নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৬৪/৭
ভারত : ৪০.১ ওভারে ২৬৫/১
ফল : বাংলাদেশ ৯ উইকেটে পরাজিত
ইমামুল হাবীব বাপ্পি : স্বপ্নের আড়ালে লুকিয়ে থাকা শঙ্কাটাই অবশেষে সত্যি হলো। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে শেষ হলো বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা। অভিজ্ঞতা আর শক্তিতে মাশরাফিদের চেয়ে বিরাট কোহলিরা যে কতটা এগিয়ে তাই-ই যেন চোখ রাঙিয়ে বলছে ভারতের ৯ উইকেটের বিশাল জয়। যে জয় তাদেরকে নিয়ে গেছে আসরের ফাইনালে। সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী পাকিস্তান।
এরপরও সাফল্য-ব্যর্থতার হিসাবে মাশরাফিদের জন্য এটি ছিল সফল একটা টুর্নামেন্ট। এই প্রথম আইসিসির কোন আসরের শেষ চারে খেলল বাংলাদেশ। কিন্তু লক্ষ-কোটি টাইগার ক্রিকেট ভক্তদের তৃষিত মত এতে ভরবে কেন? প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত জেনেও শঙ্কায় মোড়ানো একটা স্বপ্ন ঠিকই তারা পুশে রেখেছিল মনের গহীনে। শুরুতে সৌশ্য-সাব্বিরকে হারানোর পর তামিম-মুশফিকের জুটি যখন সেঞ্চুরি পার করল তখন মনে হচ্ছিল স্বপ্ন পূরণের পথেই আছে বাংলাদেশ। প্রত্যাশিত তিনশোর্ধো রানের সংগ্রহও তখন মনে হচ্ছিল খুবই সম্ভব। কিন্তু সংগ্রহের খাতায় যোগ হল মাত্র ২৬৪। বলতে গেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের স্বপ্ন শেষ ওখানেই।
এজবাস্টনের ব্যাটিং পিচে এই রানকে চ্যালেঞ্জিং ভাবার সুযোগ ছিল না। মাত্র ১৪.৩ ওভারে ৮৭ রানের উদ্বোধণী জুটিতে তা বুঝিয়ে দেন শেখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা। বল হাতে বাংলাদেশের সাফল্য এটুকুই। বাকি ১৭৮ রান করতে আর কোন অঘটনের মুখোমুখি হতে হয়নি ভারতকে। ক্যারিয়ারের ১১তম শতক পূর্ণ করে ১২৩ রানে অপরাজিত থাকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন রোহিত, দ্রæততম (১৭৫ ম্যাচে) ৮ হাজারি ক্লাবে প্রবেশের পথে ৯৬ রানে (৭৮ বলে) অপরাজিত ছিলেন কোহলি।
মাশরাফিদের প্রথম ধাক্কাটা আসে টস হেরে। টস জিতে বল বেছে নিতে তাই একদম দেরি করেনি ভারত। ভালো বোলিংয়ে অল্প রানে প্রতিপক্ষকে আটকে ফেলার পরিকল্পনাটাও তাদের সফল। শুরুর আঘাতটা ভুবেনেশ্বর কুমারের হাত থেকে আসলেও কেদার যাদবকে একটা বিশেষ ধন্যবাদ দিতে পারে ভারত। দলের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা তামিম ও মুশফিক, দুজনকেই নিজের শিকারে পরিণত করেন এই স্পিনার।
কয়েকটি ডট বলই হয়তো মাথা বিগড়ে দিয়েছিল তামিমকে। তেড়েফুঁড়ে বড় শট খেলতে গেলেন। গিয়েই জাদবের ‘শটও না আবার ফুলও না’ ধরনের বল ¯øগ সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করে হারালেন লেগ স্ট্যাম্প। সমাপ্তি ঘটল মাত্র ২১ ওভারে ১২৩ রানের অসাধারণ এক জুটির, সেঞ্চুরির দিকে এগুতে থাকা তামিমের ইনিংসও থামল ৭০ রানে (৮২ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে)। বিপর্যয়ের ওই শুরু।
জাদবের বলেই টইমিংয়ের গড়বড়ে মিডইউকেটে ক্যাচ দিলেন মুশফিক (৮৫ বলে ৬১)। এমন ক্যাচ মিস করার পাত্র কোহলি নন। ২ উইকেটে ১৫৪ থেকে মুহূর্তে বাংলাদেশের স্কোর ৫ উইকেটে ১৭৯। মাঝে সাকিবের (১৫) উইকেটটি নেন রবীন্দ্র জাদেজা, উইকেটের পিছনে ধোনির ক্যাচে পরিণত হয়ে।
এই বিপর্যয় আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। ভরসা ছিল মাহমুদুল্লাহ (২১) ও মোসাদ্দেকের (১৫) উপর। কিন্তু তারাও মাত্র ১১ রানের ব্যবধানে দুইজনকেই ফেরানোর দায়ীত্ব পালন করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। আড়াইশ পেরুনোই তখন বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্চ হয়ে দাঁড়ায়। এমন সময় আবির্ভাব ঘটে ‘ব্যাটসম্যান’ মাশরাফির। অষ্টম উইকেটে তাসকিনকে নিয়ে শেষ ৫ ওভারে অবিচ্ছিন্ন ৩৫ রানের জুটিতে দলকে মুটামুটি চ্যালেঞ্জিং স্কোর এনে দেন ‘লড়াকু’ ম্যাশ (২৫ বলে ৫ চারে ৩০)।
সৌম্যকে নিয়ে আলাদাভাবে বলার কিছু নেই। কোচ বা নির্বাচকদের ‘প্রিয়পাত্র’ হয়ে হয়তো এভাবেই চালিয়ে যাবেন তিনি। আর উপেক্ষিতই থেকে যাবেন ইমরুল কায়েস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে (দেশের মাটিতে) তার সেই প্রতিশ্রæত সেঞ্চুরি যেমন কর্তাদের মন গলাতে পারেনি। তেমনি সৌম্যের প্রতিও তানারা আশাহত হননি ধারাবহীক ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ার পরও।
স্কোরবোর্ডে কেবল ১ রান যোগ হয়েছে, প্রথম ওভার শেষ না হতেই উইকেটের পাশেও লেখা হলো ১! উইকেট? সেই সৌম্যের। ব্যর্থতার ধারা অব্যহত রেখে এদিও তিনি প্রথম ওভারেই আউট হন ভুবেনেশ্বরের বলে বোল্ড হয়ে। ৩০ রানের জুটিতে সেই সামলে না উঠতেই ভুবেনেশ্বরেরই ¯েøা বলের ধন্দে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে জাদেজাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাব্বির। এর পরেই তামিম-মুশফিকের সেই আশা জাগানো ১২৩ রানের জুটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।