রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
অভ্যন্তরীণ ডেস্ক : গত কয়েকদিনের টানা প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও মিরসরাইয়ের রেল লাইন, মহাসড়ক ছাড়া অধিকাংশ সড়ক, অধিকাংশ গ্রাম হাট-বাজারসহ নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের সাংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল লাইনের মীরসরাই সদর সংলগ্ন আমবাড়িয়া গ্রামের কিছু অংশে ছরার পানি উপচে উঠে প্রায় ১ ঘন্টা হাটু পরিমান পানি ছিল রেল লাইনে। এসময় কয়েকটি ট্রেন থেমে থেমে বিলম্বে পারাপার হয়।
উপজেলার কাঁচা,পাকা, আধাপাকা রাস্তাসহ গ্রামীণ সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় যানবাহন ও জন চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তির কবলে পড়েছে সকলে। আবার কোন কোন অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ ও বহু মৎস ঘের ।
নিজামপুর ডিগ্রী কলেজ এর অধ্যাপক আশরাফ হোসেন জানান, এই প্রথম কলেজের অভ্যন্তরে অফিস কক্ষ সহ পুরো ক্যাম্পাস হাটু পরিমান পানিতে প্লাবিত হয়। অনেক মূল্যবান কাগজপত্র ও ভিজে যায় বলে জানান তিনি। বড়তাকিয়া জাহেদিয়া মাদ্রাসা, পূর্ব খৈয়াছরা, পশ্চিম খৈয়াছরা ফেনাফুনি গ্রাম সম্পূর্ণভাবে জলাবদ্ধতার শিকার হাজার হাজার পরিবার।
ভুক্তভোগি এলাকাবাসী জানান গতকাল মঙ্গলবার ভোররাত থেকে আকস্মিক টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলেই্ এই দূর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল রুটের বড়তাকিয়া ষ্টেশান মাস্টার আব্দুল বাতেন জানান আমবাড়িয়া অংশে রেল লাইন গত কয়েকদিন পূর্বের মতো আবারো ঢুবে গেলে ও ঘন্টাখানেক পর পানি কমে গেলে স্বাভাবিক হয়ে আসে। এসময় ভোর ৭টার ডেমু ট্রেনটিসহ কয়েকটি ট্রেন ধীরগতিতে পারপার হতে হয়েছে। উপজেলার ইছাখালী, কাটাছড়া, সাহেরখালী, মিঠানালা, ওয়াহেদপুরসহ মঘাদিয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার ১২নং খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ফেনাপুনী গ্রামে পানিবন্দী হয়ে জীবন যাপন করছে শতাধিক পরিবারের লোকজন।
অপরদিকে, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে পাহাড় ধ্বসের আতংক, আশংকা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে পাহাড়ী এলাকা করেরহাট, খৈয়াছড়া, ওয়াহেদপুর, জোরারগঞ্জ, মীরসরাই সদর ইউনিয়নের পাহাড়ীসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষের পরিবার।
পানিতে প্লাবিত ভুক্তভোগী ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মনিরুল ইসলাম তুহিন জানান পাহাড়ি ঢলে ভেঙ্গে গেছে উপজেলার গুরুত্বপুর্ণ সড়কগুলো। নিজামপুর রেল স্টেশন রেল রাস্তাসহ ৫টি গ্রামের প্রায় ও ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দী অবস্থায় জীবন যাপন করছে।
এছাড়াও প্রবল বর্ষণে উপজেলার মীরসরাই পৌরসভার প্রায় সবকটি সড়কে পানি উঠে চলাচলে বিঘœ ঘটছে। বিশেষ করে কলেজ রোড়ের অবস্থা একেবারে নাজুক। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে থৈথৈ করে সড়কটি। এতে করে আশপাশের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলার প্রায় শতাধিক খাল দীর্ঘদিন ধরে খনন এবং সংষ্কার না হওয়ার ফলে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করছে। পাহাড়ী নিকটবর্তি ছরাগুলো ও মজে যাওয়ায় দ্রæত পানি সরতে না পেওে রেল লাইন সহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট তলিয়ে যাচ্ছে। খাল পার্শ্ববর্তী হাট-বাজারগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা। এসব স্থাপনা ও দোকানপাটের কারণে বিভিন্ন খালে পানি প্রবাহে বিঘœ ঘটে। ফলে প্রত্যক বছর নিম্নাঞ্চলীয় এলাকাগুলো পানির নিচে ডুবে যায়।
সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, তিন দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সাতকানিয়ার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি ইউনিয়নের সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জানা যায় গত তিন দিন ধরে সাতকানিয়ার আশ পাশ এলাকায় ভারি বর্ষণ হয়। বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার চরতি, বাজালিয়া, ঢেমশা, ছদাহা, পশ্চিম ঢেমশা, পৌরসভার কলেজ রোড পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে উক্ত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। চরতি ইউ.পি চেয়ারম্যান রোজাউল করিম জানান টানা বর্ষণের ফলে সাঙ্গু ও ডলু নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একাদিক এলাকায় নদীর পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। চরতি ইউনিয়নের পাঁচ হাজারের অধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। সড়কের উপর দিয়ে নৌকা চলতে দেখা গেছে। এদিকে উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত সাঙ্গু ও ডলু নদীতে পাহাড়ী ঢলে ভাঙ্গনের তিব্রতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্খা করা হচ্ছে। সরেজমিনে পরিদর্শণে দেখা যায়, চরতি, আমিলাইষ, বাজালিয়া, ঢেমশা, ছদাহা, পশ্চিম ঢেমশাসহ পৌরসভার বেশ কয়েকটি সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।