Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশের এএসপিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

| প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর রূপনগর বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে হাইওয়ে পুলিশের এএসপি মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১১ টার দিকে বিরুলিয়া ব্রিজের কাছে বেড়িবাঁধের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। রূপনগর থানার ওসি (তদন্ত) আকতারুজ্জামান ইলিয়াস বলেন,তার গলায় কালো দাগ রয়েছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
ওসি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি একটি হত্যাকান্ড। তবে কী কারণে, কারা এ কাজ করেছে সে রহস্য উদঘাটনে তদন্ত করা হবে। কে বা কারা এএসপি মিজানুর রহমানকে হত্যা করেছে এব্যাপারে তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কিছু জানাতে পারেননি। পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মিজানুর রহমান গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে উত্তরার উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের ৩৮ নম্বর বাড়ি থেকে বের হন। এরপর কোন এক সময়ে তিনি হত্যাকান্ডের শিকার হন। পরিবার জানায়, তিনি কর্মস্থল সাভারের উদ্দেশ্যে তিনি বাসা বের হয়েছিলেন। এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদার এক বছর ধরে হাইওয়ে পুলিশের সাভার সার্কেলে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পুলিশ জানায়, গতকাল সকালে ভেড়িবাঁধের বোটক্লাব এলাকায় রাস্তার পাশে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ তার লাশের সঙ্গে থাকা দু’টি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তার পরিচয় উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এছাড়া ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি, র‌্যাব, পিবিআইসহ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এএসপি মিজানুর রহমানের নামে অফিসিয়াল কোনও গাড়ি ইস্যু করা ছিল না। একারণে তিনি ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার নিয়ে অফিসে যেতেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাইভেট কারটি তার বাড়ির গ্যারেজেই রয়েছে। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগের ভেতরে পুলিশের ইউনিফর্মের শার্ট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি অফিসে গিয়ে ইউনিফর্মের শার্ট পড়তেন। কিন্তু গাড়ি ছাড়া তিনি কেন বের হলেন তার কোন উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, মিজানুর রহমানের লাশ পাওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যদের জানানো হলেও তার স্ত্রী বা সন্তানের কেউ ঘটনাস্থলে আসেননি। এই বিষয়টি সন্দেহজনক। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার কোন ঝামেলা ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে সিআইডি’র ক্রাইসসিন বিভাগ হত্যা সূত্র ও অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করেছে। গতকাল বিকালে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে  পাঠানো হয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, নিহত মিজানুর রহমান তালুকদারের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল এলাকার আলিভুখা গ্রামে। ঢাকার উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের ৩৮ নম্বর বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতেন তিনি। ১৯৮৯ সালে এসআই হিসেবে পুলিশে যোগদান করেন মিজানুর রহমান। তিন বছর আগে এএসপি হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। এর আগে তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্ত্রীর নাম শাহানা পারভিন। দুই সন্তানের জনক তিনি। তার বড় মেয়ে সুমাইয়া উত্তরার একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছেন। ছেলে মুশফিক প্রথম শ্রেনিতে পড়ে। নিহত পুলিশ কর্মকর্তার ভাগ্নে শামীম শেখ জানান, তারা বুঝতে পারছেন না কে বা কারা তার খালুকে হত্যা করেছে। তার খালুর সঙ্গে কারো কোন শত্রæতা ছিল কিনা তা তারা বলতে পারছেন না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ