Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিল্লিতে মসজিদ ভাঙচুর আতঙ্কে মুসলমানরা

| প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : উত্তর-পূর্ব দিল্লির অম্বে বিহার নামের এলাকায় সদ্য নির্মিত একটি মসজিদ গত সপ্তাহে ভেঙ্গে দেয়ার পরে সেখানকার মুসলমানরা ভয় ও আতঙ্কে ভুগছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আনুমানিক চারশ’ থেকে পাঁচশ’ লোক বাইরের এলাকা থেকে এসে ওই মসজিদটি গত বুধবার ভেঙ্গে দেয়। মসজিদটি ভাঙ্গার ঘটনাটি দেখেছেন মুশতার আহমেদ, যিনি ওই মসজিদের দুটি বাড়ি পরেই বসবাস করেন। তিনি জানান যে রমজান মাসের শুরু থেকে ওখানে নামাজ পড়া শুরু হলেও ওই দিন কিছু লোক আচমকা এসেই মসজিদটা ভেঙ্গে দিয়ে চলে যায়। তৈরী পোশাক শিল্পে ছোটখাটো কাজ করেন মুশতাক। অনেক কিছু বলতে চাইছিলেন তিনি- তবে হুমকি আসছে নিয়মিত, তাই গোটা পরিবার নিয়ে ভয়ে রয়েছেন। বিবিসি’র সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলার সময়ে মুশতাক আহমেদের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তার স্ত্রী আমিনা। মসজিদটা ভেঙ্গে দেয়ার থেকেও তার বেশী খারাপ লাগছে কোরআনের অসম্মান করাটা। ঘটনার দিন সকালে পুলিশে খবর দেয়া হয়েছিল। তারা অবশ্য এখনো টহল দিচ্ছে ওই এলাকায়। তবে আমিনা বলছিলেন যে বিষয়টা থিতু হয়ে এলে এর ফল নাকি ভুগতে হবে সবাইকে, এমন হুমকিও দেয়া হচ্ছে। ওই এলাকায় গিয়ে সংবাদদাতা জানতে পারেন বেশ কিছু মুসলমান পরিবার অম্বে কলোনি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। শাহরুখ (প্রতীকী নাম) নামে এক ব্যক্তিকে তার চুল কাটার সেলুন বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বাড়ির মালিক নাকি শাহরুখকে বলেছেন দোকান ছেড়ে চলে যেতে। এখন শাহরুখ নিজের ঘরেই সেলুনটা আবারো চালু করার কথা ভাবছেন। যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত হলো তা হচ্ছে, পূর্ব দিল্লিতে যমুনার পাড় বরাবর বস্তিগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষেরই বসবাস। সকাল হলে সবাই কাজে বেরিয়ে যান। গত বুধবারও সবাই কাজে চলে যাওয়ার পরেই ঘটনার শুরু। মসজিদ যারা ভাঙতে এসেছিল, তাদেরকে দেখেছিলেন বিমলেশ মৌর্য। চার-পাঁচশ’ লোক জড়ো হয়েছিল। ওই লোকগুলো কোথা থেকে এসেছিল বলতে পারবো না। তবে ওরাই মসজিদটা ভেঙেছে, বলছিলেন বিমলেশ। তিনি এও বলছিলেন যে, মুসলমান ভাইরা কোরআনের শপথ নিয়ে, ভেঙ্গে দেয়া মসজিদের ওপরেই একটা চাটাই বিছিয়ে নামাজ পড়ছেন। মুশতাক আহমেদ আর কলোনির অন্য মুসলমান বাসিন্দারা বলছিলেন যে মসজিদটা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল কয়েক মাস আগেই, তবে নামাজ পড়া শুরু হয় রমজান মাস থেকে। একটা ছোট মাদ্রাসাও চালানো হয় ওখানে, যাতে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া যায়। মুশতাক আহমেদ জানিয়েছেন মসজিদের জমির জন্য এলাকারই বাসিন্দা আকবর আলী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয়েছিল, আর বলা হয়েছিল যে তার প্রাপ্য টাকা-পয়সা ধীরে ধীরে মিটিয়ে দেয়া হবে। কৃষ্ণপাল শর্মা কিছুদিন আগেই বাগপত থেকে ছেলের কাছে থাকতে এসেছিলেন। তিনি স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জেনেছেন যে, ওই জমিটা কোনো সাধুবাবার ছিল। একটা শিবলিঙ্গও নাকি ছিল ওখানে। তবে ওই সাধু হরিদ্বারে গেছেন আর সেই সময়েই নামাজ পড়া শুরু হয়। তবে সাব্বির নামে একজন বলছিলেন, যদি আমাদের হিন্দু ভাইদের আপত্তি থাকতো, তাহলে তো তারা সেটা আগেই বলতে পারতেন। ভেঙ্গে দেয়া হলো কেন? বিমলেশ মৌর্য অবশ্য স্পষ্টই বললেন যে এলাকার লোকজন চাইছিলো না যে ওখানে একটা মসজিদ হোক। আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপে এমন মেসেজও ছড়ানো হচ্ছে যে অম্বে কলোনীর ওই জায়গায় ৮-১০ ঘর মুসলমান থাকে, তাই সেখানে কেন একটা মসজিদ বানানো হবে। সেসব মেসেজের মাধ্যমে হিন্দুদের বিবিসি।



 

Show all comments
  • mamun ১৬ জুন, ২০১৭, ৩:০২ এএম says : 0
    khub kharap kotha?
    Total Reply(0) Reply
  • Ashikur Rahman Ashik ১৬ জুন, ২০১৭, ১:৪৮ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের হিন্দুরা যেরকম শান্তিতে থাকে মসুলমানরা তেমন থাকতে পারেনা, অথচ তারা সংখালঘু। আর ভারতের সংখালঘু মুসলমানদের দিন কাটে সর্বদা আতংকে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুসলমান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ