Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বেনাপোল প্যাসেঞ্জার টারমিনালে সেবার নামে চার্জ আদায় ওয়াশরুম ছাড়া কোনো সুবিধা নেই

| প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


বেনাপোল অফিস ঃ বিভিন্ন সেবার (সার্ভিস) নামে ভারতগামী যাত্রীদের কাছ থেকে চার্জ আদায় করা হলেও ওয়াশরুম ছাড়া কোনো সুবিধা নেই বেনাপোলে সদ্য চালু হওয়া প্যাসেনজার টারমিনালে। তারপরও প্রত্যেক যাত্রীকে গুনতে হচ্ছে বিভিন্ন সেবার নামে ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সা করে সার্ভিস চার্জ। বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যেতে ইচ্ছুক যাত্রীদের জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক প্যাসেনজার টারমিনাল চালু করেছে। নির্মাণের প্রায় চার বছর পর গত ২ জুন বিকেলে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাহাজান খান এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এর আগে ২০১১ সালের ১৫ জানুয়ারি প্যাসেনজার টারমিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ২০১৩ সালের ২৩ আগস্ট ভবন উদ্বোধন করা হয়েছিল। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ৩ জুন সকাল থেকে এই টারমিনাল অভ্যন্তরের ছয়টি কাউন্টারের মধ্যে তিনটি চালু করা হয়েছে। যাত্রীদের কাছ থেকে পাসপোর্ট প্রতি টারমিনাল চার্জ বাবদ ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সা হারে আদায় করা হচ্ছে। এতে করে অনেক যাত্রী বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর পরিশোধ করার পর আবার কেন বাড়তি টাকা দিতে হবে? অনেক যাত্রী প্রধান সড়ক দিয়ে এসে সোজা ইমিগ্রেশনে ঢুকে পড়ছেন। তাদেরও বাধ্য করা হচ্ছে প্যাসেনজার টারমিনালে যেতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্যাসেনজার টারমিনালে যাত্রীদের কাছ থেকে চার্জ আদায়ের আগে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। টারমিনালে যাত্রীদের ওয়াশরুমের ব্যবস্থা ছাড়া অন্য কোনো সুবিধা নেই। অথচ এন্ট্রি ফি, ওয়েটিং চার্জ, সার্ভিস চার্জ, টারমিনাল চার্জ এবং এসবের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে যাত্রীদের। বিনিময়ে বসার জায়গাও পাচ্ছেন না যাত্রীরা। নেই বিশুদ্ধ পানি, হুইল চেয়ার বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র।
টারমিনাল চার্জ চালু হওয়া প্রসঙ্গে বন্দরের কম্পিউটার অপারেটর কামরুল হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) শামীম সোহানা স্বাক্ষরিত ২০১৬ সালে ডিসেম্বর মাসের ১১ তারিখে ৩৩৮ নম্বর স্মারকে প্রেরিত পত্রে বলা হয়েছে, বেনাপোল স্থলবন্দরের জন্য ২০১৭ সালের ট্যারিফ কার্যকরণ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে এই পত্র জারি হয়েছে। সে মোতাবেক ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই চার্জ আদায়ের নির্দেশ ছিল। কিন্তু অপারেশনাল কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়নি বিধায় এটি ছয় মাস বন্ধ ছিল। ৩ জুন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তা চালু করা হয়েছে।’
এদিকে ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সার রশিদ প্রদান করলেও যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৪০ টাকা হারে। এখাতে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা বাড়তি টাকা কার পকেটে যাচ্ছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে আদায়কারী বলেন, যাত্রীরা খুচরা টাকা দিতে এবং নিতে অপারগতা প্রকাশ করছে। বাড়তি টাকার কী হবে তা স্যারেরা জানেন।
ঢাকা থেকে আসা ভারতগামী যাত্রী রুমানা ইসলাম, সাদিয়া ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম বেনাপোল ইমিগ্রেশনের দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন, ভারত কোনো ভ্রমণ কর নেয় না বাংলাদেশী যাত্রীদের কাছ থেকে। বাংলাদেশ সরকার ভ্রমণ কর বাবদ নেয় ৫০০ টাকা হারে। তার ওপর নতুন করে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা জুলুমের নামান্তর। যাত্রীরা টারমিনাল চার্জের নামে ‘অহেতুক টাকা আদায়’ বন্ধের দাবি জানান।
তবে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায়কে সরকারের সিদ্ধান্ত বলে জানিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করণীয় নেই। প্যাসেনজার টারমিনালে পর্যায়ক্রমে সব সুবিধা নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেনাপোল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ