Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভয়েস রেকর্ড ফোন মেসেজ উদ্ধার বগুড়ায় ওসি’র মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক স্ত্রী মিতুর দ্বিতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর

| প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বগুড়া অফিস : বগুড়ার গাবতলী থানার ওসি আনম আব্দুল্লাহ আল হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক দ্বিতীয় স্ত্রী রুমানা আকতার মিতুকে ৫ দিনের রিমান্ডে’র পর দ্বিতীয় দফায় আদালত আরও দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। এর আগে গত ৪ এপ্রিল ৫ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে আরও ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গাবতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নুরুজামান। বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম শুনানি শেষে মিতুকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন এবং রিমান্ড সম্পর্কে শুনানির জন্য ১০ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করেন। পরবর্তীতে শুনানি শেষে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ আবু রায়হান মিতুকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য আরও দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজামান জানান, বিচারক দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করেছেন। মিতু বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। আগামী সপ্তাহে তাকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হবে। তিনি বলেন, মিতু ও তার বাবা-চাচার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মিতুর ভাই, বাবা ও তার পরিবার বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত।
তদন্তকারি কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান আরও জানান, ওসি আব্দুল্লাহ আল মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া বাদী হয়ে গত ৩০ মার্চ গাবতলী থানায় প্রাক্তন দ্বিতীয় স্ত্রী মিতুসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পর দিন ৩১ মার্চ সকালে মিতু ও তার বাবা সাবেক সেনা সদস্য মোকছেদ আলীকে পাবনা থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, বিভিন্ন কারণে দ্বিতীয় বিয়ের কিছুদিন পরেই মিতুর সাথে ওসি হাসানের ছাড়াছাড়ি হয় এবং প্রায় তিন মাস আগে ওসি হাসান পাবনা থেকে বগুড়ায় বদলি হয়ে আসেন। কিন্তু তার পরও মিতু মাঝে মাঝেই ওসি হাসানকে ফোনে হুমকি দিত এবং তার মান সম্মান নষ্ট করবে বলে বøাক মেইলিং করে টাকা নিত। গত মার্চ মাসের প্রথম দিকে মিতু একবার গাবতলী থানায় এসে সিনক্রিয়েটও করেছিল। এসব বিষয় নিয়েই ওসি হাসান মানষিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। যার পরিণতিই ওসির আত্মহত্যা। মৃত্যুর আগে ওসি একটি সুসাইডাল নোটও রেখে যান। সেখানে তার প্রথম স্ত্রীর নিকট ভুল ক্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে দুই সন্তানকে দেখে শুনে রাখার কথা উল্লেখ করেন এবং মৃত্যুর জন্য ডিভোর্স দেয়া দ্বিতীয় স্ত্রী মিতুকে দায়ী করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ সকাল ১০টার দিকে গাবতলী থানার মধ্যে ওসির বাসাতে বৈদ্যুতিক ফ্যানের সাথে দড়ি লাগিয়ে ওসি হাসান আত্মহত্যা করেন। এর আগে তিনি থানায় কর্মরত ছিলেন। থানা থেকে বের হয়ে গিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাৎক্ষণিক ভাবে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজামান জানান, মিতুর বিরুদ্ধে ওসি হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভয়েস রেকর্ড এবং মোবাইল ফোনে মেসেজসহ অন্যান্য তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে। রিমান্ডে থাকা মিতু পুলিশের কাছে অনেক কিছুই স্বীকার করেছে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এজন্য আদালতে আবারও রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভয়েস
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ