পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
আইয়ুব আলী : বন্দরনগরী চট্টগ্রামে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে অভিজাত মার্কেটগুলোতে দিনরাত চলছে কেনাকাটা। ঈদ উপলক্ষে নগরীর অভিজাত মার্কেট ও শপিংমলগুলো দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে। ক্রেতাদের কেনাকাটার সুবিধার্থে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা, পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পাশাপাশি অনিয়ম রোধে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তদারকি করা হচ্ছে। দোকান, শো-রুমগুলোর বাইরে চাকচিক্য ছাড়াও ভেতরেও বাহারি পণ্যে নতুনত্ব আর আভিজাত্যের ছোঁয়া লেগেছে।
ঈদকে ঘিরে ভারতীয় পণ্যে সয়লাব হয়ে গেছে মার্কেটগুলো। মহিলাদের পছন্দ ভারতীয় সিল্ক, কাতান, জর্জেট, টিসু। এছাড়া দেশীয় কাপড়ের মধ্যে রয়েছে এ প্লাস, উন্নতমানের সুতি শাড়ি সিলপি। দোকানীরা জানান, শাড়ির চাইতে থ্রি-পিসের চাহিদা বেশি। এখন থ্রি-পিস, থান কাপড় ও সিট কাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিশ রমজানের পর শাড়ির চাহিদা বাড়বে জানান রেয়াজুদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিন।
ছয় থেকে চৌদ্দ বছরের শিশুদের এবারের পছন্দের পোশাক হচ্ছে পঞ্চু, লাসা, গাউন। এবার এসব পোশাক বোম্বের বেস্ট কালেকশান বলে জানান নগরীর নিউমার্কেটের (বিপণি বিতান) এহসান শপের মোহাম্মদ কবির। এছাড়া বাচ্চাদের পছন্দের পোশাকের মধ্যে রয়েছে শেরওয়ানী সেট ও কটি শার্ট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মেয়েদের দেশি ক্যাপটপ মিলবে ১,৫০০ থেকে আড়াই হাজারের মধ্যে, পার্টি ফ্রক এক থেকে পাঁচ হাজারের মধ্যে, লং ফ্রক ও গাউন দুই থেকে আট হাজারের মধ্যে, ইন্ডিয়ান আকর্ষণীয় ডিজাইনের পঞ্চু চার থেকে আট হাজারের মধ্যে এবং ছেলেদের কটি শার্ট ও গেঞ্জি এক থেকে দুই হাজারের মধ্যে এবং নতুন আসা বাচ্চাদের প্রিন্স কোট, শেরওয়ানি ও পাঞ্জাবি এক থেকে সাড়ে তিন হাজারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
ক্রেতাদের চাহিদায় প্যান্টের কাপড়ের মধ্যে রয়েছে রায়মন্ড, বিমল, সিয়ারাম, গোয়ালিউ এবং শার্টের মধ্যে রয়েছে সেঞ্চুরী। বিপণি বিতান দোকান কর্মচারী সমিতির কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, শাড়ি, রেডিমেট, থান কাপড়ের ৯০ শতাংশই ইন্ডিয়ান। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা ঈদের আগে এসব কাপড় কালেকশন করি।
ক্রেতাদের অনেকে সপরিবারে দিনে আবার কেউ রাতে নগরীর পছন্দের মার্কেটে ছুটছে ঈদের কেনাকাটা করতে। এ কেনাকাটায় উচ্চবিত্তরা সবচেয়ে এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে নেই নগরীর মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্তরা। সবাই যার যার সাধ্য অনুযায়ী নেমে পড়েছে ঈদের বাজারে। ব্যবসায়ীদের দেয়া থোক হিসাব অনুযায়ী, চট্টগ্রাম মহানগরীর ছোট বড় প্রায় ৪ শতাধিক মার্কেট-শপিংমলে প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে কয়েকশ’ কোটি টাকা। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে নগরীর প্রতিটি বিপণি বিতানে ক্রেতাদের প্রচন্ড ভিড় বাড়ছে। শুধু ঈদকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে উপহার সামগ্রী, পোশাক ও খাদ্যদ্রব্যের মৌসুমি স্টল।
পরিবার নিয়ে কেনাকাটার পাশাপাশি বাচ্চাদের বিনোদনে বিপণী বিতানের দু’টি চিলড্রেন পার্ক করা হয়েছে। ক্রেতাদের কেনাকাটার স্বাচ্ছন্দ্যবোধের কোন কমতি নেই বিপণী বিতানে। বিপণী বিতানের ৫০৭টি দোকান-শোরুমে নামিদামি সব প্রতিষ্ঠানের পণ্য রয়েছে। ঈদে দেশীয় শাড়ির প্রতি সব বয়সী মেয়েদের আগ্রহ বেশি। ঢাকাই জামদানি ও মসলিন জামদানি তিন থেকে ১৫ হাজারের মধ্যে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ভারতীয় শিপন জর্জেটের পার্টি শাড়িও সাত থেকে ১৫ হাজারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
সুলভ মূল্যে মানসম্মত দেশি কাপড়ের পাঞ্জাবির বিপুল সম্ভার ভিআইপি পাঞ্জাবি হাউস। সূতির কাপড়ে দেশি হস্তশিল্প, কারচুপিসহ নতুন নতুন শট ও লং পাঞ্জাবিগুলো বিক্রি হচ্ছে এক থেকে পাঁচ হাজারের মধ্যে। নতুন আসা ভারতীয় শেরওয়ানি আর বাহারি কটির দিকেও ঝুঁকছে ক্রেতারা।
ঈদে যতরকম শাড়ি বিক্রি হয় তার মধ্যে বেনারসী কাতানের বিক্রি সর্বোচ্চ। সব বয়সী মেয়েদের পছন্দের দেশীয় ঐতিহ্যবাহি শাড়ি চার থেকে ১২ হাজারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ভারতীয় লেহেঙ্গা, কাঞ্চিবরনের পাশাপাশি বেঙ্গালোর কাতান আর সাউথ কাতানের চাহিদাও এখন বাড়ছে। তিন থেকে ১৫ হাজারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে ভারতীয় শাড়িগুলো।
অন্যদিকে ছেলেদের ভিড় হ্যান্ডি বাজার, বøু মুন, শৈল্পিকসহ নামি-দামি শোরুমগুলোতে। একদিকে গরম, আর অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমের কথা ভেবে এবার হ্যান্ডিবাজারে ছেলেদের জন্য সুতির কাপড়ের ড্রেসের কালেকশান বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি নিজস্ব ব্র্যান্ডের জিন্স ও সুতীর প্যান্ট তরুণদের বেশ পছন্দনীয় হয়ে উঠেছে। বিপণী বিতানের নীচতলায় বøু মুনেও সুতির পাঞ্জাবির সাথে নতুন ডিজাইনের টুয়েল প্যান্ট তরুণদের মন কেড়েছে।
নগরীর মিমি সুপার মার্কেট, সানমার ওস্যান সিটি, জহুর মার্কেট, টেরিবাজার, আমিন সেন্টার, আফমি প্লাজা, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর মার্কেট, ইপিজেড বে-শপিং কমপ্লেক্স, ইউনেস্কো মার্কেট, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স, ঝনক প্লাজা, স্টীল মিল বাজারের মহাজন গোল্ডেন টাওয়ার, স্বজন সুপার মার্কেটসহ অভিজাত মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। সকাল থেকে রাত অবধি এসব মার্কেটসমূহে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ কেনাকাটা করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।