পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সৈয়দ শামীম শিরাজী,সিরাজগঞ্জ থেকে : আর্থ সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি তাঁতীদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে দেশের বৃহত্তম সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর কাপড়ের হাট। যমুনার ভাঙনে চৌহালী থানাটি সিরাজগঞ্জ থেকে বিচ্ছিন্ন। এ এলাকার বেশির ভাগ মানুষ তাঁতের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ এলাকা হলেও উৎপাদিত তাঁত বস্ত্র বাজারজাতকরণে বিপাকে পড়তে হতো তাঁতীদের। এ অঞ্চলের তাঁতীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে চৌহালী-বেলকুচি আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) মনজুর কাদের তাঁত শিল্পের গৌরব ফিরিয়ে আনতে এনায়েতপুরে ৩০কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের বৃহত্তম এ কাপড়ের হাট নির্মাণ করেন। বর্তমানে হাটটি সরকারিভাবে ইজারা দেয়া হয়। যার সুফল পাচ্ছে এ অঞ্চলের তাঁতীরা। তাঁতীরা যেন সহজেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে ও টাকা লেনদেন করতে পারে সেজন্য স্থাপন করা হয়েছে ব্যাংক। বিশেষ করে যমুনা ব্রীজ থেকে এনায়েতপুর হাট পর্যন্ত এবং যমুনার পূর্ব পাড়ের নাগরপুর থেকে চৌহালী উপজেলা পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মাণের ফলে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। দেশ বিদেশ থেকে অতি সহজেই এখানে কাপড় কেনা বেচা করতে পারে ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের সকল প্রকার নিরাপত্তা এমনকি বাইরে থেকে আসা কাপড় ব্যবসায়ীদের জন্য থাকা-খাওয়ার জন্য উন্নত মানের হোটেলও নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া, অনলাইন ব্যাংকিং সিষ্টেম, টেলিকমিউনিকেশন সিষ্টেম ও বাসষ্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানসহ এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। নদী ভাঙন কবলিত এ অঞ্চলের মানুষের এখন আর অভাব নেই। বদলে গেছে তাদের জীবনযাত্রার মান। নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন তাঁতীরা। সরেজমিনে এনায়েতপুর হাটে গিয়ে জানা যায়, প্রতিবছর যমুনার ভাঙনের কবলে পড়ে এ অঞ্চলের তাঁতী ও ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়তেন। তাদের দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে এবং তাঁতের গৌরব ফিরিয়ে আনতে ২০০৬ সালে ৩০কোটি টাকা ব্যয়ে ২০একর জমির উপর এনায়েতপুর কাপড়ের হাট নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে যা সরকারীভাবে ইজারা দেয়া হচ্ছে। প্রতিবছর এখান থেকে আয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। হাটটি নির্মাণের ফলে এ জনপদের চেহারাই পাল্টে গেছে। স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার, মসজিদ-মাদরাসা, রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। প্রতি সাপ্তাহের বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার কাপড়ের হাট বসে এখানে। বুধবারে শাড়ী, বৃহষ্পতিবারে লুঙ্গি এবং শুক্রবার সুতা ও যাবতীয় পণ্য সামগ্রী এ হাটে বেচা কেনা হয়ে থাকে। ব্যবসায়ীরা জানান- প্রতিহাটে ৪থেকে ৫হাজার ব্যবসায়ীর সমাগম ঘটে হাটে। প্রতিহাটে কোটি টাকার অধিক কেনা বেচা হয়ে থাকে।
বেলকুচির সূবর্ণসাড়া থেকে আগত লুঙ্গি ব্যবসায়ী মো. শহিদুল ইসলাম জানান, সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার তাঁতীরা প্রতি সপ্তাহে কোটি টাকার লুঙ্গি এনে এনায়েতপুর হাটে বিক্রি করে। কিন্তু সে লুঙ্গিগুলো প্রসেস করতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রসেস মিলে নিয়ে প্রসেস করে আনতে হয়। ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী সিরাজগঞ্জে কোন লুঙ্গি প্রসেসিং মিল গড়ে ওঠেনি। যার ফলে লুঙ্গি প্রসেসিংয়ে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কাপড় ব্যবসায়ী মজিবর রহমান জানান, যমুনার ভাঙনে এ অঞ্চলের মানুষ তাদের বাড়ীঘর হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পরতো। আমাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম তাঁত ব্যবসা। অথচ, আগে কাপড় উৎপাদন করে তা বিক্রি করতে পারতাম না। হাট নির্মাণের ফলে এখন আর সে সমস্যা নেই। এখন দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা সুন্দর পরিবেশে এ হাটে কাপড় ক্রয় বিক্রয় করছেন। আর্থ সামাজিক উন্নয়নের পাশাপশি ফিরে পেয়েছে অতীত ঐতিহ্য। এ কারণে খুশি এ অঞ্চলের তাঁতী ও ব্যবসায়ীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।