Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফের বন্যার পদধ্বনি

| প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


উজান থেকে ভারতের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির শঙ্কা
শফিউল আলম : উজান থেকে ভারতের পাহাড়ি ঢল ও দেশের অভ্যন্তরে অতিবর্ষণে সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চলে ধান, মাছ, হাঁস-মুরগিসহ কৃষি-খামারের ভয়াবহ বিপর্যয়ের ক্ষত এখনও শুকায়নি। এ অবস্থায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ মাসে ফের আকস্মিক বন্যার পদধ্বনি দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া ও নদী বিশেষজ্ঞদের দেয়া দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানা গেছে, চলতি মে মাসে অর্থাৎ প্রাক-বর্ষায় দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী জুন মাসের প্রথমার্ধে সারাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুমালা (বর্ষাকাল) বিস্তার লাভ করতে পারে। তখন (জুনে) দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। মে মাসে নদ-নদীর অবস্থা সম্পর্কে পূর্বাভাসে বলা হয়, এ মাসে দেশের নদ-নদীর পানির সমতল স্বাভাবিক থাকবে। তবে অতি ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল (বৃহত্তর সিলেট ও ময়মনসিংহ) ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের (বৃহত্তর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম) বিভিন্ন স্থানে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।   
যেহেতু চলতি মে মাসে আবহাওয়া বিভাগ স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে, সেহেতু দেশে অতিবর্ষণের কারণে আকস্মিক বন্যার কোন আশঙ্কা দেখা হচ্ছে না। আশঙ্কা হলো ভারতের বিশেষ করে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা রাজ্যে অতিবর্ষণের এবং সেই কারণে উজান থেকে নেমে আসা ভারতের পাহাড়ি ঢলের ফলে আকস্মিক বন্যা কবলিত হতে পারে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল। গতকাল (বুধবার) পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আবহাওয়া নেটওয়ার্কের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, এ মাসে হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চলসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও বন্যা হতে পারে। সেই অঞ্চলটিতে ঢল বা বন্যা হলে তার ধকল গিয়ে পড়ে ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উপর। গত এপ্রিলে হাওরের বন্যা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।    
গত এপ্রিল মাসে ভারতীয় অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের সাথে দেশে ভারী বর্ষণ ছিল হাওর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার কারণ। দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসেও বন্যার শঙ্কার কথা আগাম জানানো হয়েছিল। সাধারণত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ধরা হয় ৮টি বিঘামে মোট এক হাজার ১১৯ মিলিমিটার। অথচ গত মাসে বৃষ্টি ঝরেছে ২ হাজার ৩৮০.৫ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১০৬.২ শতাংশই বেশি।
প্রাক-বর্ষা মৌসুমে অতিবর্ষণের এই রেকর্ড ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাছাড়া গত মার্চ মাসে দেশে ১৫২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়। আর এ মাসে স্বাভাবিক বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া-জলবায়ুর রাজ্যে এন লিনো অবস্থা বিরাজমান থাকার কারণে বৃষ্টিপাত এবং তাপমাত্রায় অস্বাভাবিক হেরফের হচ্ছে।   
সর্বশেষ আবহাওয়া          
দেশের অধিকাংশ জায়গায় গতকাল দিনভর ভ্যাপসা গরম পড়েছে। ছিটেফোটা বৃষ্টিও হয়নি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সাথে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও বেড়ে চলেছে। তাছাড়া বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার হার বেশি হওয়ায় গরম ভ্যাপসা অনুভূত হচ্ছে, ঘামও ঝরছে বেশি। গত সন্ধ্যায় ঢাকায় আর্দ্রতার হার ছিল ৬৩ শতাংশ। গত সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩৫.১ ও ২৫.৮ ডিগ্রি সে.।   
আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের বিহার ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। যা উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। এর পরবর্তী ৫ দিনে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।   



 

Show all comments
  • কাওসার আহমেদ ৪ মে, ২০১৭, ১১:১১ এএম says : 0
    এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ