পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে পুলিশ বেআইনিভাবে তল্লাশি চালিয়েছে অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। গতকাল রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকার সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে চেয়াপারসনের কার্যালয়ে তল্লাশী চালিয়েছে। এজন্য আমরা আজকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি। কারণ আমরা মনে করি, সম্পূর্ণভাবে বেআইনি কাজ করেছে পুলিশ। সেজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবশ্যই সেটার জবাব দিতে হবে। তাকেই এর দায় বহন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা যখন দেশে একটা শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক চর্চার শুরু করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি, যখন আমরা ‘ভিশন ২০৩০’ দিয়েছি। এর পরপরই গুলশানে সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেত্রীর কার্যালয়ে যে আগ্রাসন হয়েছে-এটা নজিরবিহীন ঘটনা। এই ধরণের ফ্যাসিবাদী আক্রমণ দেশে যে গণতন্ত্রের ন্যুনতম ভবিষ্যৎ আছে, তাকে বিনষ্ট করবার একটা পাঁয়তারা, এটা উসকানিমূলক।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা মনে করি, এটা একটা ফ্যাসিবাদী আক্রমণ। এ থেকে আবারও প্রমাণিত হলো, এই সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং জনগণের অধিকারকে হরণ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পুলিশের পরিচালিত তল্লাশী চালানো বেআইনি হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, সিআরপিসির বিধান হচ্ছে-এরকম তল্লাশী করতে হলে স্থানীয় দুই গণমান্য ব্যক্তি অবশ্যই থাকতে হবে। এখানে দেখা যাচ্ছে যে, গণমান্য ব্যক্তি কাউকেই অবহিত করা হয় নাই। আইনের আরও বিধান হচ্ছে, যে ভবনটি তল্লাশী করবে, সেই ভবনের যে মালিক বা সেই ভবনে যারা থাকেন, তাদেরকে অবহিত করবেন। প্রথমে বলবেন, তাদের দরজা এবং যেভাবে আছে সেগুলো খুলে দিতে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ক্ষেত্রে আইন মানা হয়নি অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, তল্লাশীর পর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জেনেছি, তারা (পুলিশ) কোনো গণমান্য ব্যক্তি তো নেননি। ওই অফিসে যে দুইজন পিয়ন ছিলে, তাদেরকে একটি কক্ষে আটকে রেখে তল্লাশী করেছে। এসব কাজ সম্পূর্ণ বেআইনি।
তিনি বলেন, পুলিশ সিআরপিসির ১০৩ ধারা লঙ্ঘন করেছে এবং ৯৬ ধারাও যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হয়নি। আদালত যে আদেশ দিয়েছে তা প্রতিপালনে তারা (পুলিশ) আইনের কোনো তোয়াক্কা করে নাই। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের অফিসে তল্লাশী করা ইতোপূর্বে আমার প্রায় ৩৭ বছরে আইন পেশায় আমি কখনো দেখি নাই। এখানে আদালত শুধুমাত্র আদেশ দিয়েছে, কিন্তু কোনো পরোয়ানা ইস্যু হয় নাই।
বিষয়টি নিয়ে দলের সিনিয়র আইনজীবীরা বসে ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ নেবেন বলে জানান অ্যাডভোকেট জয়নাল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, সি. যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্টের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, হাবিবউন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, অ্যাডভোকেট মাসুদ তালুকদার, বিলকিস জাহান শিরিন, শামা ওবায়েদ, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের জুয়েল ও কাজী আবুল বাশার উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে অভিযান সরকারের হীনমন্যতা : মওদুদ আহমদ
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সরকার হীনমন্যতার পরিচয় দিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমান হলো দেশে কোনো রাজনীতি নেই। যে রাজনীতি আছে সেটা অপরাজনীতি।
গতকাল শনিবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি হল রুমে জিয়াউর রহমানের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘বাংলাদেশের কৃষি ও পল্লী উন্নয়নে প্রেসিডেন্ট জিয়ার নীতি ও কর্মসূচি’ শীর্ষক সেমিনার ও গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটি আয়োজন করে এসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি টিচার্স।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা এই হীনমন্যতা, ছোট মনের রাজনীতি, স্পর্শকাতরতা এবং প্রতিহিংসার রাজনীতির অবসান চাই। আমরা ২০৩০ ভিশনে উল্লেখ করেছি, বাংলাদেশে নতুন সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনা হবে। হারিয়ে যাওয়া ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবো। দেশে এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলবো যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম আরো সুন্দর সমৃদ্ধ দেশের অধিকারী হতে পারে।
ঘোষিত ভিশন বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিএনপির জেতা প্রয়োজন দাবি করে মওদুদ আহমদ বলেন, যদি এদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তবে সেই নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে এবং খালেদা জিয়ার মাধ্যমে বিএনপি সেই ২০৩০ বাস্তবায়ন করবে।
মওদুদ বলেন, জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা কর্মসূচির উপর ভিত্তি করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা দলের ২০৩০ ভিশন জাতিকে উপহার দিয়েছেন। এতে জিয়াউর রহমানের চিন্তা, চেতনা ও ধ্যান ধারণা রয়েছে।
ইভিএম পদ্ধতি সম্পর্কে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন পর্যন্ত যন্ত্র দিয়ে ভোট গ্রহণের বিষয়ে পরিপক্ক হয়ে ওঠেনি। আমাদের মতো একটি দেশে যারা নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের চিন্তা করছে তারা জনগণকে ভোটদানে বঞ্চিত, বিরত রাখতে এই ধরণের কৌশল গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আগেও বলেছি এখনও বলছি– বিএনপি ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না। বিএনপি স্বচ্ছ ব্যালট পেপার এবং ব্যালট বাক্স ব্যবহার করে নির্বাচন দেখতে চায়। শুধু তাই নয় বিএনপি আগামী দিনে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে যেখানে একদলীয় কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে এমন একটি সরকারের অধীনে যে সরকারের কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ থাকবে না এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি সর্বশক্তি দিয়ে অংশগ্রহণ করবে।
প্রফেসর ড. মো. ইদ্রিস মিয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।