পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমার ছেলেকে তো আর ফেরত পাবো না, এজন্য বিচার চাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আমার একটাই কথা ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমার মৃত্যুর আগে হলেও দেখে যেতে চাই সাগর-রুনির হত্যাকারীদের বিচার। আমি এখন পর্যন্ত আমার ছেলের কবর জিয়ারত করতে যাইনি। প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যেদিন আমার ছেলের হত্যাকারীদের দেখবো, বিচার দেখে যেতে পারবো, ওইদিন কবর জিয়ারত করবো। এর আগে যদি আমার মৃত্যুও হয়, তবুও হক। এরপরেও খুনিদের না দেখে আমি ছেলের কবর জিয়ারত করতে যাব না। ছেলের খুনের কথা স্মৃতিচারণ করে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সাংবাদিক সাগর সরওয়ার মা সালেহা মনির। তিনি বলেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ঘটনাস্থলে এসে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টার ফলাফল ১১ বছর পরও শূন্য রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ১১ বছর ধরে চার্জশিট জমা দিতেই পারলেন না আক্ষেপ করে তিনি বলেন, একের পর একের মামলার তদন্ত আসে আর যায়, কিন্তু চার্জশিট জমা হয় না। করোনাভাইরাসের আগে এক র্যাব কর্মকর্তা যোগাযোগ করেছিলেন, এর বাইরে গত ২/৩ বছর ধরে আর কেউ যোগাযোগ করেননি।এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রী চাইলে সব সম্ভব। উনি বললেই সব হবে।
অন্যদিকে সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনী হত্যাকাÐের দীর্ঘ ১১ বছর পার হলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদনই জমা না দেয়ায় চরম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতারা। নেতারা বলেন, সাগর-রুনীর হত্যার পর থেকে সাংবাদিক সমাজ দোষীদের চিহিৃত করে বিচারের দাবিতে সোচ্চার রয়েছে। এই নির্মম হত্যাকাÐের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ডিআরইউ ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ডিআরইউ চত্বরে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী হত্যার ১১তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাজে বক্তারা এসব কথা বলেন। ডিআরইউ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী বলেন, সাগর-রুনী হত্যার পর ডিআরইউ সকল সাংবাদিক সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং এই হত্যার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল কর্মসূচি পালন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কিন্তু এই হত্যার বিচার এখনো হয়নি। এই হত্যার তদন্ত করছে র্যাব। র্যাব আদালতের কাছে ৯৫ বার সময় চেয়েছেন। আদালত তাদেরকে সময় দিয়েছেন। কিন্তু র্যাব যদি না পারে তাহলে উনারা আদালতকে বলুক যে তারা পারছেন না।
প্রতিবাদ সমাবেশে ডিআরইউ সহ সভাপতি দীপু সারোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক মঈনুল আহসান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক কাওসার আজম, নারী বিষয়ক সম্পাদক মরিয়ম মনি সেঁজুতি, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী বোরহান উদ্দিন, ডিআরইউ’র স্থায়ী সদস্য কাজী জাহিদুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সাগর-রুনি হত্যা মামলায় সর্বশেষ গত ৪ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৩ ফেব্রæয়ারি পরবর্তী তারিখ ঠিক করেন। এখন পর্যন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯৫ দফা সময় নিয়েছে তদন্ত সংস্থা।
২০১২ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি মামলাটি তদন্তের জন্য প্রথম ডিবি উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলম তদন্ত ভার নেন। এরপর ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ সালের ২ ফেব্রæয়ারি, ওই বছরের ৭ জুন, ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর ও সর্বশেষ ২০১৭ বছরের ২১ মার্চ তদন্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তদন্ত অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিটি প্রতিবেদনে প্রায় একই ধরনের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের বছর ১১ ফেব্রæয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুনি নিজ ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ঘটনাস্থলে এসে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু গত ১১ বছরে খুনি তো দূরের কথা মামলার তদন্ত প্রতিবেদনই দাখিল করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।