পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছিম উল আলম : বরিশালের ঐতিহ্যবাহী ‘হীম নীড়’এর পুকরে এবারো বিপুল পদ্ম ফুল সব মানুষের মনে আনন্দের শিহরন জাগাচ্ছে। নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যান ও মডেল স্কুল সংলগ্ন বিআইডবিøউটিএ’র হীম নীড় ও ‘চাড়ার বাংলো’ বা ‘চান বাংলো’ সংলগ্ন পুকরে সুদীর্ঘকাল ধরে বিপুল স্বেতপদ্ম ফুটছে।
তৎকালীন বৃটিস যুগে ‘ইন্ডিয়ান জেনারেলর নেভিগেশন-আইজিএন’ কোম্পানী তার পূর্ব বাংলার সদর দফ্তর বরিশালে স্থাপন করে। সে সময় বর্তমান বরিশাল ক্লাব থেকে শুরু করে পূর্বে বাঁধ রোড, দক্ষিণ ও পশ্চিমে রাজা বাহাদুর রোড সহ বাঁধ রোডের পূর্ব পাশে কির্তনখোলা নদী পর্যন্ত প্রায় ৪০একর জমি নিয়ে কোম্পানীর সদর দফ্তর ও মেরিন ওয়ার্কসপ স্থাপন করা হয়। আইজিএন কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার-এর বাসভবন ছিল বর্তমান ‘হীম নীড়’ এ। একই এলাকার মধ্যে লোহার খুটির ওপর কাঠের পাটাতন ও টালির ছাদের ঘরটিকে বলা হত ‘চান বাংলো’ বা ‘চাড়ার বাংলো’ হিসেবে। এটি মূলত কোম্পানীর বৃটিস কর্তাদের পরিদর্শন বাংলো হিসেবেই ব্যবহ্রত হত।
ঐ বাসভবন ও চান বাংলো এলাকার অভ্যন্তরে একটি সুদৃশ্য পুকুর খনন করা হয়। যাতে ঘাটলা সহ সুইমিং পুলের আদলে অবকাঠামোও স্থাপন করা হয়েছিল। পুকুরের পশ্চিম পাড়ে কাঠ গোলাপের গাছ সহ নানা বাহারী ফুলের বাগানটি ছিল পুরো এলাকা যুড়ে। বৃটিস সাহেবরা পুকুরটিতে পদ্ম ফুলের চাষ করেন।
সে থেকে বরিশালের হীম নীড়ের পুকরের পদ্ম ফুলের নাম রয়েছে এ নগরী যুড়ে। নয়নাভিরাম এ ফুলের পুকুর দেখতে আজো বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছুটে আসেন। বছরের প্রায় অর্ধেক সময় যুড়েই পুকুরটিতে পদ্ম ফুলের সমারহ সবার চোখ ও মন যুড়ায়। বছর দশেক আগে একবার বিআইডবিøউটিএ’র একজন নির্বাহী প্রকৌশলী কতৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে এপুকেরর পদ্ম ফুলের আবাস বিনাশ করেন। কিন্তু প্রকৃতি তার আপন মহিমাতেই সে বাগান আবার গড়ে তোলে। বছর তিনেকের মধ্যে পুকুরটি আবার পদ্ম ফুলের বাগানে পরিনত হয়।
দেশ বিভাগের পরে পাকিস্তান আমলে উত্তরাধিকার সূত্রে হীমনীড়-এর মালিকানা লাভ করে পাকিস্তান রিভার স্টিমার্স-পিআরএস। কিন্তু ১৯৫৮সালে পূর্ব পাকিস্তান ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথারেটি-ইপিআইডবিøউটিএ গঠিত হবার পরে হীম নীড় সহ পাশের মেরিন ওয়ার্কসপ সহ পুরো ৪০একর সম্পত্তি তাদের কাছে হস্তান্তর করে সরকার। সে থেকে হীমনীড় মেরিন ওয়ার্কসপের ম্যানেজার-এর বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হলেও ১৯৮৪সালে বিআইডবিøউটিএ’র সদর দফ্তর বরিশালে স্থানন্তরের পরে এবাড়ীটিতে কতৃপক্ষে চেয়ারম্যান ও চান বাংলোতে সচিব-এর দফ্তর স্থাপন করা হয়। কিন্তু এর পরে ধীরে ধীরে অলিখিতভাবে কতৃপক্ষের সদর দফ্তর বরিশাল থেকে হারিয়ে যায়।
হীম নীড়-এর ভবনটি কতৃপক্ষের বরিশাল বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলীল দফ্তরের রূপান্তর করা হয়। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকার পরে বছর কয়েক আগে চান বাংলো’টিও সংস্কার করে পুনরায় চালু করা হয়েছে। কিন্তু এসব কিছু ছাপিয়ে হীম নীড়-এর পদ্ম পুকুর সবার নজর কাড়ে এখনো। এখানে মহান আল্লাহ রাবাবুল আল আমীনের অপর দান ও মহিমা দেখে সকলেই প্রকৃতির রাজ্যে অবগাহন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।