পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদার নির্দেশে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছেন বহুল আলোচিত ‘চট্টগ্রাম গণহত্যা’ মামলার দুই সাক্ষী অশোক বিশ্বাস ও আবু সৈয়দ। গতকাল (রোববার) চট্টগ্রামের বিভাগীয় জজ মীর রুহুল আমিনের আদালতে ওই দুই সাক্ষীর জবানবন্দী শেষে তাদের জেরা করেন আইনজীবীরা।
স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরীর লালদীঘির অদূরে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে পুলিশের নির্বিচারে হামলায় ২৪ জন নিহত হয়। অশোক বিশ্বাস ওই ঘটনায় নিহত সিটি কলেজের ছাত্র স্বপন বিশ্বাসের বড় ভাই। অন্য সাক্ষী আবু সৈয়দ কবিরহাট কলেজের সাবেক শিক্ষক ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।
অশোক বিশ্বাস আদালতে বলেন, তার ভাই স্বপন বিশ্বাস জামালখানের বাসা থেকে সকাল ১১টায় শেখ হাসিনার জনসভার উদ্দেশে বের হন। বিকেলে তারা খবর পান জনসভায় পুলিশ গুলি করেছে। এতে অনেক লোক মারা গেছে। সারাদিন ভাইয়ের অনেক খোঁজ-খবর করেও তার কোন সন্ধান পাননি। পরদিন জেনারেল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে অন্য লাশের সাথে ভাই স্বপন বিশ্বাসের লাশ দেখেন তিনি। তবে পুলিশ তাদের লাশ দেয়নি। কড়া পুলিশ পাহারায় বেলুয়ার দিঘীর শ্মশানে ওই লাশ দাহ করা হয়। অশোক বিশ্বাস আদালতে বলেন, তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদার নির্দেশে পুলিশ গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের লাঠিচার্জে ওইদিন আহত সাবেক কলেজ শিক্ষক আবু সৈয়দ বলেন, তিনি ওইদিন শেখ হাসিনার জনসভায় যাওয়ার পথে নিউমার্কেট এলাকায় পুলিশি হামলার শিকার হন। তিনি সেখান থেকে লালদীঘি এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনেন। তখন জিপিও মোড়ে পুলিশ জনতার উপর লাঠিচার্জ শুরু করে। তিনি একটি সাইকেলের দোকানে আশ্রয় নেন।
১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বিকালে লালদীঘির সমাবেশে যাওয়ার পথে আদালত ভবন এলাকায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে গুলি চালায় পুলিশ। এতে প্রাণ হারান ২৪ জন নেতাকর্মী। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক শাসনের অবসানের পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। আদালতের আদেশে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম এবং অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এতে আসামি করা হয় আট পুলিশ সদস্যকে।
মামলার আসামিরা হলেন- চট্টগ্রামের তখনকার পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, কোতোয়ালী অঞ্চলের পেট্রোল ইন্সপেক্টর জে সি মন্ডল, কনস্টেবল আব্দুস সালাম, মুশফিকুর রহমান, প্রদীপ বড়ুয়া, বশির উদ্দিন, মো. আবদুল্লাহ ও মমতাজ উদ্দিন। ২০০০ সালের ৯ মে আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ইন্সপেক্টর জে সি মন্ডল ঘটনার পর থেকেই পলাতক।
ওইদিনের ঘটনায় নিহতরা হলেন- মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, স্বপন কুমার বিশ্বাস, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন চৌধুরী, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাস, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দ মিয়া, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া, মো. কাসেম, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাস ও শাহাদাত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।