Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনিতে দূষণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে

| প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : নেপালের লুম্বিনিতে প্রায় ২৬০০ বছর আগে গৌতম বুদ্ধের জন্ম। সা¤প্রতিক তথ্যের ভিত্তিতে বিজ্ঞানী, গবেষক ও স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানকার বাতাস মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে। বাতাসে যেসব ক্ষতিকর উপাদান আছে, তার মধ্যে মানবদেহের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক উপাদান হলো পিএম ২.৫। শিল্পকারখানার ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া এবং বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী থেকে তৈরি ধুলায় এগুলো সৃষ্টি হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও) জানিয়েছে, মানবদেহের জন্য বাতাসে সহনীয় দূষিত পদার্থের (পিএম ২.৫) মাত্রা প্রতি ঘন মিটারে ২৫ মাইক্রোগ্রাম, আর নেপাল সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী তা ৪০। তবে ডব্লিউএইচও-র সঙ্গে দূষণ নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, লুম্বিনির বাতাসে এ দূষণের পরিমাণ সহনীয় মাত্রার চেয়ে বহুগুণ বেশি। জানুয়ারিতে নেপালের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এ শহরটিতে দূষণের পরিমাণ পাওয়া যায় প্রতি ঘনমিটারে ১৭৩.০৩৫ মাইক্রোগ্রাম। নিকটবর্তী চিত্তন শহরে এ দূষণের পরিমাণ ১১৩.৩২ এবং কাঠমান্ডুতে তা ১০৯.৮২। আন্তর্জাতিক পরিবেশ রক্ষা প্রতিষ্ঠান আইইউসিএন ও ইউনেস্কোর এক যৌথ গবেষণায়ও এ তথ্য উঠে আসে। ওই গবেষণায় বলা হয়, ‘সংরক্ষিত এলাকা লুম্বিনির কাছাকাছি কার্বন নিঃসরনের মতো শিল্পায়নের ফলে ওই এলাকার জীব বৈচিত্র্য, সেখানকার স্থানীয়দের স্বাস্থ্য, প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান হুমকির মুখে পড়েছে। উল্লেখ্য, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এ পবিত্র স্থানটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৭ সালে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মিটারোলজির অপর এক গবেষণায় বলা হয়, ইন্দো-গাঙ্গেয় পর্বতমালা দিয়ে ঘেরা পাশের অঞ্চলগুলোর দূষণ এবং স্থানীয় শিল্পায়নের ফলে শীতকালে সেখানে দূষণের পরিমাণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ইউনিভার্সিটি অব রোমের প্রতœতাত্তি¡ক কনস্তানতিনো মিউচ্চি বলেন, ‘অশোক স্তম্ভ থেকে জিপসাম, ক্যালসাইট, ডলোমাইট এবং ম্যাগনেসাইটের মতো উপাদান পাওয়া গেছে। এসব উপাদান সিমেন্ট উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। ২৪৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সম্রাট অশোক গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান চিহ্নিত করতে ওই স্তম্ভটি নির্মাণ করেছিলেন। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে লুম্বিনির উত্তর-পূর্ব এবং পশ্চিমে প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা সংরক্ষিত। পাশের শিল্পাঞ্চল ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। সেখানে সিমেন্ট, স্টিল, কাগজ এবং নুডলসের ফ্যাক্টরি রয়েছে। লুম্বিনির কাছে সিমেন্ট কারখানাসহ কয়েকটি ভারি শিল্প গড়ে উঠার ফলে বায়ুদূষণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। নেপালের পরিবেশ বিভাগের বায়ুদূষণ বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ পোদেল জানান, সা¤প্রতিক তথ্য অনুযায়ী কাঠমান্ডুর চেয়েও বেশি দূষিত লুম্বিনি। আমরা অদূর ভবিষ্যতে ড্রোন ব্যবহার করে দূষণের উৎস নির্ণয়ের পরিকল্পনা করেছি। আশা করছি এর মাধ্যমে দূষণের পরিমাণ কমিয়ে আনা যাবে। লুম্বিনির যে স্থানে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তা ঠিক পাশেই মায়াদেবী মন্দির। দূষণের পরিমাণ এতোটাই বেড়েছে যে, সেখানকার ভিক্ষুদের এখন মাস্ক পরে থাকতে দেখা যায়। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দূষণ

২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
৪ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ