Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফিরে দেখা স্বাধীনতার মাস

প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফারুক হোসাইন : আজ অগ্নিঝরা মার্চের অষ্টম দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিকামী বাঙালির আন্দোলন আরও দুর্বার হয়ে ওঠে। আগের দিন ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সারাদেশ। দিন যত যাচ্ছে ততই পরাধীনতার হাত থেকে মুক্তির জন্য উন্মুখ বীর বাঙালিদের আন্দোলনে যোগ হতে থাকে নতুন মাত্রা। যে কোন মূল্যে স্বাধীনতা অর্জনের স্বপ্ন দেখতে থাকেন তারা। আর এর  সাথে প্রেরণা হিসেবে যোগ হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। ’৭১ এর এই দিনে সকাল সাড়ে ৮টায় শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ সম্প্রচারের মধ্য দিয়ে অধিবেশন শুরু হয় ঢাকা রেডিওর। বেতারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়ে রেডিও পাকিস্তান ঢাকার নাম পরিবর্তন করে ঢাকা বেতার কেন্দ্র নাম দিয়ে অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করেন। টেলিভিশন ও রেডিওতে পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত ও তাদের পতাকা প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। ডাকসুর নেতা আসম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন এবং ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এক যুক্ত বিবৃতিতে স্বাধীনতা আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাংলার সংগ্রামী ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানান। সশস্ত্র বাহিনীর গুলিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে অপর এক বিবৃতিতে সকল সরকারী- বেসরকারী ভবনে অনির্দিষ্টকালের জন্য কালো পতাকা উত্তোলনেরও আহ্বান জানান বিপ্লবী এই ছাত্রনেতারা। ওয়ালীপন্থী ন্যাপের প্রাদেশিক সভাপতি প্রফেসর মোজাফফর আহমদ, জাতীয় লীগ প্রধান আতাউর রহমান খান, মুসলিম লীগ নেতা খান এ সবুর, পিডিপির সভাপতি নুরুল আমীনসহ পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বগণ পৃথক বিবৃতিতে ৭ মার্চ ঘোষিত সব শর্ত মেনে নেয়ার জন্য পাকিস্তানী প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার খানের প্রতি আহ্বান জানান। এই দিকে সমগ্র দেশে শুরু হয় সংগ্রাম পরিষদ গঠনের তৎপরতা। নেতৃবৃন্দের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন পাড়া, মহল্লা, ছাত্রাবাস, বাসভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ বিবৃতিতে ৭ মার্চের ভাষণের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ব্যাংকগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর বেতন ও মজুরি প্রদান, নগদ জমা এবং এক হাজার টাকা পর্যন্ত প্রদান করতে পারবে। তবে স্টেট ব্যাংক বা অন্য কোন মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের বাইরে টাকা পাঠানো যাবে না। এছাড়া দেশের ভেতর চিঠিপত্র, টেলিগ্রামের জন্য ডাক ও তার বিভাগ খোলা থাকবে। আর পুলিশ পালন করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। অন্যদিনের মতো আধাসরকারী প্রতিষ্ঠানে হরতাল অব্যাহতভাবে পালন করা হবে। আরেকটি বিবৃতিতে তাজউদ্দিন আহমদ সামরিক কর্তৃপক্ষের প্রেসনোটের প্রতিবাদ জানিয়ে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিরে দেখা স্বাধীনতার মাস


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ