২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
প্রঃ ডেভেলপমেন্টাল ডিলে বা বিলম্বিত বিকাশ কি?
উঃ যখন কোন নবজাতক তার স্বাভাবিক বয়সের সমানুপাতে শারীরিক, মানসিক বা সামাজিক এবং কথা বলার সক্ষমতা অর্জন করতে না পারে তখন আমরা তাকে বিলম্বিত বিকাশ বা ডেভেলপমেন্টাল ডিলে বলি।
প্রঃ কি কি কারনে ডেভেলপমেন্টাল ডিলে হতে পারে?
উঃ ক. জন্মের আগেঃ জন্মের আগে যদি মায়ের কোন সমস্যা থাকে যেমন- মানসিক সমস্যা, অপুষ্টি জনিত সমস্যা, রক্তের প্রদাহ জনিত কোন সমস্যা, দীর্ঘদিন কিছু ওষুধ (যেমনঃ সিডেটিব, স্টেরয়েড ইত্যাদি) সেবন ইত্যাদি কারনে।
খ. জন্মের সময়ঃ ডেলিভারির পরে বাচ্চা কান্না না করলে, ফরসেপ ডেলিভারি, ব্রিচ ডেলিভারি, স্বাভাবিক ওজনের চাইতে কম ওজন, অবস্থাঙ্গত কোন সমস্যা, ৩৭ সপ্তাহের আগে ডেলিভারি ইত্যাদি কারনে।
গ. জন্মের পরবর্তী সময়ঃ খিঁচুনি, জন্ডিস, মাথায় আঘাত পাওয়া, ছোত বা বড় মাথা (মাইক্রো এবং হাইড্রোসেফালাস) নিউমোনিয়া ইত্যাদি নানা কারনে।
ঘ. জিনগত সমস্যাঃ ডাউন সিন্ড্রোম, এঞ্জেলমেন্স সিন্ড্রোম ইত্যাদি জিনগত কারনেও সমস্যা হতে পারে।
প্রঃ কিভাবে বুঝব আমার শিশু এই সমস্যায় আক্রান্ত কিনা?
উঃ ক.) ঠিকমত ঘাড় ঠিক সময়ে শক্ত না হুওয়া, বসতে ও দাঁড়াতে না পারা খ.)ঠিক সময়ে কথা বলতে না পারা, গ.) মাথা বড় হওয়া, ঘ.) হাত-পা ছোট ছোট হওয়া, ঙ.) অত্যাধিক চঞ্চলতা, এক জায়গায় স্থির না হয়ে বসা ইত্যাদি। এছাড়াও আরও বিভিন্ন লক্ষন থাকতে পারে। এগুলোকে বলে ওয়ার্নিং সাইন।
ওয়ার্নিং সাইন গুলি নিচে দেয়া হল-
ক. শারীরিকঃ খুব শক্ত হাত পা, পায়ের আর্চ (পায়ের তলায় যে বাঁকের মত থাকে) ডেভেলপ না হওয়া, যার ফলে হাঁটতে গিয়ে পরে যায়, সবসময় শরীরের একপাশ ব্যাবহার করা, , খুব নরম হা পা, , ঠিক সময়ে বসতে ও দাঁড়াতে না পারা ইত্যাদি।
খ. ব্যবহারিকঃ ভালভাবে মনযোগ না দেয়া, একই বস্তুর দিকে দীর্ঘক্ষন তাকিয়ে থাকা, আই কন্ট্যাক না রাখা, ব্যাবহারগত সমস্যা,নিজের সাথে কথা বলা, অত্যাধিক জেদ ধরা, বসে বসে দোল খেতে পছন্দ করা ইত্যাদি।
গ. দৃষ্টিগতঃ চোখে এলার্জি, সবসময় চোখ চুলকানো, ঠিকমত দেখতে না পারা, ১২ মাস হওয়ার পরেও কোন বস্ত্য ঠিকমত ধরতে না পারা।
ঘ. শ্রবণগতঃ খুব জোরে বা অনেক আস্তে আস্তে কথা বলা, নাম ধরে ডাকার পরেও সাড়া না দেয়া, কান খুব ছোট, কোন কিছু বলা হলে বুঝতে না পারা এবং তাকিয়ে থাকা ইত্যাদি।
ঙ. দৈনন্দিন কাজকর্মজনিতঃ দাঁত ব্রাশ করতে না পারা, জামা কাপড় পরতে না শেখা, নিজে নিজে খেতে না পারা, বোতাম লাগাতে ও খুলতে না পারা, জুতার ফিতা বাঁধতে না পারা, চেইন বন্ধ খুলতে না পারা, চুল আচঁড়াতে না পারা, গোসল করতে না পারা ইত্যাদি।
চ. পড়াশোনা সংক্রান্তঃ লিখতে না পারা, লিখার সময় অনেক বেশি চাপ দেয়া যাতে খাতা ছিঁড়ে যায়, পড়তে না পারা, বাক্য ঘটন করতে না পারা, বানান করে পড়তে না পারা, ৬ কে ৯ পড়া, স কে ি পড়া, ন কে ফ পড়া ইত্যাদি।
ছ. কথা বলা সংক্রান্তঃ তোতলামো, শব্দ পুরো উচ্চারন করতে না পারা, ঠিক সময়ে কথা বলতে না শেখা ইত্যাদি।
প্রঃ ডেভেলপমেন্টাল ডিলে (বিলম্বিত বিকাশ) এবং অকুপেশনাল থেরাপীর ভূমিকা কি?
উঃ কোন শিশুই শিখতে শিখতে খেলে না, ওরা খেলতে খেলতে শিখে। এটাই শিশুর কাজ। শিশুদের একমাত্র কাজ হল খেলা করা। এই খেলা করার মাধ্যমেই শিশু তার প্রয়োজনীয় কাজ গুলি শিখে থাকে। এই মূলনীতির উপর ভিত্তি করেই অকুপেশনাল থেরাপীষ্ট এইসব শিশুদের সাহায্য করে থাকেন। তাই যখন কোন শিশু বিলম্বিত বিকাশের জন্য শিশুর কাজ গুলি করতে অসুবিধা হয় তখন অকুপেশনাল থেরাপীষ্ট কাজ শুরু করেন। শিশুর হাঁতের লেখার সমস্যা, শারীরিক গঠনের সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে থাকেন। শিশুদের বিভিন্ন ডেভেলপমেন্টাল থেরাপী প্রদান করে থাকেন একজন অকুপেশনাল থেরাপীষ্ট। যাতে করে শিশুর সঠিক শারীরিক বিকাশ ঘটে।
বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট প্রটোকল যেমন- এনডিটি (নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল থেরাপী), রুডস এপ্রোচ পিএনএফ ইত্যাদি। এছাড়াও দৈনন্দিন কাজের নানা সমস্যার জন্য খেলা কে মাধয়ম হিসেবে ব্যবহার করে নানাবিধ থেরাপী প্রদান করে থাকেন।
এছাড়া বিভিন্ন ডিভাইস যেমন- স্পেশাল সিটিং, স্পিøন্ট, রাইটিং স্পিøন্ট, গ্রাস্প এক্সারসাইজ প্রোগ্রাম, রাইটিং ট্রেইনিং, প্রোপিওসেপটিভ ফ্যাসিলিটেশন, ভিবিন্ন থেরাপী প্রদান করে থাকেন যাতে করে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ত্বরান্বিত হয় এবং শিশু স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
শিশুর সঠিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা, পোশ্চারাল এবনর্মালিটি থাকলে তা ঠিক করা, শিশুর আশেপাশের পরিবেশ শিশুর উপযোগী করে গড়ে তোলা ইত্যাদি কাজ একজন অকুপেশনাল থেরাপীষ্ট করে থাকেন।
ষ তারিকুল ইসলাম সজীব
অকুপেশনাল থেরাপীষ্ট
সোসাইটি ফর দি ওয়েলফেয়াল ওফ দি অটিস্টিক চিলড্রেন (সোয়াক)
ফোনঃ ০১৭১১৯৪৯৪০০
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।