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত হতে আমদানীকৃত বিভিন্ন পণ্যের মোড়ক হিসাবে দেশের অভ্যন্তরে অবাধে প্রবেশ করছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর লক্ষ লক্ষ প্লাস্টিক ব্যাগ। প্রতিদিন ক্ষতিকর প্লাষ্টিকব্যাগ ভর্তি এসব পণ্য রেলওয়াগন ও শত শত ট্রাকে লোড করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে ভারত হতে নিষিদ্ধ ঘোষিত লক্ষ লক্ষ ক্ষতিকর প্লাস্টিক ব্যাগ দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করায় সরকারের “পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্লাস্টিক ব্যাগের প্রবেশ বন্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকার সচেতনমহল।
জানা যায়, ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সরকার দেশের এক সময়ের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট (সোনালী আঁশ) এর অতীত গৌরব ফিরিয়ে এনে পরিবেশবান্ধব দেশ গড়তে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিরোধী প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে “পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ পাস করে। ওই বছরের ১৫ নভেম্বর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম আইনটি বাস্তায়নের লক্ষ্যে চাহিদা অনুযায়ী পাটের বস্তা সরবরাহ, মজুদ ও সেইসাথে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দপ্তর বা সংস্থাগুলোকে মনিটরিংয়ের নিদের্শনা দেন। এসময় পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিরোধী প্লাষ্টিক এবং পলিথিন ব্যাবহার বন্ধে সারা দেশে একযোগে অভিযান পরিচালনার ঘোষনা দেন। ১ডিসেম্বর ২০১৫ থেকে “পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০” কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হলেও কয়েকবার তারিখ পিছিয়ে অবশেষে আইনটি কার্যকর করা হয়।
সূত্রে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রাথমিকভাবে ছয়টি পণ্য ধান, চাউল, গম, ভূট্টা, চিনি, সার ও পরে আরো দুই ধাপে মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, তুষ, খুদ, কুড়া এই ১১টি পণ্যসহ সর্বমোট ১৭টি পণ্য সংরক্ষণ, সরবরাহ, মোড়কীকরণে পাটের বস্তা ব্যবহারের নির্দেশ দেয়। আরোও বলা হয়, “পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০” এর ১৪ ধারা অনুযায়ী পাটের মোড়ক ব্যবহার না করলে অনুর্ধ ১(এক) বছর কারাদন্ড বা অনধিক ৫০(পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে। এ অপরাধ পুনর্বার করলে সর্বোচ্চ দন্ডের দ্বিগুণ দন্ডে দন্ডিত করা হবে। এছাড়া এসমস্ত পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহার না করলে ব্যাংক ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে না। সেইমত তফসিলি ব্যাংকগুলো এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে। একই সঙ্গে মিল মালিকরা পাটের ব্যাগ ব্যবহার না করলে খাদ্য মন্ত্রণালয় তাদের লাইসেন্স বাতিল করবে। পাশাপাশি আমদানি ও রপ্তানিকালে পণ্যে পাটের ব্যাগ ব্যবহার না করলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আইআরসি বা ইআরসি বাতিল করবে।
চলতি বছরের মে মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথভাবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে গণ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে। এতে বলা হয় ১৪ মে’র মধ্যে উল্লেখিত ১৭টি পণ্য সংরক্ষণ, সরবরাহ ও মোড়কীকরণে পাটের বস্তা ব্যবহার নিশ্চিত বরতে হবে। আরো বলা হয়, “পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০” বাস্তবায়নে ১৫ মে থেকে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তর, করপোরেশন এবং বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। এ ঘোষণার পর দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে নামকাওয়াস্তে কয়েকজন ব্যাবসায়ীকে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চলছে আগের মতই। এছাড়া প্রতিদিন প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে দর্শনা রেলবন্দর দিয়ে অবাধে প্রবেশ করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর লক্ষ লক্ষ প্লাষ্টিক ব্যাগ। আমদানিকৃত এসব পণ্যের মোড়ক হিসাবে পাটের ব্যাগ ব্যাবহারের নিয়ম থাকলেও ক্ষতিকর প্লাষ্টিক ব্যাগে আনা পণ্যের চালান ছাড় করছে কাস্টমস্সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তরা। এ ব্যাপারে জানেনা উপজেলা প্রশাসনও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাবসায়ীরা জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্লাষ্টিক ব্যাগ ব্যবহারের অপরাধে খুচরা পর্যায়ের ব্যাবসায়ীদের জরিমানা করা হলেও এসবের উৎস্য খুঁজে বের করার কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয় না। ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিরোধী প্লাষ্টিক এবং পলিথিন উৎপাদন, আমদানি, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণের সাথে জড়িত রাঘববোয়ালরা বরাবরই থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।
ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যে প্লাষ্টিক ব্যাগ ব্যবহারের ব্যাপারে জানতে শনিবার দুপুরে দর্শনা স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারি কমিশনার আরেফিন জাহেদীর ০১৭৪৮-১৪১৯০৪ নম্বর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে কল রিসিভ না করায় কিছু জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হাসানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আপনিই আমার কাছে প্রথম বললেন। কাস্টমস্ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে আমি উর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।