পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ষ মোরা ও নিম্নচাপে বর্ষণ জোয়ার পাহাড়ি ঢল-ধস পানিবদ্ধতা
ষ বিপর্যস্ত যানবাহন চলাচল
শফিউল আলম : বন্দর নগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত রূপ নিয়েছে অধিকাংশ রাস্তাঘাট সড়ক। সর্বত্র বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচল। মাহে রমজানে বিশেষত পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কর্মমুখী ও ব্যস্ত মানুষজনের প্রতিদিনকার দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। অনেকগুলো সড়ক যান চলাচলের অনুপযোগী, কোনো কোনো সড়ক আংশিক বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ধসে গেছে সেতু-কালভার্ট। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ নগরী ও জেলার অত্যধিক বিধ্বস্ত, নাজুক সড়কগুলো জরুরিভিত্তিতে মেরামতের কাজ শুরু করেছে। তবে ঘন ঘন বৃষ্টিপাতের কারণে মেরামত কাজ টেকসই রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান দুই সংস্থার প্রকৌশলীরা। তবে বিধ্বস্ত সড়ক, রাস্তাঘাটে বিক্ষিপ্তভাবে খানাখন্দে কিছু ইট-সুরকি ও বালি ফেলে জোড়াতালি মেরামতের নামে ঠিকাদাররা তড়িঘড়ি করে দায়সারা কাজ সারছেন এবং সংস্কার কাজ মানসম্পন্ন হচ্ছে না এমনটি অভিযোগও বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া গেছে।
গত ৩০ ও ৩১ মে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’, এরপর ১১ ও ১২ জুনের মৌসুমি নিম্নচাপের পিঠে করে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে টানা দুই সপ্তাহ অতিবর্ষণ, প্রবল সামুদ্রিক জোয়ার, ভয়াবহ পাহাড়ি ঢল-ধস ও পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে এখনও ঢল ও জোয়ারের পানি পুরোপুরি নেমে যায়নি। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের সড়ক অবকাঠামো ভেঙেচুরে বেহাল অবস্থায় পৌঁছে গেছে। এর আগে যেসব সড়ক রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভরা ছিল সেগুলো সময়মতো সংস্কার না হতেই এবারের বৈরী আবহাওয়ায় আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বর্তমানে জেলা ও মহানগরীতে অনেকগুলো সড়ক, রাস্তাঘাট যানবাহন চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে গেছে। খানাখন্দে ভরা সড়কে অনেক জায়গায় দিনে-রাতে যানজট লেগে আছে। ঘটছে দুর্ঘটনাও। বিধ্বস্ত সড়কে চলতে গিয়ে বাস-মিনিবাস, টেম্পু, লেগুনা, সিএনজিসহ যানবাহনের যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।
সর্বশেষ মোরা ও মৌসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল জোয়ার, টানা বর্ষণ, ঢল ও পানিবদ্ধতার কারণে সড়ক রাস্তাঘাটের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। বন্দরনগরীর আগ্রাবাদ-বারিক বিল্ডিং, বন্দর-সল্টগোলা-সিমেন্ট ক্রসিং হয়ে কাটগড় বাজার-সী বীচ ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়ক, অন্যদিকে চকবাজার-কাপাসগোলা-বাদুরতলা, বহদ্দারহাট-সিএন্ডডবি-চান্দগাঁও হয়ে কাপ্তাই রাস্তার মাথা ও কালুরঘাট সড়ক, মুরাদপুর-বিবিরহাট-অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়ক, নিমতলা হয়ে পোর্ট কানেকটিং রোডসহ চট্টগ্রাম মহানগরীর অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বর্তমানে বলতে গেলে বিধ্বস্ত অবস্থা। এসব সড়কের পিচ ঢলাই অনেক আগেই উঠে গিয়ে ইতোমধ্যে ইটের খোয়া, সুরকি, ছাল-বাকল পর্যন্ত উঠে গেছে। ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তাঘাটের উপর। আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, আগ্রাবাদ সিডিএ, হালিশহর এলাকার সড়কগুলো রীতিমতো ভেঙেচুরে খানাখন্দে বিধ্বস্ত। অনেক জায়গায় সড়কের উপর কাদাপানি, জঞ্জাল জমে আছে। নগরীর সবচেয়ে কর্মচঞ্চল এলাকাগুলোর মধ্যে চকবাজার, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, শোলকবহর, ষোলশহর, নাসিরাবাদ, বাকলিয়া, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, রাজাখালী, আগ্রাবাদ, সাগরিকা, হালিশহর, পতেঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক রাস্তাঘাটের আগের বিধ্বস্ত অবস্থা আরও নাজুক হয়ে গেছে। এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন প্রতিদিন লাখ লাখ কর্মমুখী মানুষ যাত্রী সাধারণ। যাত্রী সাধারণের সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
নগরী ছাড়াও জেলা চট্টগ্রামের বিশেষত হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, মিরসরাই এলাকায় অতিবর্ষণ, জোয়ার, পাহাড়ি ঢল-ধসে অধিকাংশ সড়কে গভীর খানাখন্দ, বিপজ্জনক ফাটল, ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এবার বর্ষা মৌসুম শুরু না হতেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় চট্টগ্রাম অঞ্চলে সড়ক-মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়কসহ স্থানীয় রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নগরী ও বৃহত্তর জেলার ক্ষত-বিক্ষত এসব সড়ক, মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত প্রায়। জরাজীর্ণ সড়কে যানজট লেগেই আছে। রমজানে ঘর ও কর্মমুখী অগণিত যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগের মাত্রা বেড়েই চলেছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, আগের খানাখন্দ মেরামত কাজ চলাকালীন ফের অতিবর্ষণ, জোয়ার ও পানিবদ্ধতার মহানগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের অন্তত ১২০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়ক মেরামত বা সংস্কারের জন্য জরুরি বিবেচনায় প্রকল্প নেয়া হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের কাজও চলছে। ইতোমধ্যে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নির্দেশে সড়ক রাস্তাঘাট জরুরি মেরামত ও সংস্কার কার্যক্রম তদারকির জন্য ৫টি বিশেষ টিম নিয়োজিত করা হয়েছে। ঈদের আগেই সড়কগুলো মেরামত অনেকটা সম্পন্ন করতে চায় চসিক। কিন্তু মেরামত চলাকালীন ঘন ঘন বৃষ্টিপাতের কারণে কাজকর্মে ব্যাঘাত হচ্ছে। তাছাড়া বৃষ্টির বাধায় সংস্কার কাজও তেমন টেকসই হচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।