বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বেনাপোল অফিস : দীর্ঘ ২০ বছর পর যশোরের সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শার ঐতিহ্যবাহী বেতনা নদীটি অবৈধ দখলমুক্ত করতে গত দু’দিন ধরে মাঠে নেমেছে উপজেলা প্রশাসনসহ শতশত মানুষ। অবৈধ বহু বাঁধ গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
প্রভাবশালী মহল দীর্ঘ ২০ বছর যাবত সরকারি এ বেতনা নদীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধ বেড়িবাঁধ ও পাটা-বাঁধা দিয়ে জোর করে মাছ চাষ করে আসছে। ফলে নদী দিয়ে পানি বের হতে না পেরে প্রতি বর্ষা মৌসুমে গোটা শার্শা ও বেনাপোলের কয়েকটি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়ে। এ ছাড়া প্রতি বছর ভারত থেকে ইছামতি নদীর পানি উপচে ও বর্ষার পানিতে প্লাবিত হয় এলাকার শত শত একর ফসলের মাঠ ও ঘরবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েক হাজার মানুষ ও চাষিরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শার্শা উপজেলা প্রশাসন এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে। সরিয়ে দেয়া হচ্ছে বেড়িবাঁধ ও পাটা। শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ: সালামের নেতৃত্বে স্বেচ্ছায় শতাধিক শ্রমিক বেতনা নদীর অবৈধ বাঁধ দখলদারদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করতে অংশ নেন।
১৯৯৬ সালে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের পোনা ছেড়ে বেতনা নদীটি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে উপজেলা প্রশাসন। ৪০ কিলোমিটার এ বেতনা নদীটি প্রথম বছর উন্মুক্ত থাকলেও পরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় শতাধিক ব্যক্তি অবৈধভাবে দখল করে ৬৬ স্থানে বেড়িবাঁধ ও পাটা দিয়ে মাছ চাষ করতে শুরু করে।
নদীতে অবৈধ পাটা বাঁধের প্রভাবে প্রতিবছর ১ হাজার ২ শত ১৬টি ছোট বড় পুকুর ও বেড়ি প্লাবিত হয়ে ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। বর্ষাকালে বেড়িবাঁধ ও পাটা দেয়ার ফলে পানি নিষ্কাশন হতে না পারায় প্লাবিত হয় ফসল ও ঘরবাড়ি। চাষিরা কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে না পেরে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলে দীর্ঘদিন পর এ অভিযান শুরু করা হয়। দখলদারদের অবৈধভাবে বেড়িবাঁধ ও পাটা দিয়ে মাছ চাষ বন্ধের জন্য সরকারিভাবে নোটিস করলেও তারা কর্ণপাত করেননি প্রভাবশালী ঐ মহলটি। অভিযানে মাটি ও পাটা বাঁধ খুলে দেয়া, পাটা ও জাল জব্দ, জব্দকৃত জাল ও পাটা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
অভিযানে অংশ নেয়া এলাকার চাষিরা বলেন, দীর্ঘদিন পর বেতনা নদী মুক্ত হলে এলাকার মানুষ বন্যা ও প্লাবন থেকে মুক্ত থাকবে। প্রভাবশালী একটি মহল পেশী শক্তির জোরে এই্ নদী অবৈধ দখল করে মাছ চাষ করে আসছিল। শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবাযনের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষদের সাথে নিয়ে এই নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছেন সফলভাবে। ইতিপূর্বে তিনি এই নদীর অবৈদ দখলদার মুক্ত করতে গিয়ে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হযেছেন। এলাকার সাধারণ মানুষ তার এই বাঁধ অপসারণের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেতনা নদীটি অবৈধভাবে দখল করে মাছ চাষ করে আসছে প্রভাবশালী একটি মহল। অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য অভিযান শুরু হয়েছে। দখলমুক্ত হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে।
দখলমুক্ত করতে কেউ বাঁধা দিলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।